গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায় বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের প্রথমে জাতীয় সংগীত বাজানো নিয়ে ব্যাপক হট্টগোল হয়। পরে আবারও দ্বিতীয়বার বাজানো হয় জাতীয় সংগীত। এছাড়া বর্ষবরণ অনুষ্ঠান সংকোচিত করার অভিযোগও উঠেছে। সোমবার ওই অনুষ্ঠানের প্রত্যক্ষদর্শী ও অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা জানায়, সাদুল্লাপুর উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত বাংলা নব বর্ষবরণ উদযাপন অনুষ্ঠানে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক-কর্মচারী ও সামাজিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সদস্য এবং উপজেলা প্রশাসনের কর্মকতা-কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করে।
এ অনুষ্ঠানের শুরুতেই সাদুল্লাপুর বহুমূখী পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রথমেই বাজানো হয় জাতীয় সংগীত ও এসো হে বৈশাখ গানটি। কিন্তু স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও সামাজিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের মাঠের একপাশে দাঁড়িয়ে রেখে অন্য পাশে শুধুমাত্র উপজেলা প্রশাসনের কর্মকতা-কর্মচারীদের নিয়ে এই জাতীয় সংগীত বাজানো হয়। এ কারণে স্কুল-কলেজের শিক্ষক ও সামাজিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ প্রতিবাদ জানান।
এরই একপর্যায়ে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ অনুষ্ঠানের সঞ্চালক উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মানিক চন্দ্র রায়ের কাছ থেকে মাইক্রোফোন কেড়ে নিয়ে এ অনুষ্ঠান বয়কটের ডাক দেন। এতে শুরু হয় হট্টগোল। পরে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে।
সাদুল্লাপুর বহুমূখী পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এনশাদ আলী সরকার বলেন, সমাবেশ স্থলে অংশগ্রহণকারী সকলকে সাথে নিয়ে জাতীয় সংগীত বাজানোর নিয়ম। কিন্তু মাঠের পশ্চিম পাশে দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীসহ অন্যরা যখন নিজেদের মধ্যে কথা বলছেন, এসময় মাঠের পূর্ব পাশে উপজেলা প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীত বাজানো হয়।
উপজেলা বিএনপি নেতা আ স ম সাজ্জাদ হোসেন পল্টন জানান, আমাদের সকলকে অবজ্ঞা করে জাতীয় সংগীত বাজানো হয়। এতে অনুষ্ঠানের শৃঙ্খলা নষ্ট হয়েছে। সরকারি কলেজের সহকারি অধ্যাপক মাহমদুল হক জানান, অধিকাংশ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অজান্তে অপরপাশে জাতীয় সংগীত বাজানো হয়। এতে অনুষ্ঠানটির সার্বজনীয়তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। এজন্য সকলে প্রতিবাদ করেছে। পরে সমাবেশস্থলে উপস্থিত সবার অংশগ্রহণে দ্বিতীবার জাতীয় সংগীত বাজানো হয়।
সাদুল্লাপুর গার্লস কলেজ সহকারী অধ্যাপক ও সাংবাদিক একেএম নেয়ামুল হাসান পামেল জানান, উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত বাংলা নব বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে আলোচনা সভা রাখা হয়নি। এতে দিবসটির তাৎপর্য সম্পর্কে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী ও নবীনরা অবগত থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এছাড়া বরাদ্দকৃত অর্থের স্বল্পতা দোহাই দিয়ে ২০০-২৫০ আসনের উপজেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে নামমাত্র একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানটি উপভোগ করা থেকে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হয়েছে।
এবিষয়ে সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ অনিক ইসলামর অফিসিয়াল মোবাইল নম্বরের কল দেওয়া হলে তিনি বলেন, যখন সমাবেশ স্থলে জাতীয় সংগীত বাজানো হয় তখন, অপরপাশের অংশগ্রহণকারীরা এসে পূণরায় জাতীয় সংগীত ও এসো হে বৈশাখ গানটি বাজানোর আপত্তি করেন। বাধ্য হয়ে দ্বিতীয়বার এ সংগীত বাজানো হয়।