সর্বশেষ
রাজধানীতে হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশ আগামীকাল
মাহিয়া মাহির ৩০ সেকেন্ডের ভিডিও ভাইরাল
সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামানকে জড়িয়ে ৬ ভুল তথ্য
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির শপথ গ্রহণ
আ.লীগের বিচার ও সংস্কারের আগে কোনো নির্বাচন হবে না
আ. লীগের নিবন্ধন বাতিল করে সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে: নাহিদ
পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে খাদ্য মজুতের নির্দেশ
মোহাম্মদপুরে পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার ৮
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ নিয়ে কাজ করা নারীদের স্বীকৃতি দিতে হবে: উপদেষ্টা
রাখাইনে শতশত বস্তা ইউরিয়া সার পাচার করছিল চক্রটি
এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পেতে বিলম্ব হলে বাংলাদেশ বিমানেই ফিরবেন বেগম খালেদা জিয়া
স্বামীকে রেখে দেবরের সঙ্গে পালালেন স্ত্রী, অতঃপর…
বৃষ্টির মধ্যেই তাপমাত্রা নিয়ে দুঃসংবাদ
সরকারি ব্যাংকে ষষ্ঠ-নবম-দশম গ্রেডে বিশাল নিয়োগ, পদ ৬০৮
এশিয়া আসছে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা, জেনে নিন কখন কার সঙ্গে খেলা

উপকূলে সুপেয় পানি পেতে গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত

অনলাইন ডেস্ক

বিশ্ব পানি দিবস ২০২৫ উপলক্ষে ২৩ মার্চ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলে সুপেয় পানির প্রাপ্যতা ও প্রবেশাধিকার নিশ্চিতকরণ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই আয়োজনটি হেলভেটাস সুইস ইন্টারকোঅপারেশন বাংলাদেশ, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাটি, পানি ও পরিবেশ বিভাগ এবং ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন অব

‌দ্য রুরাল পূওর (ডর্‌প)-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত হয়।

জাতিসংঘ ১৯৯৩ সালে প্রথম বিশ্ব পানি দিবস চালু করে, যা বিশ্বব্যাপী সুপেয় পানির গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি ও টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা প্রচারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে। বর্তমানে বিশ্বে ২.২ বিলিয়ন মানুষ নিরাপদ পানির সুযোগ থেকে বঞ্চিত। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচির মাধ্যমে এই দিনটি উদযাপন করা হয়। এবছরের থিম হিমবাহ সংরক্ষণ, যা প্রাকৃতিক সুপেয় পানির উৎস সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করছে।

বিশ্ব পানি অর্থনীতির গ্লোবাল কমিশনের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ২৫ বছরের মধ্যে পানির সংকটের কারণে বৈশ্বিক খাদ্য উৎপাদন গুরুতর ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটে নিরাপদ পানির সংকট ক্রমশ তীব্র হচ্ছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, জোয়ারের প্লাবন, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, নদীর প্রবাহ হ্রাস, জলবায়ু বিপর্যয়, অপরিকল্পিত নগরায়ন এবং অতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের কারণে এই সংকট আরও তীব্র হয়েছে।

গোলটেবিল বৈঠকটি সরকারি সংস্থা, একাডেমিক প্রতিষ্ঠান, সিভিল সোসাইটি, উন্নয়ন সহযোগী ও স্থানীয় কমিউনিটির প্রতিনিধিদের একত্রিত করে এই সংকট মোকাবিলায় টেকসই সমাধান নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ সৃষ্টি করে।

অনুষ্ঠানের মূল সমন্বয়কারী ছিলেন মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান, ডোমেইন কো-অর্ডিনেটর- পানি, খাদ্য ও জলবায়ু, হেলভেটাস বাংলাদেশ।

প্রধান প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রফেসর মো. সানাউল ইসলাম, প্রধান, মাটি, পানি ও পরিবেশ বিভাগ, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। তিনি তার উপস্থাপনায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, ভূগর্ভস্থ পানির লবণাক্ততা বৃদ্ধি, নদীর প্রবাহ হ্রাস, অতিরিক্ত পানি উত্তোলন, নগরায়ন এবং কৃষি ও শিল্প দূষণের মতো বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন। বিশেষ করে, পানি সংকটের কারণে নারীদের ওপর যে বাড়তি চাপ তৈরি হচ্ছে, সে বিষয়টিও তিনি উল্লেখ করেন।

প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন

  • মো. জামানুর রহমান, সুপারিনটেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার (খুলনা সার্কেল), ডিপিএইচই
  • অধ্যাপক ড. মো. মুজিবর রহমান, প্রধান, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
  • মো. আসরাফুল আলম, নির্বাহী প্রকৌশলী, খুলনা ওএম ডিভিশন-২, বিডাব্লুডিবি
  • ফারুক আহমেদ, প্রোগ্রাম ডিরেক্টর, রূপান্তর

আলোচনায় বিশেষজ্ঞরা সুপেয় পানির সংরক্ষণ, জলবায়ু সহনশীল পানির প্রযুক্তি, স্থানীয় পর্যায়ে পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা, এবং বহুপাক্ষিক সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরেন। কমিউনিটি প্রতিনিধি, এনজিও, সরকারি দপ্তর, ইউএনডিপি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সুপেয় পানি নিশ্চিত করতে নীতিগত হস্তক্ষেপ ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বান জানান।

গোলটেবিল বৈঠক শেষে অংশগ্রহণকারীরা গবেষণা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি, একটি সমন্বিত বাস্তবায়ন পরিকল্পনা, পানিসম্পদ সংরক্ষণে জ্ঞানভিত্তিক উদ্যোগ, এবং পানি সুশাসন নিশ্চিতকরণ-এর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়া, জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে একাধিক পক্ষের মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করা এবং পানি ন্যায়বিচার ও জলবায়ু অভিযোজনকে উন্নয়ন পরিকল্পনার মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর আলোকপাত করা হয়।

এই আলোচনা বিশ্ব পানি দিবসকে শুধুমাত্র প্রতীকী দিবস হিসেবে নয়, বরং বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য একটি সম্মিলিত আহ্বান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এটি আবারও স্মরণ করিয়ে দিয়েছে যে, পানি একটি মূল্যবান ও জীবনধারণের জন্য অপরিহার্য সম্পদ, যা বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণ করা জরুরি।

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ