সর্বশেষ
পদত্যাগ করে ছাত্রদলে যোগ দিলেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের তিন নেতা
কুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে ইবি শিক্ষার্থীদের অনশন
বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা চলছে: তারেক রহমান
গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বৈঠক
সিনিয়র অফিসার পদে লোক নেবে বিকাশ
সরকার না সরালে পদত্যাগ করব না: কুয়েট ভিসি
পহেলগাঁওকাণ্ডে হৃদয় ভেঙে গেছে বলিউড তারকাদের
প্রধান উপদেষ্টাকে সাবধানে থাকার পরামর্শ মির্জা আব্বাসের
একাধিক কাজ নিয়ে মিষ্টি জান্নাতের ব্যস্ততা
পাকিস্তানি টিকটকারের ভিডিও ফাঁস, অনলাইনে তোলপাড়!
সোনার দাম সকালে বাড়ল বিকেলে কমল
‘এক বাক্সে ভোট পাঠাতে’ সমমনা ৫ ইসলামি দলের ঐকমত্য
ভারতে মুসলিম নিধনের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে একের পর এক আইন বাস্তবায়ন করছে মোদি সরকার: মামুনুল হক
কুয়েটে ৩৭ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, হলও খুলেছে
কাঠগড়ায় ফুঁপিয়ে কাঁদলেন তুরিন আফরোজ, সান্ত্বনা দিলেন ইনু

রাজনৈতিক সমর্থন ছাড়া পুলিশ সংস্কার সম্ভব নয়

অনলাইন ডেস্ক

পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রমের বাস্তব পরিবর্তন ও সংস্কার শুধু রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে সম্ভব এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সক্রিয় সমর্থন ছাড়া পুলিশ সংস্কার কার্যকর হবে না। শনিবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন।

‘গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের জন্য সংলাপ: আইনশৃঙ্খলা প্রসঙ্গ’ শীর্ষক এই সংলাপের আয়োজন করে সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস)। পরে সিজিএসের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

সংলাপের সূচনা করেন সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা সুশাসনের অভাব। সংস্কারের কথা আমরা অনেক শুনি, কিন্তু বাস্তবতার আড়ালে সংস্কার এখন এক ধরনের ঘৃণিত শব্দে পরিণত হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা সাধারণ মানুষের কথা শোনার চেষ্টা করছি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না অর্ন্তর্বতীকালীন সরকার। জনগণ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে, ব্যবসায়ীরা নিরাপদে ব্যবসা করতে পারছে না, পুলিশ মনোবল হারিয়ে ফেলেছে এবং মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

আরও পড়ুন: বিএনপি ও সমমনাদের বৈঠক, আসেনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত

আলোচনায় অংশ নিয়ে মেজর জেনারেল (অব.) আ ন ম মুনীরুজ্জামান বলেন, পুলিশ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সামগ্রিকভাবে সংস্কার করতে হবে, শুধু পুলিশের ক্ষেত্রেই নয়। কমিশনের সিদ্ধান্তগুলো রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থন ছাড়া কার্যকর করা সম্ভব হবে না। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে কমিশনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিত। পুলিশের মনোবল ও মানসিক স্বাস্থ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং তাদের প্রশিক্ষণ আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে আরও উন্নত করা প্রয়োজন। এছাড়া জনগণেরও পুলিশের কার্যক্রমে সহায়তা করতে হবে, যাতে জনগণ পুলিশকে একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখতে পায়।

বিএনপির উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, বিগত সরকারের কিছু মন্তব্যের ফলে মনে হয়েছে ক্ষমতায় না থাকলে দেশে বড় ধরনের সহিংসতা ঘটবে এবং পুলিশের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন। এটা পরিহার করতে হবে এবং পুলিশের কাজ সেবা প্রদান করা। রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত, এটা বুঝতে পারা যে পুলিশ সেবামূলক কাজ করতে আসে।

আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ আর ক্ষমতায় আসতে পারবে না: ডা. তাহের

তিনি আরও বলেন, পুলিশ এখনও ট্রমার মধ্যে আছে। আগের সরকারের পতনের পর থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিএনপিকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের পুলিশের সেবা ও পুলিশকে নিয়ন্ত্রণ এরমধ্যে যেকোনো একটি বেছে নিতে হবে।

এ সময় সাবেক আইজিপি এম এনামুল হক পুলিশের সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, রাজনৈতিক নেতাদের আদেশের বিরুদ্ধে বলার সাহস যদি না থাকে, তবে পুলিশ বাহিনী সঠিকভাবে কাজ করতে পারবে না। আগে যেসব কমিশন গঠন করা হয়েছিল, তার প্রয়োগ হয়নি। তাই এবার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

অনুষ্ঠানে মানবাধিকার কর্মী সাইমি ওয়াদুদ বলেন, পদায়ন, পদোন্নতি ও সুপারিশ সহ সংস্কারের সব পর্যায়ে বিরাজনীতিকরণ করতে হবে। না হলে নতুন পুলিশ সংস্কার কমিশনও জনগণের দাবি ও প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে না। এটা আরেকটা রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা হয়ে যাবে।

আরও পড়ুন: সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ছবক দিতে আসবেন না, ভারতকে জামায়াত আমির

পুলিশ সংস্কার কমিশনের সদস্য ও ছাত্র প্রতিনিধি মো. জারিফ রহমান বলেন, পুলিশ ও জনগণের মধ্যে এক ধরনের ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে, বিশেষত ২০১৮ সালের গণঅভ্যুত্থানে। পুলিশ তার ভুল স্বীকার করলেও দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। তিনি রাজনৈতিক সংস্কারের পাশাপাশি পুলিশ বাহিনীর বিকেন্দ্রীকরণেও জোর দেন।

সাবেক পুলিশ পরিদর্শক মুহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, স্কুল পর্যায়ে পুলিশি কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে কিছু সমস্যা রয়েছে এবং সাংস্কৃতিক আত্মস্থকরণ প্রয়োজন। পুলিশকে ‘হেনস্তাকারী’ হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে এবং ট্রাইবালিজম বা গোত্রতন্ত্র থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। পুলিশি পদন্নতির জন্য অধিকাংশ সময় উপরের দিকে মনোযোগ দেওয়া হয়, যা সংস্কারের পথে বাধা সৃষ্টি করে।

আলোচনায় শিক্ষার্থী প্রতিনিধি রেজওয়ানা রশীদ বলেন, পুনর্গঠন একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া যা রাতারাতি সম্ভব নয়। পুলিশে শিক্ষা সিস্টেম অন্তর্ভুক্ত করা উচিত এবং কমিউনিটি পর্যায় থেকে কাজ শুরু করতে হবে।

আরও পড়ুন: ‘জনশক্তি’ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি: জাতীয় নাগরিক কমিটি

পুলিশের কার্যক্রম স্বাধীনভাবে চালানোর জন্য বিচার প্রক্রিয়া স্বচ্ছ করতে হবে বলে উল্লেখ করেন প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান। তিনি বলেন, পুলিশ ও বিচার বিভাগকে এমনভাবে তৈরি করতে হবে যাতে ভবিষ্যতে কোনও সমস্যা না হয়।

গণতান্ত্রিক পুনর্গঠন এখন খুবই ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে উল্লেখ করে সিজিএসের চেয়ারম্যান মুনিরা খান বলেন, ব্রিটিশ আমল থেকে আজ পর্যন্ত পুলিশকে ব্যবহার করা হয়েছে। অন্যায়কারীদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে এবং পুলিশকে ব্যবহারের জন্য বিচার বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে।

আরও পড়ুন: সাদপন্থীদের আ.লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে নিষিদ্ধের দাবি হেফাজতে ইসলামের

আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন দৈনিক সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক এ কে আজাদ, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের গবেষক সাফকাত মুনির, আইনজীবী রাশনা ইমাম, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম ও শিক্ষার্থী কাজী রাকিব হোসেন প্রমুখ।

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ