সর্বশেষ
শেখ হাসিনা ও টিউলিপকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু: দুদক কমিশনার
কাতার আমিরের মায়ের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক
ঢাকায় বড় সমাবেশের ঘোষণা বিএনপির
বেনজীরের বিরুদ্ধে ‘রেড নোটিশ’ জারি করল ইন্টারপোল
‘বাংলাদেশ থেকে ৭২৫ সেনা সদস্য নেবে কাতার’
আগামী বিশ্বকাপেও রোনালদোকে চান ফিগো
সংসার ভাঙার গল্পে রাশেদ সীমান্ত-অহনা
জুনাইদ আহ্‌মেদ পলকের ‘হারানো সোয়েটার’ পাওয়া গেছে
সমকালের দেওয়া উপহার পেয়ে আনন্দে আত্মহারা মুশফিকের পরিবার
চাকরির প্রথম দিনেই কাভার্ড ভ্যানের চাপায় প্রাণ গেল ইমনের
মব জাস্টিস আর অ্যালাউ নয়, অনেক হয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ফের ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ
পরীক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা উপহার দিলো বসুন্ধরা শুভসংঘ দিনাজপুর সরকারি কলেজ শাখা
এক ব্যক্তিকে তিনবার প্রধানমন্ত্রী চায় বিএনপি
বিয়ে বা বাচ্চা নিলেই মিলবে অর্থসহ বিভিন্ন সুযোগ

নড়াইলের গ্রামে ঝাঁকে ঝাঁকে আসছে পরিযায়ী পাখি

অনলাইন ডেস্ক

হেমন্তের বিকেলে যখন পশ্চিম দিগন্তে সূর্য অস্ত যাচ্ছে, তখন একে একে গাছের ডালে এসে বসছে বিভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী পাখি। সংখ্যায় তারা একটি কিংবা দুটি নয়, হাজারে হাজারে। তাদের ডালে বসার নয়নাভিরাম দৃশ্য, ডানা ঝাপটানি ও কিচিরমিচির শব্দে বিমোহিত গোটা গ্রাম। ক্ষণিকের জন্য মনে হয়, এ যেন পাখিদের রাজ্য। ভীষণ আগ্রহ নিয়ে মানুষ তাদের দেখছে। কেউ এলাকার, কেউ এসেছেন অনেক পথ পাড়ি দিয়ে। এমন মুহূর্তের সাক্ষী হতে পেরে খুশি সবাই।

বুধবার বিকেলে সরেজমিনে এই দৃশ্যের দেখা মেলে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পানিপাড়া গ্রামে। দেশের যে কটি স্থানে বৃহৎ পরিসরে পরিযায়ী পাখির উপস্থিতি দেখা যায়, তার মধ্যে অন্যতম এই স্থান। বালিহাঁস, লেঞ্জা হাঁস, বক, পানকৌড়ি, শামুকখোল, কাচিচোড়াসহ বিভিন্ন অতিথি ও দেশি পাখির দেখা মেলা এখানে। নড়াইল জেলা শহর থেকে এ গ্রামের দূরত্ব প্রায় ৩১ কিলোমিটার।

ঢাকা থেকে স্কুলজীবনের দুই বান্ধবীকে নিয়ে পাখি দেখতে এসেছেন ইয়াসমিন রব্বানী নামের এক দর্শনার্থী। শিক্ষকতা করেন তিনি। বললেন, ‘এত পাখি! আমি আসলে এর আগে কোথাও এত পাখি দেখিনি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা পাখি দেখেছি। তবে এটার সঙ্গে তুলনা করা যাবে না। এটা একটা বিশাল এলাকাজুড়ে। নৌকায় করে পাখির কাছে গিয়ে পাখি দেখার সৌভাগ্য আমার এর আগে কখনো হয়নি।’

স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, নিভৃত এই পল্লিতে অনেক বছর আগে থেকে পরিযায়ী পাখিদের বিচরণ আছে। ২০০৯ সালে এখানে প্রায় ৫০ একর জমির ওপর অরুণিমা রিসোর্ট গড়ে ওঠে। পর্যটক আকৃষ্ট করতে সেখানে পাখিদের সুরক্ষা দিতে বৃক্ষরোপণসহ নানা ধরনের ব্যবস্থা নেয় কর্তৃপক্ষ। এর পর থেকে প্রতিবছর শীতের সময়টায় এখানে পরিযায়ী পাখিদের বিচরণ বাড়তে শুরু করে।

রিসোর্টটির ব্যবস্থাপক মুনিব খন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, এখানে সারা বছর দেশি পাখি থাকে। আর আট থেকে নয় মাস পরিযায়ী পাখিরা থাকে। দেশ-বিদেশ থেকে এখানে পাখি দেখতে আসেন অনেক মানুষ। মূলত নিরাপদ পরিবেশ পেয়ে পাখিরা এখানে আসে।

এ বছর প্রকৃতিতে হিমেল হাওয়া বইতেই ঝাঁকে ঝাঁকে পরিযায়ী পাখি ছুটে আসছে এখানে। দিন যত যাচ্ছে, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পাখির সংখ্যা। প্রতিদিন ভোরে খাবারের সন্ধানে বেরিয়ে পড়ে এসব পাখি। আবার সন্ধ্যার আগেই ঝাঁকে ঝাঁকে রিসোর্টের লেকের পাড়ে অবস্থিত ছোট-বড় গাছের ডালে এসে বসে। মানুষের উপস্থিতি টের পেলেই দল বেঁধে খোলা আকাশে ছোটাছুটি করে তারা। কিছু সময় পর আবার এসে বসে নিজেদের জায়গায়।

পাখি দেখতে আসা হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘সকালে যখন বের হলাম, দেখলাম পাখিগুলো সব উড়ে যাচ্ছে। আমি বেশ অবাক হয়ে দেখলাম, তারা খুব সুন্দর করে দলবেঁধে উড়ে যাচ্ছে। একটার সঙ্গে আরেকটা জড়িয়ে যাচ্ছে না। বিকেলে আবার দেখলাম, পাখিগুলো ফিরে এসেছে, গাছে বসছে। এ এক অভূতপূর্ব দৃশ্য।’

দর্শনার্থী শাহানা মাওলা বলেন, ‘বাংলাদেশের কোথাও একসঙ্গে এত পাখি আমি দেখিনি। এত সুন্দর কিচিরমিচির শব্দ!’

নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কেয়া রেনু রায় বলেন, ‘আমাদের দেশে পরিযায়ী পাখিদের সুরক্ষায় আইন আছে। কিন্তু মানুষ যত দিন সচেতন না হবেন, আইন বা বল প্রয়োগ করে অতিথি পাখির সুরক্ষা সম্ভব না।’

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ