যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনিক ভুলে কারাগারে থাকা নির্বাসিত বন্দিকে ফেরত পাঠাবে না এল সালভাদর। সোমবার এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট নায়িব বুকেলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করার পর একথা জানান।
বুকেলেকে ওভাল অফিসে স্বাগত জানান ট্রাম্প। এর পর অ্যাব্রেগো গার্সিয়াকে এল সালভাদরের কারাগার থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত পাঠানো নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বুকেলে জানান, ‘নিশ্চয়ই আমি ফেরত পাঠাবো না। খুবই অযৌক্তিক প্রশ্ন। যুক্তরাষ্ট্রে ফেরানোর কোনো অধিকার আমার নেই।’
সম্প্রতি কিলমার অ্যাব্রেগো গার্সিয়াকে প্রশাসনিক ভুলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এল সালভাদরের একটি সন্ত্রাস-দমন কারাগারে পাঠানো হয়। এর বিরুদ্ধে তার বাবা একটি মামলা করেন। সম্প্রতি মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট জানায়, যুক্তরাষ্ট্রকে শীঘ্রই তাকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে হবে। তবে সেই রায় উপেক্ষা করে বুকেলে জানিয়ে দিলেন, বন্দিকে ফেরাত পাঠাচ্ছে না তারা।
বুকেলে-ট্রাম্প বৈঠক
এল সালভাদরের রাষ্ট্রপ্রধানকে নিয়ে দৃশ্যত খুশি ট্রাম্প। এমন কী, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরো নির্বাসনের সম্ভবনাকে সামনে রেখে ট্রাম্প বুকেলেকে আরো কারাগার বানাতে বলেন। দুজনের মধ্যে একটি চুক্তি সাক্ষরিত হয়, যার ফলে যুক্তরাষ্ট্র ছয় কোটি মার্কিন ডলারের বিনিময়ে কয়েদিদের এল সালভাদরের কারাগারে পাঠাতে পারবে।
এখানেই শেষ নয়। ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদেরকেও এল সালভাদরে পাঠানোর কথা বলেন। সেই দুষ্কৃতিদের চিহ্নিত করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘এরা তারা, যারা সাবওয়েতে মানুষদের ধাক্কা মারেন, বৃদ্ধাদের মাথায় বেস বল ব্যাট দিয়ে আঘাত করেন।’
নিজেদের মধ্যে রসিকতায় ট্রাম্প এবং বুকেলে দুজনেই নিজেদেরকে ‘একনায়ক’ বলে চিহ্নিত করেন। এদিকে মাদকচক্র নির্মুল করার ক্ষেত্রে বুকেলের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে।
অবশ্য ট্রাম্পের সঙ্গে সখ্যতা থাকলেও, চলতি মাসের শুরুতে এল সালভাদরের ওপর ১০ শতাংশ শুল্কারোপ করেন ট্রাম্প।
নির্বাসনের নীতি নিয়ে হোয়াইট হাউস-আদালত দ্বৈরথ
অ্যাব্রেগো গার্সিয়াকে একটি দুষ্কৃতি গোষ্ঠির সদস্য বলে চিহ্নিত করে ট্রাম্প প্রশাসন। তাকে চ্যালেঞ্জ করেন অ্যাব্রেগো গার্সিয়ার আইনজীবী।
আরো ২০০ জনের সঙ্গে অ্যাব্রেগো গার্সিয়াকেও এল সালভাদরের একটি কারাগারে পাঠানো হয়।
৪ এপ্রিল অ্যামেরিকার একটি নিম্ন আদালত ট্রাম্প সরকারকে ৭ এপ্রিলের মধ্যে গার্সিয়াকে দেশে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেয়। সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ হলে সেই রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দেয় কোর্ট। ১০ এপ্রিল নিম্ন আদালতের রায়কেই স্বীকৃতি দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট অ্যাব্রেগো গার্সিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রে সসম্মানে ফেরত আনার ব্যবস্থা করতে ট্রাম্প প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়।