শার্লটে শেষ বাঁশি বাজার পরই হাঁটু গেড়ে বসে পড়েন কলম্বিয়া অধিনায়ক হামেস রডরিগেজ। উরুগুয়েকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠার আনন্দে ছুটে এসে তাঁকে ঘিরে ধরেন সতীর্থরা। নেস্টর লোরেঞ্জোর এই কলম্বিয়ার প্রাণভোমরা যে তিনিই। চলতি কোপা আমেরিকায় ছয়টি অ্যাসিস্ট। যা কোপার ১০৮ বছরের ইতিহাসে রেকর্ড। নেস্টরের কোচিংয়ে টানা ২৮ ম্যাচ অপরাজিত কলম্বিয়া। ২৩ বছর পর তারা দ্বিতীয়বার কোপা জয়ের দোরগোড়ায়। অথচ কয়েক বছর আগে পরিস্থিতি ছিল সম্পূর্ণ আলাদা। কাতার বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জণে ব্যর্থ কলম্বিয়া দল থেকে বাদ পড়েন হামেস। কিন্তু কোচের দায়িত্ব নিয়েই হাল ফেরান লোরেঞ্জো। তাঁর কথায়, ‘দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমেই হামেসের সঙ্গে দেখা করতে যাই কাতারে। ওকে আমার পরিকল্পনা জানাই। তারপর ও সর্বোচ্চ দিয়ে নিজের দায়িত্ব পালন করেছে। তাই ওই দলের অধিনায়ক।’ কলম্বিয়ার আর এক তারকা লুইস দিয়াজের কথায়, ‘জাতীয় দলে প্রথম দিনেই আমি হামেসকে জানিয়েছিলাম ওই আমার আদর্শ। সবাই জানি ও কোন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। এখন ওর সেরা ফুটবল দেখছি আমরা। এটা ওর প্রাপ্য।’
কলম্বিয়া দলের প্রাণভোমরা যেমন হামেস, আর্জেন্টিনার তেমন লিওনেল মেসি। এই নিয়ে সাতবার আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে নিয়ে গিয়েছেন তিনি। একের পর এক ফাইনালে ফিরতে হয়েছে শূন্য হাতে। ভাগ্যের চাকা ঘুরতে থাকে লিওনেল স্কালোনির কোচিংয়ে। শেষ ৬১ ম্যাচে মাত্র দুইবার হেরেছেন মেসিরা। জিতেছেন ২০২১ কোপা, ২০২২ বিশ্বকাপ, ২০২৩ ফাইনালিসমা। এবার সুযোগ সবচেয়ে বেশিবার (১৬) কোপা জয়ের নজির গড়ার। আর্জেন্টিনার এই দলকে বলা হচ্ছে সর্বকালের সেরা। ফাইনালের আগে মেসির মন্তব্য, ‘আগেও এই পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছি, তাই এবার আমরা অনেক বেশি শান্ত। তাড়াহুড়ো না করে প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করছি।’ অন্যদিকে, অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া জানিয়েছেন, কোপার পরেই অবসর নেবেন। তাঁর কথায়, ‘এমনটা স্বপ্নেও ভাবিনি। ধন্যবাদ নতুন প্রজন্মকে। ওদের জন্যই আমার শেষ ম্যাচ হতে চলেছে কোপার ফাইনাল।’
বিশ্বকাপ জিতে মেসি সর্বকালের সেরাদের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছেন। এবার হামেসের সামনে সুযোগ আধুনিককালে কলম্বিয়ার সর্বসেরা ফুটবলার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার।