বর্তমানে দেশে ক্যানসার একটি বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠছে। প্রতি বছরই এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ ন্যাশনাল ক্যানসার রেজিস্ট্রি প্রোগ্রাম অনুসারে, ২০২৪ সালে ভারতে এখনও পর্যন্ত ১৫ লক্ষেরও বেশি ক্যানসার আক্রান্তের ঘটনা ঘটেছে। নারী ও পুরুষ, উভয়ের মধ্যেই এই রোগের প্রকোপ বাড়ছে। মহিলাদের মধ্যে স্তন ক্যান্সারের ঘটনা বেশি ঘটছে। এই রোগটি খুব দেরিতে ধরা পড়ে এবং ততক্ষণে রোগী অ্যাডভান্স স্টেজে চলে যায়। তবে এমন একটি পরীক্ষাও রয়েছে যা আগে থেকেই বলে দিতে পারে ক্যানসার হবে কি না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন তরুণীরাও স্তন ক্যানসারের শিকার হচ্ছেন। স্তন ক্যানসার বেশ দেরিতে ধরা পড়ে। ফলে চিকিৎসা একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। এই ক্যানসারও এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে চলে যায়। যদি কোনও মহিলার এটি থাকে তবে তার মেয়েরও এটি হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তবে এটি একটি সাধারণ পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করা যেতে পারে। BRCA1 এবং BRCA2 জিন পরীক্ষা করলে বোঝা যেতে পারে যে, স্তন ক্যানসার এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে চলে যাবে কি না। যেহেতু অল্প বয়সেও ক্যানসার হতে পারে এবং উভয় স্তনেই হতে পারে, তাই এই পরীক্ষা করানো উচিত।
কোন মহিলাদের এই পরীক্ষা করা উচিত?
স্বাস্থ্য নীতি বিশেষজ্ঞ এবং ক্যানসার সার্জন ডা. আংশুমান কুমার জানান, যদি কোনও মহিলার মধ্যে স্তন ক্যানসার ধরা পড়ে এবং তার মেয়ের বয়স ২০ বছরের বেশি হয়, তাহলে ওই মেয়ের স্তন ক্যানসারের জন্য পরীক্ষা করানো উচিত। এ ধরনের ক্ষেত্রে বিআরসিএ জিন পরীক্ষা করা হয়। যে কোনও সরকারি ও বেসরকারি ক্যানসার হাসপাতালে এই পরীক্ষা করা হয়। এর থেকে জানা যায় জিনে ক্যানসারের ঝুঁকি কতটা এবং মা থেকে মেয়ের মধ্যে ক্যানসারের জিন যাওয়ার ঝুঁকি আছে কি না।
সমস্ত মহিলাদের এই পরীক্ষা করা উচিত?
ডা. আংশুমান জানান, সমস্ত মহিলাদের বিআরসিএ জিন পরীক্ষার প্রয়োজন হয় না। স্তন ক্যানসার শনাক্ত করতে মহিলারা একটি সাধারণ ম্যামোগ্রাম পরীক্ষা করতে পারেন।
কেন স্তন ক্যানসারের হার বাড়ছে?
বিশিষ্ট অঙ্কোলজিস্টের মতে, খারাপ খাদ্যাভ্যাস, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, ধূমপান, অ্যালকোহল সেবন, দেরিতে বিয়ে করা এবং শিশুকে বুকের দুধ না খাওয়ানো স্তন ক্যান্সারের প্রধান কারণ। ভারতে এই ক্যানসারের হার খুব দ্রুত বাড়ছে। ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সি মহিলারাও এর শিকার হচ্ছেন।
কীভাবে রক্ষা পাওয়া যায়?
চিকিৎসকদের মতে, ক্যানসার থেকে রক্ষা পেতে। খাদ্যতালিকায় সবুজ ফল ও শাকসবজি অন্তর্ভুক্ত করুন। প্রতিদিন ব্যায়াম করুন, ধূমপান ও অ্যালকোহল পান করবেন না এবং স্তন পরীক্ষা করুন। যদি স্তনে ফোলাভাব বা কোনও অস্বাভাবিকতা মনে হয়, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।