ত্বক পরিষ্কার করতে সাধারণত সাবান বা ক্লিনজার ব্যবহার করা হয়। বাজারে বহু রং ও ধরনের বাহারি ঘ্রাণের সাবান বা ক্লিনজার পাওয়া যায়। তবে সাবান ও ক্লিনজারে ব্যবহৃত রাসায়নিক উপাদানগুলো এড়াতে চাইলে আপনি বাড়িতে প্রাকৃতিক উপাদান থেকে পরিষ্কারক তৈরি করে নিতে পারেন। বাইরে থেকে ফিরে অনায়াসেই ত্বক পরিষ্কার করার জন্য এসব পরিষ্কারক ব্যবহার করতে পারবেন। তাতে ধুলা-ময়লার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ত্বক থাকবে সুরক্ষিত। এগুলো অবশ্য সাবানের বার, তরল সাবান বা ক্লিনজারের মতো দেখতে হবে না। তবে ত্বক ঠিকই পরিষ্কার করবে। এ বাবদে খরচও কমানো যাবে।
বাড়িতে প্রাকৃতিক পরিষ্কারক তৈরি করা খুব একটা কঠিন কাজ না। সব ধরনের ত্বকে ব্যবহার করা যাবে—এমন কিছু পরিষ্কারক তৈরির উপায় জানালেন হারমনি স্পার আয়ুর্বেদিক রূপবিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা।
দুধ, মধু, নারকেলের তেল
সমপরিমাণ দুধ, মধু ও নারকেলের তেল নিন। ভালোভাবে মিশিয়ে নিলেই ক্রিমের মতো পরিষ্কারক তৈরি হয়ে যাবে। এই ক্রিম একটি মুখবন্ধ কাচের বয়ামে ভরে ফ্রিজে রেখে দিন। সপ্তাহখানেক ভালো থাকবে। মুখ ধোয়ার আগে ফ্রিজ থেকে বের করে নিলেই হলো। প্রয়োজন অনুযায়ী এই ক্রিম বের করে হাতে নিয়ে মালিশ করে করে ত্বক পরিষ্কার করে ফেলুন। এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। তবে আপনার ত্বক যদি খুব বেশি তৈলাক্ত প্রকৃতির হয়ে থাকে, তাহলে ক্রিম তৈরির সময় তেলটা বাদ দিয়ে দিন।
লেবু, গ্লিসারিন, গোলাপজল
লেবুর রস, গ্লিসারিন আর গোলাপজল দিয়েও পরিষ্কারক তৈরি করা যায়। এ ক্ষেত্রেও প্রতিটি উপকরণই নিতে হবে সমান পরিমাণে। এটিও দারুণ পরিষ্কারক। এই মিশ্রণও মুখবন্ধ কাচের বয়ামে করে ফ্রিজে রেখে দিতে পারবেন সপ্তাহখানেকের জন্য। তবে ত্বক সংবেদনশীল হলে পরিষ্কারকটি তৈরির সময় লেবুর রসের পরিমাণ কমিয়ে নেবেন।
শসার রস
শসার রস কিউব আকারে ডিপ ফ্রিজে জমিয়ে রাখতে পারেন। প্রয়োজনের সময় একটি কিউব বের করে ত্বকে মালিশ করলেই ত্বক পরিষ্কার হয়ে যাবে। একবার কিউব করে নিলে দীর্ঘদিন ডিপ ফ্রিজে ভালো থাকে শসার রস।
রিঠা ও গ্লিসারিন
শ্যাম্পুর বিকল্প হিসেবে রিঠা ভেজানো পানি জনপ্রিয়। ত্বক পরিষ্কারের কাজেও এই পানি কাজে লাগানো যায়, কেবল তাতে যোগ করতে হবে গ্লিসারিন। সারা রাত রিঠা ভিজিয়ে রাখার পর ছেঁকে নিলে যে পানি পাওয়া যায়, তা শ্যাম্পুর মতো করে ব্যবহার করা যায় মাথার ত্বক ও চুলে। এই পদ্ধতি হয়তো অনেকেরই জানা। ছেঁকে নেওয়া সেই পানির সঙ্গে সমপরিমাণ গ্লিসারিন যোগ করলে তা দিয়ে ত্বকও পরিষ্কার করতে পারবেন।
সয়াবিনের গুঁড়া
সয়াবিনের গুঁড়া দিয়ে পরিষ্কারক তৈরি করা খুবই সহজ। সয়াবিনের গুঁড়ার সঙ্গে পরিমাণমতো পানি মিশিয়ে নিলেই হলো। অনেক উপকরণ একসঙ্গে মেশানোর ঝক্কিটুকুও নেই। ফ্রিজে রাখা বা বের করার ঝামেলাও নেই।
খেয়াল রাখুন
সারা দিনে বিভিন্ন সময়ে পানি দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করা নিঃসন্দেহেই ভালো অভ্যাস। তবে একেবারে নিয়ম করে তিন-চার ঘণ্টা অন্তর ত্বক পরিষ্কার করতেই হবে; এমন কিন্তু না। আর বারবার সাবান বা ক্লিনজার প্রয়োগ করবেন না। এমনকি তা প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি পরিষ্কারক হলেও অতিরিক্ত ব্যবহার করবেন না। ২৪ ঘণ্টায় দুবার ত্বক পরিষ্কার করাই যথেষ্ট। বাইরে থেকে ফিরে ভালোভাবে ত্বক পরিষ্কার করাটা বেশি জরুরি।