সর্বশেষ
বোরো ধানের নমুনা শস্য কর্তন শুরু
ওটিটিতে মুক্তি পেল তাসনিয়া ফারিণের প্রথম সিনেমা
ভিসা ইস্যু নিয়ে যে বার্তা দিল ঢাকার মার্কিন দূতাবাস
নিজেদের ভুল বোঝাবুঝিতে ফ্যাসিবাদ সুযোগ নেবে: রিজভী
কাতার সফরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গী হচ্ছেন চার নারী ক্রীড়াবিদ
হিন্দু নেতাকে অপহরণের পর হত্যা, যা বলল ভারত
আওয়ামী লীগের মিছিল নিয়ে কড়া বার্তা হাসনাতের
এক ব্যক্তি দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী নয়: নাহিদ ইসলাম
দেরি করে পৌঁছানোয় স্বপ্নভঙ্গ ওদের
নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে প্রধান উপদেষ্টার তাগিদ
নির্বাচনের জন্য এখনই আন্দোলনের প্রয়োজন দেখছে না বিএনপি
বিলাসবহুল অফিস ও বন্দর কমিটি নিয়ে যা বললেন হান্নান মাসউদ
শাহজাদপুরে যুবদল কর্মীকে হত্যার অভিযোগ
ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়া প্রমাণ করে ভারত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নয়: দুদু
‘শুভ কাজে সবার পাশে’ স্লোগানে বসুন্ধরা শুভসংঘের মনপুরা উপজেলা কমিটি গঠিত

পুরুষ ঢুকতে পারে না গ্রামে, তবু অন্তঃসত্ত্বা হন মহিলারা

অনলাইন ডেস্ক

কেনিয়ার এক ব্যতিক্রমী গ্রাম উমোজা। অনেকেই জানেন, আবার অনেকেই জানেন না এই আশ্চর্য গ্রামের কথা। কেন আশ্চর্য গ্রাম বলা হয় একে? কারণ এই গ্রামের ভিতর থাকতে পারেন না কোনও পুরুষ। এমনকী স্বামী বা পুত্র পর্যন্ত না। বহু মানুষের কাছে এই গ্রামের ইতিহাস বেশ আকর্ষণীয় এবং নারীর ক্ষমতায়নের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এটি।

প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট: ১৯৯০ সালে উমোজা গ্রামটি প্রতিষ্ঠা করেন রেবেকা লোলোসোলি নামের এক নারী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরও ১৫ জন নারী। কিন্তু হঠাৎ কেন নিজেদের জন্য আলাদা গ্রাম তৈরি করলেন তাঁরা? নেপথ্যে রয়েছে এক ভয়াবহ কাহিনি।

কেনিয়ার যে প্রান্তে এই গ্রামটি অবস্থিত সেখানে এক সময় চরম নির্যাতনের শিকার হতে হত নারীদের। যাঁরা এই গ্রাম প্রতিষ্ঠা করেন, তাঁরাও সবাই কোনও না কোনও ভাবে পুরুষদের দ্বারা নির্যাতিত হয়েছিলেন। কেউ বাল্যবিবাহের শিকার, কেউ ধর্ষিতা, আবার কেউ গার্হস্থ্য হিংসার শিকার।

শেষ পর্যন্ত রেবেকর নেতৃত্বে এই নারীরা সমাজের মূল স্রোত থেকে কিছুটা দূরে নিজেদের জন্য আলাদা করে একটি নিরাপদ আশ্রয় তৈরি করতে উদ্যোগী হন। যেখানে তাঁরা নিজেদের মতো করে বাঁচতে পারবেন। যেমন ভাবা তেমন কাজ। নিজেরাই আলাদা গ্রাম তৈরি করেন তাঁরা। নিয়ম করেন, কোনও পুরুষ থাকতে পারবেন না সেখানে।

কেমন সেই গ্রামের জীবনযাত্রা? বর্তমানে উমোজা গ্রামে প্রায় ২৫০ জন নারী ও তাঁদের সন্তান বসবাস করে। নারীরা নিজেরাই নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করেণ। এই গ্রাম দেখতে বাইরে থেকে প্রচুর পর্যটকও আসেন। গ্রামের বাসিন্দারা গয়না তৈরি করে সেই পর্যটকদের কাছে বিক্রি করেন। তবে পর্যটকদের মধ্যেও কেবল নারীরাই ঢুকতে পারেন এই গ্রামে। এছাড়াও কেউ কেউ জমি চাষ এবং পশুপালন করেন।

শুধু জীবনযাপন নয়, সঙ্গী নির্বাচন নিয়েও স্বাধীনতা রয়েছে নারীদের। যা কেনিয়া তো বটেই বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তেও এখনও বেশ বিরল। কোনও পুরুষকে পছন্দ হলেও অবশ্য তাঁকে গ্রামের ভিতর আনতে পারেন না কেউ। বাইরে দেখা করতে যেতে হয়।

গ্রামের বাইরে তৈরি হওয়া সম্পর্কে কোনও নারী অন্তঃসত্ত্বা হলে, তাঁর পরিচর্যার দায়িত্ব নেন গ্রামের বয়স্ক নারীরাই। তবে পুত্র সন্তান হলে, সে কেবল নাবালক থাকা পর্যন্তই মায়ের কাছে থাকতে পারে। সাবালক হয়ে গেলেই গ্রামের বাইরে চলে যেতে হয় তাঁকে।

প্রাথমিক ভাবে এমন মাতৃতান্ত্রিক গ্রাম মোটেই পছন্দ করতেন না পার্শ্ববর্তী গ্রামের পুরুষরা। বহুবার হামলা চালিয়ে গ্রাম ধ্বংস করে দেওয়ার চেষ্টাও করেন তাঁরা। কিন্তু উমোজার নারীরা হার মানেননি। প্রথমে মার খেলেও পরে নিজেরাই লাঠি, মশাল, কোদাল, কুড়ুল দিয়ে অস্ত্র গড়েছেন নিজেদের প্রতিরক্ষার স্বার্থে।

অর্থের বণ্টনের দিক থেকেও এখানে কায়েম রয়েছে সাম্যবাদ। গ্রামের সকলের আয় এক জায়গায় করেন বয়স্ক মহিলার। তার পর সমান ভাবে তা সকলের মধ্যে বন্টন করে দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে উমোজা গ্রাম শুধু কেনিয়ার নয়, সারা বিশ্বের নারীদের জন্য একটি অনুপ্রেরণা। এই গ্রাম প্রমাণ করে যে, নারীরা চাইলে নিজেদের ভাগ্য নিজেরাই নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ