আপনি ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা, মেদ ঝরানো ও রোগা হওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন। একরকম খাওয়াদাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। জিমে গিয়ে ঘাম ঝরাচ্ছেন, তবু মুক্তি মিলছে না। আপনি এসবের ওপর ভর না করে একবার মিষ্টি আলুর ওপর ভরসা রাখতে পারেন। এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যেমন রয়েছে, তেমনই এটিতে ক্যালোরির পরিমাণও খুবই কম রয়েছে।
আর আপনি মিষ্টি আলু খেয়ে অনেকক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখতে পারেন। ফলে অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকতে পারবেন। যার ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। ধনেপাতা, জিরা ও গোলমরিচের মতো কিছু ভেষজ এবং মসলায় মিশিয়ে মিষ্টি আলু খেতে পারেন। এটি স্বাস্থ্যকর ও সুস্বাদু খাবার।
আর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি থেকে শুরু করে হজমক্রিয়া উন্নত করা— সবেই উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে এই মিষ্টি আলুতে। শুধু নামে ‘আলু’ থাকলেও সাধারণ আলুর সঙ্গে তেমন কোনো মিল নেই পুষ্টিগুণের নিরিখে।
চিকিৎসক থেকে পুষ্টিবিদ— সবাই পছন্দের খাতায় নাম লিখিয়েছে মিষ্টি আলু। যদিও নাম শুনলে অনেকেই নাক সিঁটকান। কিন্তু রকমারি মসলাপাতি সহযোগে রান্না করলে সুস্বাদু পদ হিসেবে খেতে পারবেন মিষ্টি আলু।
আর মিষ্টি আলুর উপকারিতা শুনলে বাজারের ফর্দে নতুন সংযোজন হতে বাধ্য। বিশদ জানাচ্ছেন আইসল্যান্ডের পুষ্টিবিদ আদ্দা ব্যারনাদোত্তির। প্রথমেই পুষ্টিবিদ ব্যাখ্যা করলেন মিষ্টি আলুর পুষ্টিগুণ। ১০০ গ্রাম কাঁচা মিষ্টি আলুর মধ্যে যা যা থাকে? জেনে নিন কী পরিমাণে পুষ্টিগুণ থাকে—
ক্যালোরি ৮৬, পানি ৭৭ শতাংশ, প্রোটিন ১.৬ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ২০.১ গ্রাম, চিনি ৪.২ গ্রাম, ফাইবার ৩ গ্রাম এবং চর্বি (ফ্যাট) ০.১ গ্রাম।
আর এই মিষ্টি আলুর উপকারিতা সম্পর্কে পুষ্টিবিদ আদ্দা ব্যারনাদোত্তি আরও বলেছেন, চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে মিষ্টি আলু। এতে ভিটামিন ‘এ’ রয়েছে। এই পুষ্টি উপাদান চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে খুবই কার্যকর। এ ছাড়া রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এ সবজি খেলে।
ভিটামিন ‘এ’ ছাড়াও ভিটামিন ‘সি’র উপস্থিতি কোলাজেন উৎপাদন ও ত্বকের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। বিটা-ক্যারোটিন এমন এক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যেটিকে শরীর ভিটামিন ‘এ’তে পরিণত করে। মিষ্টি আলুতে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় এ উপাদানটি। এটি দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে।
তিনি বলেন, মিষ্টি আলু রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি শরীরের মধ্যে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্টগুলো কোষের যে কোনো ক্ষতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে পারে। ঋতু পরিবর্তনের সময় যখন শরীরে ঘন ঘন রোগ বাসা বাঁধে, তখন মিষ্টি আলুই মুশকিল আসান করে।
এ ছাড়া হজম প্রক্রিয়ার উন্নতি করে মিষ্টি আলু। তাই ঘন ঘন অ্যান্টাসিড না খেয়ে মিষ্টি আলুতে ভরসা রাখুন। হজমের সমস্যা মোকাবিলা করার প্রাকৃতিক উপায় হচ্ছে এ সবজি। মিষ্টি আলু ডায়েটারি ফাইবারের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। ডায়েটারি ফাইবার হজমের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে।