সর্বশেষ
সিইসির সঙ্গে আজ বৈঠকে বসছে এনসিপি
ক্যাস্ট্রলের আফটারমার্কেট ডিস্ট্রিবিউটর রক এনার্জি
রাজনৈতিক বিবেচনায় আর কোনো নতুন ব্যাংক নয়
বিএনপি-এনসিপির পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, প্রশাসন আসলেই কার পক্ষে?
৮ মাস পর খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল  
সাবেক ১১ মন্ত্রীসহ ১৯ জনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির
বিচার ব্যবস্থাকে আরও সহজ করতে হবে: আইন উপদেষ্টা
১০ বছরের গবেষণায় ভাতেও পাওয়া গেছে আর্সেনিক, বিজ্ঞানীদের সতর্কবার্তা
ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় দিনের বৈঠকে বিএনপি
ভিনগ্রহে প্রাণের অস্তিত্বের শক্ত প্রমাণ পেলেন বিজ্ঞানীরা
যে ৫ প্রাণঘাতী রোগের কারণ হাই কোলেস্টেরল
এক লুকের সঙ্গে আরেক লুকের কোনো মিল নেই টালিউড সুইটহার্ট শ্রীজলার
হজম ক্ষমতা বাড়াতে মেনে চলুন কিছু টিপস
গ্রীষ্মে রোদে পোড়া ও নিস্তেজ ত্বককে বিদায় জানাতে মেনে চলুন এই ৭টি হাইড্রেশন হ্যাকস
হাই ট্রাইগ্লিসারাইড : স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়

দিল্লির ‘লেডি ডন’ কে এই জয়া খান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

বছরের পর বছর ধরে ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে কিন্তু শেষ পর্যন্তলেডি ডনখ্যাত জয়া খানকে গ্রেফতার করল দিল্লি পুলিশ ভারতের দিল্লির উত্তরপূর্ব এলাকার ওয়েলকাম অঞ্চলে অভিযান চালিয়ে তাকে ২৭০ গ্রাম হেরোইনসহ গ্রেফতার করা হয় যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় কোটি টাকা এই হেরোইন উত্তরপ্রদেশের মুজাফফরনগর থেকে আনা হয়েছিল বলে অভিযোগ

অপরাধ জগতের রানি

৩৩ বছর বয়সি জয়া খান বহুদিন ধরেই পুলিশের নজরে ছিলেন। তবে এতদিন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে সরাসরি কোনো প্রমাণ মেলেনি। তিনি তার কুখ্যাত গ্যাংস্টার স্বামী হাশিম বাবা অপরাধ সাম্রাজ্য পরিচালনা করতেন। হাশিম বাবা বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন

এই হাশিম বাবার বিরুদ্ধে খুন, চাঁদাবাজি, অস্ত্র পাচারসহ বহু মামলা রয়েছে। জয়া তার তৃতীয় স্ত্রী। ২০১৭ সালে হাশিমের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। এর আগে তিনি অন্য এক ব্যক্তির সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন। সেই ব্যক্তির সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পরই তিনি হাশিম বাবার সংস্পর্শে আসেন। তারা দুজনেই দিল্লির উত্তরপূর্ব এলাকায় প্রতিবেশী ছিলেন এবং সেখান থেকেই তাদের সম্পর্কের শুরু

ডনের ছায়ায় গ্যাং পরিচালনা

হাশিম বাবা কারাগারে যাওয়ার পর জয়া তার পুরো গ্যাং পরিচালনার দায়িত্ব নেন। দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল সূত্রে জানা গেছে, তিনি দাউদ ইব্রাহিমের বোন হাসিনা পারকারের মতো পুরো নেটওয়ার্ক পরিচালনা করতেন। তার কাজের মধ্যে ছিল চাঁদাবাজি, মাদক পাচার আর্থিক লেনদেন সামলানো

জয়া খান সামাজিকভাবে নিজেকে সাধারণ অপরাধীদের মতো তুলে ধরতেন না। বরং তিনি বিলাসবহুল জীবনযাপন করতেন, দামি পোশাক পরতেন, পার্টিতে যেতেন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় তার জনপ্রিয়তাও ছিল অনেক বেশি

তিনি নিয়মিত তিহার জেলে স্বামী হাশিম বাবার সঙ্গে দেখা করতেন এবং সেখানে কোডেড ভাষায় তাদের অপরাধমূলক কার্যকলাপ নিয়ে আলোচনা করতেন।

পুলিশের দাবি, তিনি গোপনে হাশিমের সহযোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন এবং তার নির্দেশে পুরো গ্যাং পরিচালনা করতেন

গ্রেফতার এবং অপরাধমূলক সংযোগ

দীর্ঘদিন চেষ্টা করেও দিল্লি পুলিশ জয়াকে ধরতে পারেনি। তবে সম্প্রতি স্পেশাল সেলের একটি গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলা হয়

পুলিশের ধারণা, তিনি নাদির শাহ হত্যা মামলার অন্যতম সন্দেহভাজন। নাদির শাহ দক্ষিণ দিল্লির গ্রেটার কৈলাশ এলাকার এক জিম মালিক ছিলেন। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি গুলিতে নিহত হন।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল জয়াকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছিল এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা নিয়ে

পারিবারিক ইতিহাস

জয়ার পরিবারের সঙ্গেও অপরাধ জগতের যোগসূত্র রয়েছে। তার মা ২০২৪ সালে মানব পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন এবং বর্তমানে জামিনে মুক্ত। তার বাবাও মাদক সরবরাহ চক্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন

জয়া মূলত দিল্লির উসমানপুর এলাকায় অপরাধমূলক কার্যকলাপ চালাতেন এবং সবসময় জন অস্ত্রধারী দেহরক্ষী নিয়ে চলাফেরা করতেন। এই দেহরক্ষীরা তার স্বামী হাশিম বাবার বিশ্বস্ত অনুচর

দিল্লির উত্তরপূর্ব অঞ্চল বহুদিন ধরেই অপরাধ চক্রের কেন্দ্রস্থল হিসেবে পরিচিত। এখানে চেনু গ্যাং, হাশিম বাবা গ্যাং, নাসির পহেলওয়ান গ্যাংএর মতো অপরাধী সংগঠন সক্রিয়

লরেন্স বিষ্ণোইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক

হাশিম বাবার নাম মূলত গত বছর নাদির শাহ হত্যাকাণ্ডের সময়েই উঠে আসে। তখন তিনি তিহার জেলে বন্দি ছিলেন এবং তদন্তকারীদের কাছে স্বীকার করেন যে, তিনি এই হত্যার পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন

সময় তিনি লরেন্স বিষ্ণোইএর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হন। এই লরেন্স বিষ্ণোই আবার পাঞ্জাবি গায়ক সিধু মুসেওয়ালা হত্যা বলিউড অভিনেতা সালমান খানের বাড়ির সামনে গুলিবর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত

পুলিশের মতে, ২০২১ সালে কারাগারে থাকার সময় হাশিম বাবা লরেন্স বিষ্ণোই একে অপরের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং গোপন মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে জেলের ভেতর থেকেই তাদের অপরাধমূলক কার্যকলাপ চালিয়ে যান

উত্তরপূর্ব দিল্লিতে আতঙ্কের সমাপ্তি!

এদিকে লেডি ডন জয়া খানের গ্রেফতারের ফলে দিল্লির অপরাধ জগতে বড়সড় প্রভাব পড়তে পারে। তবে পুলিশ মনে করছে, এখনো তার স্বামী হাশিম বাবার গ্যাং পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়নি।

তবে জয়ার গ্রেফতার এই অপরাধচক্রকে কতটা দুর্বল করে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

সূত্র: এনডিটিভি

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ