সর্বশেষ
বোরো ধানের নমুনা শস্য কর্তন শুরু
ওটিটিতে মুক্তি পেল তাসনিয়া ফারিণের প্রথম সিনেমা
ভিসা ইস্যু নিয়ে যে বার্তা দিল ঢাকার মার্কিন দূতাবাস
নিজেদের ভুল বোঝাবুঝিতে ফ্যাসিবাদ সুযোগ নেবে: রিজভী
কাতার সফরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গী হচ্ছেন চার নারী ক্রীড়াবিদ
হিন্দু নেতাকে অপহরণের পর হত্যা, যা বলল ভারত
আওয়ামী লীগের মিছিল নিয়ে কড়া বার্তা হাসনাতের
এক ব্যক্তি দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী নয়: নাহিদ ইসলাম
দেরি করে পৌঁছানোয় স্বপ্নভঙ্গ ওদের
নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে প্রধান উপদেষ্টার তাগিদ
নির্বাচনের জন্য এখনই আন্দোলনের প্রয়োজন দেখছে না বিএনপি
বিলাসবহুল অফিস ও বন্দর কমিটি নিয়ে যা বললেন হান্নান মাসউদ
শাহজাদপুরে যুবদল কর্মীকে হত্যার অভিযোগ
ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়া প্রমাণ করে ভারত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নয়: দুদু
‘শুভ কাজে সবার পাশে’ স্লোগানে বসুন্ধরা শুভসংঘের মনপুরা উপজেলা কমিটি গঠিত

রমজান ঐতিহ্য ইস্তাম্বুলে রোজা ও রমজান

অনলাইন ডেস্ক

রমজান হলো রোজা, ইবাদত এবং কোরআন চর্চার মাস। রমজান এমন একটি পবিত্র মাস যখন মুসলমানরা খাদ্য ও পানীয় এবং শরিয়ত নির্ধারিত বিষয় থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে আত্মিক পরিশুদ্ধি লাভ করে এবং আল্লাহর ধ্যানে মগ্ন হয়। রমজানে পাল্টে যায় মুসলিম জীবনের চিরায়ত ধারা। ঐতিহাসিক ইস্তাম্বুল নগরেও এই আধ্যাত্মিকতা, আল্লাহপ্রেমে ও পরিবর্তিত জীবনধারা চোখে পড়ে।

রমজান মাসে তুর্কি মুসলিমরা সাধারণত উসমানীয় সাম্রাজ্যের সময় গড়ে ওঠা সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যগুলো মেনে চলে। তাদের কাজে পুনরুজ্জীবিত হয় হারিয়ে যাওয়া মুসলিম ঐতিহ্য।

যারা ইস্তাম্বুলে রমজান উপভোগ করার সুযোগ পায় তারা প্রায়শই গণ ইফতারের বড় বড় আয়োজন, রমজানের রাতে নাগরিক জীবনের কোলাহল এবং শহরের আলোকিত মসজিদগুলো তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এর বাইরে ইস্তাম্বুলের একটি লুকানো ঐতিহ্য রয়েছে। যা কেবল তারাই দেখতে পায় যারা গভীরভাবে অনুসন্ধান করে।

ধর্মীয় বিধি-বিধানের বাইরে রমজানের যে একটি সামাজিক দিকও রয়েছে ইস্তাম্বুলে গেলে আপনি তা যথাযথভাবে উপলব্ধি করতে পারবেন। বিশেষ করে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে স্থানীয়দের ভিড় জনসমাগম স্থান, পার্ক ও মসজিদের প্রাঙ্গণ মুসল্লিদের দ্বারা পূর্ণ হয়ে যায়। শহরের কিছু বিখ্যাত স্থাপত্য যেমন আইয়ুপ সুলতান মসজিদ, সুলাইমানিয়া মসজিদ এবং ব্লু মসজিদে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়। অনেকেই শহরের সরবরাহকৃত গণইফতারে যোগদান করে। এই ইফতার আয়োজনগুলো থাকে সম্পূর্ণ উন্মুক্ত। আপনি শুধু একটি আসন খুঁজে নিন এবং চালের সাথে ছোলা, মাংসের একটি অংশ, আয়রান (বেশিরভাগ খাবারের সাথে পরিবেশিত সতেজ দই পানীয়) এবং রমজান পিদে (পুরো মাস জুড়ে তৈরি একটি বিশেষ রুটি) এর মতো একটি সাধারণ তুর্কি খাবার উপভোগ করুন। প্রায় প্রতিটি আবাসিক এলাকা ও আশেপাশে গণইফতারের ব্যবস্থা থাকে। যাতে স্থানীয়রা ইফতার সরবরাহ করে। গণইফতার তুর্কি আতিথেয়তা এবং উদারতা দারুণ প্রমাণ।

এশা নামাজের সময় ঘনিয়ে আসতেই মসজিদে মুসল্লিদের ভিড় বাড়তে থাকে। মানুষ দলবদ্ধভাবে তারাবির নামাজের জামাতে অংশগ্রহণ করে। ঐতিহাসিক মসজিদে নামাজ আদায়ের বিশেষ আগ্রহও দেখা যায়। উসমানীয় ঐতিহ্য অনুসারে প্রায় সব মসজিদেই আলোকসজ্জা করা হয়। এই আলোকসজ্জা রমজান মাসের গুরুত্ব ও তাত্পর্য স্পষ্ট করে। তারাবির নামাজ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মসজিদের পরিবেশে আধ্যাত্মিক আবহ সৃষ্টি হয়। তবে ইস্তাম্বুলের সব মসজিদে খতম তারাবি হয় না। রমজান মাসের শুরুতে সরকার যেসব মসজিদে খতম তারাবি হবে সে তালিকা প্রকাশ করে। অন্য মসজিদগুলোয় দ্রুত তারাবির নামাজ শেষ হয়ে যায়।

তারাবিহ শেষ হওয়ার পরে, দোকান, রেস্তোরা ও ক্যাফেগুলো খাবার ও মিষ্টি সরবরাহ করে। প্রায় সারা রাত ইস্তাম্বুলের হোটেল ও ক্যাফেগুলো খোলা থাকে। ইস্তাম্বুলের কোনো এলাকায় একদল লোক ঢোল পিটিয়ে মানুষকে সাহরির জন্য ডেকে দেয়। তারা সুরে সুলে ঢোল পিটিয়ে মানুষ জাগিয়ে দেয়। এটা মূলত একটি উসমানীয় রীতি। ইস্তাম্বুলের একটি অনন্য রমজান ঐতিহ্য মহানবী (সা.)-এর স্মৃতি ও ভালোবাসার সঙ্গে জড়িত। এই শহরে পুরো মাসজুড়ে নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর পবিত্র চুল প্রদর্শিত করা হয়, যা জনসাধারণের জন্য প্রিয়নবী (সা.)-এর ভালোবাসা ও বরকত লাভের একটি বিরল সুযোগ। ঐতিহাসিক এই নিদর্শনটি খ্রিস্টীয় ১৬ শতকে বাগদাদ থেকে ইস্তাম্বুলে স্থানান্তরিত হয়। প্রথমে এটি সুলতানদের উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত ধনভাণ্ডারের অংশ ছিল। পরবর্তীতে তা জাদুঘরে স্থানান্তরিত হয়। অধিক সংখ্যক লোককে পবিত্র চুল স্পর্শ করার সুযোগ দেওয়ার জন্য নিদর্শনগুলো এক মসজিদ থেকে অন্য মসজিদে স্থানান্তরিত হয়।

নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর সাথে যুক্ত আরেকটি ঐতিহ্য হলো তাঁর খিরকা বা আলখাল্লা দেখা। বিখ্যাত মুসলিম মনীষী উয়াইস আল কারনির (রহ.) বংশধররা যখন জনসাধারণের জন্য এই ধন উন্মুক্ত করেন, তখন থেকে এটি মাসজুড়ে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়। তুরস্ক এখনো একটি ধর্মনিরপেক্ষ প্রজাতন্ত্র। তাই দিনের বেলায় রেস্তোরা ও ক্যাফে খোলা থাকে। বিশেষ করে ইস্তাম্বুলে আগত অমুসলিম পর্যটকদের বিবেচনা করেই তা করা হয়। তবে যারা রমজানে ইস্তাম্বুলের প্রকৃত ও অন্তর আত্মাকে দেখতে চায় তাদের জন্য উত্তম হলো রাতের ইস্তাম্বুলকে প্রত্যক্ষ করা।

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ