সর্বশেষ
ভিনগ্রহে প্রাণের অস্তিত্বের শক্ত প্রমাণ পেলেন বিজ্ঞানীরা
যে ৫ প্রাণঘাতী রোগের কারণ হাই কোলেস্টেরল
এক লুকের সঙ্গে আরেক লুকের কোনো মিল নেই টালিউড সুইটহার্ট শ্রীজলার
হজম ক্ষমতা বাড়াতে মেনে চলুন কিছু টিপস
গ্রীষ্মে রোদে পোড়া ও নিস্তেজ ত্বককে বিদায় জানাতে মেনে চলুন এই ৭টি হাইড্রেশন হ্যাকস
হাই ট্রাইগ্লিসারাইড : স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়
খালি পেটে পেঁপে পাতার রস খেলে মিলবে যেসব উপকার
৮৬ বছর বয়সে উইন্ডসার্ফিংয়ে বিশ্বরেকর্ড
সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণের মালিক হলেই কোরবানি ওয়াজিব
বোরো ধানের নমুনা শস্য কর্তন শুরু
ওটিটিতে মুক্তি পেল তাসনিয়া ফারিণের প্রথম সিনেমা
ভিসা ইস্যু নিয়ে যে বার্তা দিল ঢাকার মার্কিন দূতাবাস
নিজেদের ভুল বোঝাবুঝিতে ফ্যাসিবাদ সুযোগ নেবে: রিজভী
কাতার সফরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গী হচ্ছেন চার নারী ক্রীড়াবিদ
হিন্দু নেতাকে অপহরণের পর হত্যা, যা বলল ভারত

রোগ নিরাময়ে কার্যকর ভেষজ ঔষধি বেত গাছ

অনলাইন ডেস্ক

বেতফল এক প্রকার সপুষ্পক উদ্ভিদ। অতি মূল্যবান, ভেষজ ও অর্থকরী উদ্ভিদ বেত গাছ। বেত গাছের ফলকে বেতফল, বেত্তুন, বেথুন, বেথুল, বেতগুলা, বেতগুটি, বেত্তুইন ইত্যাদি নামে ডাকা হয়। বেত গাছের আদি আবাস হিমালয়ের উষ্ণ এলাকা, বাংলাদেশ, ভারত ও মিয়ানমার। এছাড়া বেতগাছ ভুটান, কম্বোডিয়া, লাওস, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, জাভা ও সুমাত্রা অঞ্চলেও জন্মে।

বেতফল যেমন পুষ্টিকর তেমন সুস্বাদু ও ঔষধিগুণ সমৃদ্ধ। মূলত মাটির অবস্থা ভেদে এই ফল খুব মিষ্টি হয়। আবার স্থান ভেদে একটু টকও হয়। বেতফল মরিচ দিয়ে চাটনি করে খেতে খুব মজাদার। বাংলা মাসের চৈত্র, বৈশাখ এবং জ্যৈষ্ঠ মাসে বেতফল পাকে।

বাংলাদেশে গ্রামগঞ্জে বেত গাছ দেখা যায়। বেত কাঁটাময়, চিরসবুজ, অরোহী পাম। কাণ্ড লম্বা, কাঁটাযুক্ত ও শাখাহীন। সরু ও নলাকার কাণ্ড প্রস্থে সাধারণত ৫-১৫ মিলিমিটার। প্রতিটি কাণ্ডের আগা থেকে নতুন পাতা বের হয় ও বেড়ে ওঠে। কাণ্ড বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এর নিচের অংশ পোক্ত হতে থাকে। কোনো ধারককে ধরে রাখার জন্য কাঁটাযুক্ত ধারক লতা বের হয়। বেতে ফুল ধরার আগে গাছ থেকে একধরনের মিষ্টি ঘ্রাণ আসে। তখন মৌমাছি, পিঁপড়া, মাছি আসে সেই রস খেয়ে মাতাল হওয়ার জন্য।

বেত শিল্প বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন কুটির শিল্প৷ এক যুগ আগেই বেতের অনেক প্রচলন ছিল৷ বর্তমানে প্লাস্টিকের ব্যবহারের কারণে বেতের ব্যবহার খুব কমে গেছে৷ তারপরও গ্রাম-গঞ্জে অনেকেই এখনো বেতের তৈরি আসবাবপত্র ব্যবহার করে থাকে৷ উন্নতমানের হ্যান্ডিক্রাফট, গৃহের আসবাবপত্র তৈরির জন্য বেতের ব্যবহার বেশি।

বেতফল ও মূল ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। দেশে ছয় প্রজাতির বেতফল পাওয়া যায়। একটি থোকায় ২০০টি পর্যন্ত ফল ধরে। ফলের খোসা পাতলা ডিমের খোসার মতো। পাকা ফলের শাঁস নরম, খেতে টক-মিষ্টি। কস স্বাদযুক্ত ফল গ্রামীণ শিশুদের অতি প্রিয়। এ ফল বাজারে বিক্রি হয়। দেশের বিভিন্ন এলাকায় বেতের কচি কাণ্ড তরকারি হিসেবেও খাওয়া হয়।

বেতফলের মধ্যে প্রোটিন, পটাসিয়াম এবং পেকটিন থাকে। পাশাপাশি থায়ামিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন সি জাতীয় পুষ্টি থাকে বেতের ফলগুলোতে ফ্ল্যাভোনয়েডস, ফেনোলিক অ্যাসিড এবং ট্যানিন জাতীয় যৌগগুলোও বেশি থাকে। যা অ্যালার্জি ও প্রদাহ প্রতিরোধে কার্যকর হতে পারে। এছাড়া আরো অনেক রোগের মুক্তি মেলে এই গাছে।

আমাশয় রোগে উপকারী

আমাশয় রোগের জন্য অত্যন্ত উপকারী। যাদের পুরনো আমাশয় আছে তারা এই বেত গাছের শাঁস নিয়মিত খেতে পারেন। এতে করে চিরতরে আমাশয় সেরে যাবে।

শুক্রাণু বৃদ্ধি ঘটায়

যাদের শুক্রাণু পাতলা তারা বেত গাছের মূল চূর্ণ্ করে ঘিয়ে ভেজে নিয়ে মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন। এভাবে খেতে পারলে শুক্রাণু বৃদ্ধি অনেকাংশে বেড়ে যাবে।

দাঁতের গোড়া শক্ত করতে

বেত গাছের মূলের রয়েছে অসাধারণ সব উপকারিতা। প্রথমে বেত গাছের মূল সেদ্ধ করে নিতে হবে। এরপর এই সিদ্ধ করা পানি দিয়ে কুলকুচি করলে দাঁতের গোড়া শক্ত হয়।

পিত্তথলির সমস্যা দূর করে

বেত ফলের রস চিনির সঙ্গে মিশিয়ে নিয়মিত খেলে পিত্তথলির যাবতীয় সমস্যা সেরে যায়।

যাবতীয় রোগ নিরাময়ে

বেত গাছের মূলের ক্বাথ সেবন করলে মূত্র সংক্রান্ত যাবতীয় রোগ নিরাময় হয়। আয়ুর্বেদ বহু প্রাচীনকাল থেকে ঘাম প্ররোচিত করতে এবং রিউম্যাটয়েড বাত এবং স্ট্রোকের চিকিৎসার জন্য ক্যালামাসকে একটি শান্ত ওষুধ হিসাবে ব্যবহার করে আসছে। কিছু লোক তামাকের গন্ধ দূর করতে, উত্তেজক হিসাবে, নিজের মঙ্গলভাব বোধ বাড়ানোর জন্য এবং হ্যালুসিনোজেন হিসাবে চিবিয়ে খায়।

যুগের পরিবর্তন ও কাল বিবর্তনের মাধ্যমে বর্তমানে আমাদের দেশীয় নিজস্ব গাছ নিয়ে তেমন গবেষণা হয় না। বরং বিদেশী গাছ-ফল নিয়ে সবাই মাতোয়ারা। যার ফলে হারিয়ে যেতে বসেছে বেত গাছের মত বিভিন্ন ভেষজ ঔষধি গাছ।

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ