ছয় দশক, বা ৬০ বছর পূর্ণ হলো বাংলাভাষায় বিশ্বের প্রথম টেলিভিশন চ্যানেল-বাংলাদেশ টেলিভিশনের। ১৯৬৪ সালের এই দিনে যাত্রা শুরু করেছিলো দেশের একমাত্র সরকারি এই টিভি চ্যানেলটি। এবার পালিত হচ্ছে হীরক জয়ন্তী। বিভিন্ন সময় ক্ষমতাসীনদের চাপে দর্শকপ্রিয়তা ধরে রাখতে না পারলেও, পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে আবারো গণমানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে চায় জনগণের অর্থে পরিচালিত এই গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানটি।
১৯৬৪ সালে তৎকালীন ডিআইটি ভবন, বর্তমান রাজউক কার্যালয়ের দু’টি কক্ষে যাত্রা শুরু হয় বিশ্বের প্রথম বাংলাভাষী টিভি চ্যানেলটির। তখন এর দৈনিক সম্প্রচার হতো তিন ঘণ্টা। তৎকালীন পাকিস্তান টেলিভিশন কর্পোরেশন, ‘৭২ সালে রাষ্ট্রপতির আদেশে বাংলাদেশ টেলিভিশন নামে রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেলে পরিণত হয়।
১৯৭৫ সালের ৯ই ফেব্রুয়ারি বিটিভি স্থানান্তরিত হয় রামপুরায় নিজস্ব ভবনে। ১৯৮০ থেকে শুরু হয় রঙিন সম্প্রচার। বর্তমানে অনুষ্ঠান নির্মাণ ও সম্প্রচার কার্যক্রম চলে ঢাকা ও চট্টগ্রাম কেন্দ্র থেকে। ২০০৪ সালে বিটিভি ওয়ার্ল্ড নামে আরেকটি নতুন চ্যানেল চালু হয়। জাতীয় সংসদের অধিবেশন চলাকালে সংসদ টিভির সম্প্রচারও বিটিভির কার্যক্রম।
কৃষিভিত্তিক অনুষ্ঠান মাটি ও মানুষ, প্রাথমিক শিক্ষা ও বয়স্ক শিক্ষার প্রসার, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, স্বাস্থ্য সচেতনতা, বৃক্ষরোপণ ও পরিবেশ রক্ষা এবং সামাজিক উন্নয়নমূলক নানা কার্যক্রমে, গণমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটে বিটিভির পর্দায়।
মাঝে দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর, আওয়ামী সরকারের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে বিটিভি। উপমহাদেশের প্রথম রিয়েলিটি শো ‘নতুন কুঁড়ি’ এবং জাতীয় টেলিভিশন স্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতার মতো প্রতিভা বিকাশমূলক জনপ্রিয় অনুষ্ঠানগুলো, এ সময়ে বন্ধ ছিলো।
প্রায় সব ক্ষমতাসীনই বিটিভিকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেছে। সে কারণে জুলাই আন্দোলনে জনরোষের শিকারও হতে হয় জনগণের প্রতিষ্ঠানটিকে। দেশ ও মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা মাথায় রেখে, আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নে নতুন পথে চলতে চায় বিটিভি।
সবারই প্রত্যাশা– দর্শক চাহিদা মেনে সময়োপযোগী আর অত্যাধুনিক একটি গণমাধ্যম হয়ে উঠুক বিটিভি, ফিরে পাক হারানো গৌরব।