গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শোভাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন নূরীর প্রতারণার ফাঁদে পড়েছেন অন্যান্য শিক্ষকরা। এ ঘটনায় শিক্ষকদের মাঝে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
জানা যায়, গত ৬ এপ্রিল (রবিবার) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক আব্দুল হাই সিদ্দিক সরকার’র স্বাক্ষরিত পত্রাদেশে বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন নূরীর ব্যাপক জালিয়াতি, অনিয়ম-দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ বিষয়ে সার্বিক তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) অধ্যাপক ড. মোহাঃ হাছানাত আলীকে মনোনয়ন দেয়া হয়। এরআগে গত ১৮ মার্চ অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন নূরীকে সাময়িক বরখাস্ত করে উপাধ্যক্ষ নূর-আলম মিঞাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিযুক্ত করেন পরিচালনা পর্ষদ (গভর্নিং বর্ডি)। এরপর ২৫ মার্চ এডহক কমিটির সভাপতি নওশের আলীকে সভাপতি পদে আবারো ৩ মাসের মেয়াদ বর্ধিত করে কমিটিতে বিদ্যোৎসাহি সদস্য ওমর ফারুকের পরিবর্তে তদস্থলে এসএম আব্রাহাম লিংকনকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
তা জানতে পেয়ে ৬ এপ্রিল (রবিবার) ঈদ পরবর্তী কুশল বিনিময়ের কথা বলে কিছু শিক্ষককে ডেকে নিয়ে কলেজের শিক্ষক মিলনায়তনে বসার পর অসংগতিপূর্ণ ভাষায় একটি প্যানা টানিয়ে ‘শোভাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজে শিক্ষক লাঞ্চনার প্রতিবাদে- প্রতিবাদ সভা ও শিক্ষক সমাবেশ’ বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা চালান হয়। এসময় অধ্যক্ষ নূরীর প্রতি কতিপয় শিক্ষক তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানান। এনিয়ে একাধিক শিক্ষক জানান, ঈদ পরবর্তী কুশল বিনিময়ের কথা বলে তাদেরকে কলেজের শিক্ষক মিলনায়তনে ডেকে নেয়া হয়। সে বিষয়ে আলোচনা শুরু না হতেই হঠাৎ করে একটি প্যানা টানিয়ে ছবি তোলার জন্য ব্যস্ত হন অধ্যক্ষ। তাৎক্ষণিক এর প্রতিবাদ করা হলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়াছড়ি করে উপস্থিত শিক্ষকদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে বলে তারা এর তীব্র নিন্দা জানান।
উল্লেখ্য, জন্মের পর থেকে মাত্র সাড়ে ১০ বছরে দাখিল পাশ, একটি মাদ্রাসায় প্রভাষক পদে চাকরিকালে নিয়মিত হিসেবে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে শিক্ষা সনদ অর্জন, ভূমিদস্যুতা, নানাভাবে কলেজের সম্পদহানি, শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের নামে অর্থ হাতিয়ে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যাওয়া সাময়িক বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ নূরীর বিরুদ্ধে কলেজ সীমানার উত্তর পাশের জমির মালিক মরহুম ইব্রাহিম আলীর পরিবারের পক্ষ থেকে ব্যাপক অভিযোগে রয়েছে। নূরী ভূমিদস্যুতা করে অসহায় পরিবারে মিথ্যা মামলা ও হামলার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট নূরীর ভূমিদস্যুতা বিষয়ে সু-দৃষ্টি কামনা করেন। এব্যাপারে কলেজের গভর্নিং বর্ডির সভাপতি নওশের আলী বলেন, বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন নূরী কীভাবে শিক্ষকদের ডাকতে পারেন সেটা প্রশ্নবিদ্ধ।
এব্যাপারে মোবাইলফোনে কথা হলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক আব্দুল হাই সিদ্দিক সরকার’র জানান, বরখাস্তসহ দুর্নীতি বিষয়ে তদন্তের প্রক্রিয়া চলমান। তদন্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।