বিএনপিকে পাশ কাটাতেই সরকার নির্বাচন বিলম্ব করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক যুব সমাবেশে তিনি এই অভিযোগ করেন।
আওয়ামী ষড়যন্ত্রকারীদের রক্ষা করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারের কার্যক্রমে দেশবাসী উদ্বিগ্ন। হাসিনার মতো অন্য কোনো ফ্যাসিবাদের উদ্ভব হলে তাদের তাড়ানোও ওয়ান-টু’র ব্যাপার বলেও হুঁশিয়ারি করেন দুদু।
দুদু বলেন, এই সরকারের কাজ-কামে দেশবাসী খুবই উদ্বিগ্ন। তারা (সরকার) কী চায়… সেটাও আমরা বুঝি না। বিএনপিকে পাশ কাটানোর জন্য, বিএনপি যাতে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে, মানুষের সমর্থন আদায়ের মধ্য দিয়ে, ভোটের মধ্য দিয়ে সরকার গঠন করতে না পারে সেজন্য নির্বাচনকে এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে।
সরকারের উদ্দেশ্যে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, কী করবেন, কী করবেন না…এটা বড় কথা না। একটি নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য অনতিবিলম্বে একটা রোড ম্যাপ ঘোষণা করেন। কবে নির্বাচন হবে, কোন মাসে হবে, কোন সালে হবে বলুন। আপনারা একবার ডিসেম্বরে, একবার জুন মাসে… এসব বাদ দেন। এগুলোর জন্য আমরা তৈরি না।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পরিষদের উদ্যোগে বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমসহ গুম হওয়া নেতাকর্মীদের অবিলম্বে সন্ধানের দাবিতে এই যুব সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে গুমের বিচার অবিলম্বে দৃশ্যমান চেয়ে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমসহ গুম হওয়া… কত মর্মান্তিক… ওদের রুহের মাগফেরাত কামনা করতে পারছি না, যেহেতু আমরা জানি না ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলম মারা গেছেন, না এখনো জীবিত আছেন। তাদের পরিবার আল্লাহর কাছে কী প্রার্থনা করবে, তার উত্তরাধিকাররা কী দাবি করবে?
শামসুজ্জামান দুদু আরও বলেন, আমি এই অচলাবস্থা যারা সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশের মানুষ জানে শেখ হাসিনা তাকে( ইলিয়াস আলীকে) শুধু গুম করে নাই, তাকে অপহরণ করে নাই, তাকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছে। আমি এই সভায় দাবি জানাচ্ছি যে, ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমসহ হাজার হাজার যেসব জাতীয় নেতৃবৃন্দ, ছাত্র নেতৃবৃন্দ, যুব নেতৃবৃন্দ যাদের আমরা এখনো সন্ধান পাই নাই, এই অপরাধের জন্য হাসিনার আমি ফাঁসি দাবি করছি। গুম-খুনের বিচারের উদ্যোগ নিন।
যুব সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, এই সরকার রুটিন কাজ ছাড়া তারা কিছুই করতে পারবে না। বর্তমান প্রশাসনের ওপর দুইটা জিনিস ভর করেছে খুব বেশি করে… একটা হচ্ছে, ঠিক অফিস টাইমের মধ্যে অফিসটা করে কোনো রকমের বাড়ি চলে যাওয়া। আরেকটা হচ্ছে, কোনো ফাইল যদি সামনে আসে সেই ফাইলটাকে বিলম্ব করে করে কোনো রকম নিজে এখান থেকে সরে গিয়ে আরেক জনের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া.. এই কারণে সব কাজ স্থবির হয়ে গেছে।
সংগঠনের আহ্বায়ক কামাল আহমেদের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব দেলোয়ার হোসেন খোকনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, আবদুল কালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য আরিফা সুলতানা রুমা প্রমুখ বক্তব্য দেন।