এক সময় মনে করা হত ডায়াবেটিস বয়স্কদের রোগ। কিন্তু বর্তমানে ৩০ পেরতে না পেরতেই ভোগাচ্ছে ব্লাড সুগার। নেপথ্যে অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, শরীরচর্চার অভাব, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা সহ একাধিক কারণ। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন (আইডিএফ) কমবয়সিদের মধ্যে এক নতুন ধরনের ডায়াবেটিসের সন্ধান পেয়েছে। নাম ‘টাইপ ৫ ডায়াবেটিস’। কিন্তু কী এই অসুখ? টাইপ ১ ও ২-এর সঙ্গে পার্থক্যই বা কী? জেনে নিন বিশদে-
সাধারণত এতদিন দুই ধরনের ডায়াবেটিস প্রচলিত ছিল। টাইপ ১ এবং টাইপ ২। টাইপ ১ ছোট বয়সে হয়। এই রোগে আক্রান্তের শরীরে ইনসুলিন তৈরি হয় না। অপরদিকে, টাইপ ২ বড় বয়সে হতে পারে। এই রোগে ভুক্তভোগীদের শরীরে ইনসুলিন ঠিকঠাক কাজ করে না। যাকে চিকিৎসা পরিভাষায় বলে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স। আর বর্তমানে যাকে টাইপ ৫ ডায়াবেটিস বলা হচ্ছে সেটিতে শরীরে ইনসুলিন কম পরিমাণে বেরোয়। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ে।
কাদের হতে পারে
নয়ডার বিশিষ্ট ডা: অজয় আগরওয়ালের মতে, সাধারণত শৈশবে অপুষ্টি ও ওজন কম থাকলেই এই রোগের ফাঁদে পড়ার আশঙ্কা বাড়ে। ইদানীং আফ্রিকা ও এশিয়ার মতো দেশে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। যাদের বেসিক মেটাবলিক ইনডেক্স (বিএমআই) ১৮.৫ কেজি/বর্গমিটারের কম, তাদের টাইপ ৫ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। অপুষ্টিজনিত এই ডায়াবেটিস যক্ষ্মার চেয়ে বেশি হয় এবং এইচআইভি/এইডসের মতোই প্রায় সাধারণ। কিন্তু সেভাবে এতদিন কোনও নাম না থাকার কারণে রোগ নির্ণয় বা কার্যকর চিকিৎসায় বাধা ছিল।
কোন লক্ষণ দেখলে সতর্ক হবেন
চিকিৎসকের মতে, টাইপ ৫ ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলি অন্যান্য ডায়াবেটিসের মতোই। মূল উপসর্গ হল ক্লান্তি, ওজন কমে যাওয়া এবং ঘন ঘন সংক্রমণ। এই ধরনের লক্ষণ দেখলে অনেক সময়েই অন্য ধরণের ডায়াবেটিস বলে ভুল হয়।
চিকিৎসা
সাধারণত টাইপ ২ ডায়াবিটিসের মূল ওষুধ হল মেটফরমিন। এই ওষুধটি শরীরে ইনসুলিন হরমোনের কার্যকারিতা বাড়াতে পারে। তবে টাইপ ৫ ডায়াবিটিসে এই ওষুধ তেমন কাজ করে না। তার বদলে এমন ওষুধ দিতে হয়, যা অগ্ন্যাশয়কে উদ্দীপ্ত করতে পারে। ফলে বেশি পরিমাণে ইনসুলিন তৈরি হয়।
কীভাবে প্রতিরোধ করবেন
যদিও এই ডায়াবেটিস প্রতিরোধে নির্দিষ্ট কোনও গাইডলাইন নেই। তবে ডায়েটের দিকে নজর দেওয়া জরুরি। পুষ্টিতে প্রোটিনের পরিমাণ অনেক বেশি এবং কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কম থাকা উচিত। একইসঙ্গে মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টের ঘাটতি থাকলে সেদিকেও নজর দিতে হবে। এছাড়া নিয়মিত ঘাম ঝরিয়ে শরীরচর্চা করাও জরুরি।
সূত্র-আজকাল ইন