সর্বশেষ
বোরো ধানের নমুনা শস্য কর্তন শুরু
ওটিটিতে মুক্তি পেল তাসনিয়া ফারিণের প্রথম সিনেমা
ভিসা ইস্যু নিয়ে যে বার্তা দিল ঢাকার মার্কিন দূতাবাস
নিজেদের ভুল বোঝাবুঝিতে ফ্যাসিবাদ সুযোগ নেবে: রিজভী
কাতার সফরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গী হচ্ছেন চার নারী ক্রীড়াবিদ
হিন্দু নেতাকে অপহরণের পর হত্যা, যা বলল ভারত
আওয়ামী লীগের মিছিল নিয়ে কড়া বার্তা হাসনাতের
এক ব্যক্তি দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী নয়: নাহিদ ইসলাম
দেরি করে পৌঁছানোয় স্বপ্নভঙ্গ ওদের
নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে প্রধান উপদেষ্টার তাগিদ
নির্বাচনের জন্য এখনই আন্দোলনের প্রয়োজন দেখছে না বিএনপি
বিলাসবহুল অফিস ও বন্দর কমিটি নিয়ে যা বললেন হান্নান মাসউদ
শাহজাদপুরে যুবদল কর্মীকে হত্যার অভিযোগ
ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়া প্রমাণ করে ভারত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নয়: দুদু
‘শুভ কাজে সবার পাশে’ স্লোগানে বসুন্ধরা শুভসংঘের মনপুরা উপজেলা কমিটি গঠিত

অস্বাস্থ্যকর সেহরি-ইফতার ঝুঁকি বাড়ায় রোগের

অনলাইন ডেস্ক

দেশ সংস্কৃতি ভেদে রমজান মাসে সেহরি ইফতারে খাবারের ধরন ভিন্ন হয়ে থাকে এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে ভাজাপোড়া খাবার বেশ প্রচলিত, যা সাধারণত খুব একটা স্বাস্থ্যকর হয় না বেশিরভাগ রোজাদারের ইফতারে তেলে ভাজা এবং সেহরিতে ভারী খাবারের প্রাধান্য থাকে জনস্বাস্থ্যবিদ পুষ্টিবিদদের মতে, অস্বাস্থ্যকর সেহরি ইফতার নানা রোগব্যাধির ঝুঁকি বাড়ায় ফলে জাতীয় খাবার পরিহার করা উচিত তাদের পরামর্শদিনভর রোজা রেখে শরীরে যে শক্তি পুষ্টির চাহিদা থাকে তা পূরণে সেহরি ইফতারে এমন খাবার খেতে হবে যেগুলো প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন মিনারেল সমৃদ্ধ একই সঙ্গে যথেষ্ট পানি পানে গুরুত্ব দিতে হবে সাধারণত রমজানে সেহরি ইফতারকে কেন্দ্র করে বাহারি খাবার বিক্রি বেড়ে যায়

মৌসুমি ব্যবসায়ীদের খোলা বাজারে অস্বাস্থ্যকর তেলে ভাজা মুখরোচক খাবার বিক্রির ধুম পড়ে। বেগুনি, পিঁয়াজু, জিলাপি, আলুর চপ, ছোলা, সবজি চপ, বুন্দিয়া ছাড়াও স্পেশাল আইটেম হিসাবে হালিম বিক্রির হাঁকডাক চলে। বিশেষ করে পুরান ঢাকার চকবাজারে ইফতার, সেহরির জন্য তৈরি অতিরিক্ত তেল মসলাযুক্ত গুরুপাক খাবার যেন দেশীয় সংস্কৃতি তথা ঐতিহ্যের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকের খাদ্য তালিকায় প্রসেস ফুড কিংবা ফাস্টফুডও যুক্ত হতে দেখা যায়। অনেকে খোলা বাজারে তৈরি অস্বাস্থ্যকর শরবত, জুস, কোমল পানীয় পানে তৃপ্তির ঢেকুর তোলেন।

চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা যুগান্তরকে বলছেন, সারা দিন রোজা রাখার পর ভাজাপোড়া খাবার গ্রহণে স্বাভাবিকভাবেই গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটি সৃষ্টি করতে পারে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি ভাজাপোড়া খাবারগুলো শরীরের শিরাধমনিতে চর্বির পুরুত্ব বাড়িয়ে দেয়। এতে বুকে ব্যথা, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ে। খোলামেলা নোংরা পরিবেশে তৈরি বিক্রি হওয়া খাবারে ডায়রিয়ার ঝুঁকি থাকে।

দীর্ঘক্ষণ রোজা রেখে শরীরে এমনিতেই পানির ঘাটতি থাকে। অনেকে ইফতারে অতিরিক্ত চিনিযুক্ত শরবত, কোমল পানীয় কিংবা বাজারের প্যাকেটজাত শরবত পান করেন। কেউ ইফতার শেষে চা, কফি, অ্যালকোহলও পান করেন। কেউ মিষ্টি মিষ্টি জাতীয় খাবার খেয়ে থাকেন। অতিরিক্ত চিনিযুক্ত শরবত খেলে কোষরে পানি শুষে নেয়, শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়ে। ফলে অবসাদ, অতিরিক্ত ক্লান্তি কিংবা তীব্র মাথাব্যথা হতে পারে। যারা ওজনাধিক্যে ভুগছেন তারা চিনিযুক্ত শরবত খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব কঠিন হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, রোজায় অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবার খেলে ট্রান্সফ্যাট বেড়ে যেতে পারে। এতে অ্যাসিডিটি, গ্যাসের সমস্যা, কনস্টিপেশন (কোষ্ঠকাঠিন্য) আলসার হতে পারে। রোজা রেখে একাধিক ডাল ডাল জাতীয় খাবার খেলে শরীরে ইউরিক এসিড বাড়ে। কিডনির ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে, রক্তের ক্রিয়েটিনিন বেড়ে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ যুগান্তরকে বলেন, রমজান মাসে আমাদের দেশীয় সংস্কৃতিতে কিছু খাদ্যাভাস আছে। বিক্রেতারা রাস্তাঘাটের পাশে তেলে ভাজাসহ নানা পদের মিষ্টিজাতীয় ভারী খাবারের পসরা সাজিয়ে বসেন। এগুলো খাওয়ায় নিষেধ নেই, তবে বাইরে খাবার না খেয়ে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে ঘরে তৈরি করে পরিমিতভাবে খাওয়া উত্তম। সেহরির ক্ষেত্রেও একই পন্থা অবলম্বন করা উচিত। এক্ষেত্রে ডায়াবেটিস রোগীরা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ডায়েট চার্ট মেনে চলবেন।

ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র পুষ্টিবিদ সিরাজাম মুনিরা যুগান্তরকে বলেন, প্রায় ১৫ থেকে ১৬ ঘণ্টা রোজা রাখায় শরীরে ইলেকট্রোলাইটস ইমব্যালান্স হয়। ফলে ইফতারে ট্র্যাডিশনাল মিষ্টি জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করলে শরীরের রক্তে সুগারের পরিমাণ বেড়ে যায়। এতে বুক ধড়ফড়, অতিরিক্ত ঘাম ঝরা, মাথাঘোরা, হাইপোগ্লাইসোমিয়া (রক্তে গ্লুকোজ বা শর্করার মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কমে যাওয়া) হতে পারে। বিশেষ করে হার্ট ডায়াবেটিস রোগীরা অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন।

তিনি বলেন, ইফতারে ডাবের পানি পানে শরীরে ইলেকট্রোলাইটস ঘাটতি পূরণ করে সাহায্য করে। অনেকে পলিথিনে ভরে ডাবের পানি কেনেন। ফুডগ্রেডহীন পলিথিনে থাকা প্লাস্টিক ন্যানো পার্টিকেল পানির কার্যকারিতা একেবারেই নষ্ট করে ফেলে। ওই পানি পানে ক্যানসার, অটিজমসহ বিভিন্ন ইমিউনোলজিক্যাল ডিজঅর্ডারের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

সেহরিতে কী খাবেন : পুষ্টিবিদদের মতে, সেহরি হতে হবে সুপাচ্য, সহজে হজমযোগ্য, পর্যাপ্ত ক্যালরি সমৃদ্ধ সুষম খাবারের সমন্বয়। খাদ্য তালিকায় সব গ্রুপের খাবার থাকতে হবে যেমনপ্রোটিন, শর্করা, ফ্যাট, ভিটামিন মিনারেলযুক্ত খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার জাতীয় খাবার। সম্ভব হলে লাল চালের ভাত কিংবা লাল আটার রুটি খেতে পারলে ভালো। শরীরে ভিটামিন মিনারেলস পাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে তাজা শাকসবজি ফলমূল রাখতে হবে

ইফতারে খাবার কেমন হবে : ইফতারে অবশ্যই একটি অথবা দুটি খেজুর খাওয়া উচিত। খেজুরে রয়েছে বিভিন্ন ভিটামিন মিনারেলস এবং যথেষ্ট পরিমাণে ডাইটারি ফাইবার। খেজুরের ইনস্ট্যান্ট সুগার বা চিনি ক্লান্তি দূর করে। স্বাভাবিক পানি পানি জাতীয় খাবার, দই, চিড়া, কলা, সবজি খিচুড়ি খাওয়া যেতে পারে। শসা কুচি, গাজর, টমেটো, ধনেপাতা, পুদিনাপাতা সরিষার তেল দিয়ে সালাদ করে খাওয়া যেতে পারে। এছাড়া মৌসুমি তাজা মৌসুমি ফল গ্রহণে প্রাধান্য দেওয়া উচিত

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ