মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরী। ফরিদপুরের সাবেক সংসদ সদস্য। শেখ পরিবারের সদস্য। খুব কাছের না হলেও দূরের না। পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আত্মীয় পরিচয়ে ত্রাসের রাজনীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন তিনি। ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে জবর দখল করেছেন ১১শ’ বিঘা জমি। অবৈধ বালু ব্যবসার মাধ্যমে কামিয়েছেন হাজার কোটি টাকা। দুদকের অনুসন্ধানে অবৈধ সম্পদের প্রাথমিক সত্যতা মেলায় এরই মধ্যে দেওয়া হয়েছে তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা।
বিগত সরকারের আমলে ফরিদপুরের প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিলেন মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরী। বিভিন্ন সময় বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে রাজনীতির মাঠে যোগান আলোচনার খোরাক। বক্তব্যে মাঠ কাপানোর পাশাপাশি অবৈধ সম্পদও গড়েছেন সমানতালে।
দুদকের অভিযোগে বলা হচ্ছে, প্রভাবশালী সাবেক এই এমপি আড়িয়াল খাঁ ও পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু বিক্রির মাধ্যমে কামিয়েছেন হাজার কোটি টাকা। ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে জোরপূর্বক স্ত্রী-সন্তান ও ভাইদের নামে লিখে নেন অন্তত ১১শ বিঘা জমি। ঢাকার পূর্বাচল, আদাবর, গুলশান ও বনানীতে রয়েছে একাধিক প্লট-ফ্ল্যাট। ফরিদপুর নিজের বাড়িতে বানিয়েছেন একটি চিড়িয়াখানাও। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুরেও রয়েছে একাধিক বাড়ি কিংবা ফ্ল্যাট।
আরও পড়ুন: কুইক রেন্টাল ছিল হাসিনার লুটের অন্যতম উৎস, গডফাদার তৌফিক
এসব অভিযোগের ভিত্তিতে এরই মধ্যে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি সম্পদের ফিরিস্তি খুঁজতে ৯১টি ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তথ্য তলব করেছে দুদক। নথিপত্রেও দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা উপ-পরিচালক সালাউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, অনুসন্ধান টিম এ বিষয়ে দালিলিক প্রমাণাদি সংগ্রহ করছে। প্রমাণাদি সংগ্রহ শেষে কমিশনের নিকট তারা প্রতিবেদন দাখিল করবে। কমিশনের অনুমোদনক্রমে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনুসন্ধানের নামে সময়ক্ষেপণ না করে সরাসরি এসব দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে দুদক।
দুদকের সাবেক মহাপরিচালক মঈদুল ইসলাম বলেন, দুর্নীতিবাজদেরকে ধরার জন্য দুদকের যেভাবে সক্রিয় হওয়ার দরকার ছিলো সেই সক্রিয়তাটা আমি দেখছি বলে মনে হচ্ছে না।
চেয়ারম্যান-কমিশনার না থাকায় নিক্সনের মতো অনেকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ মিললেও মামলা বা পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে পারছে না সংস্থাটি।