মাধবদীতে দাফনের প্রায় ৬ মাস পর সাবেক পৌর কমিশনার মোবারক হোসেনের মরদেহ উত্তোলন করেছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। মঙ্গলবার দুপুরে মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনের জন্য আদালতের নির্দেশে মরদেহ তোলা হয়।
মোবারক হোসেন পৌর এলাকার গাংপাড় এলাকার মৃত তালেব হোসেনের মেজো ছেলে। নরসিংদী জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাফিউর রহমানের নেতৃত্বে এ মরদেহ উত্তোলন করা হয়।
এ সময় মোবারক হোসেনের পরিবারের লোকজন ও পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সাবেক এ পৌর কমিশনারের মরদেহ উত্তোলনকে ঘিরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শতশত উৎসুক জনতা কবরস্থানে ভিড় জমান।
এ সময় নিহতের স্বজনরা জানান, গত ২২ মার্চ শনিবার সকালে কবরস্থানে মোবারক হোসেনের কবর ডেকে রাখা লোহার মাচা ও মাটি সরানো অবস্থায় দেখতে পান স্বজনরা। এ সময় খোঁড়া কবর থেকে একটি বোতল, আগুনে পোড়া কাপড়, পোড়া কাঠসহ বিভিন্ন আলামত দেখা যায়। এতে সন্দেহ হলে মৃত মোবারক হোসেনের ছেলে আবির হোসেন মাধবদী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
পুলিশি তদন্তের পরে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। পরে আদালত কবর হতে মরদেহটি উত্তোলনের করে ময়নাতদন্তের নির্দেশে দেন। নির্দেশনা অনুযায়ী মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহতে ছেলে আবির হোসেন জানান, প্রায় ৬ মাস আগে হঠাৎ স্ট্রোক করে তার বাবা সাবেক কমিশনার মোবারক হোসেনের মৃত্যু হয়। এটা স্বাভাবিক মৃত্যু ভেবে মরদেহ দাফন করে পরিবারের সদস্যরা। এরপর মরদেহ পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টার বিষয়টি নিয়ে তাদের মাঝে সন্দেহ হয়।
নিহতের ছোট ভাই হাজী মুহাম্মদ রোমান জানান, ছোট গদাইরচর (গাংপাড়) এলাকার জামে মসজিদের পাশে গোরস্থানটি অবস্থিত। পথচারীরা সকালে এ পথে হাঁটার সময় কবরের লোহার মাচাটি সরানো দেখে একটু উঁকি দিয়ে দেখেন কবরও খোঁড়া। পরে ঘটনাটি জানাজানি হলে খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসে দেখেতে পাই মরদেহের মাথার উপর বাঁশ সরানো, কে বাবা কারা পরিকল্পিতভাবে কবরটি খুঁড়ে রেখেছে। পরে কবরের ভিতরে উঁকি দিয়ে দেখি একটি পানির বোতল। এতে পেট্রলের গন্ধ পাওয়া যায়। এরপাশেই পোড়া কাপড় ও কাঠ পড়ে থাকতে দেখা যায়।
তিনি বলেন, আশ্চর্যের বিষয় হলো, আমার ভাইয়ের মরদেহটি এখনো অক্ষত রয়েছে। আমরা ধারণা করছি কেউ পরিকল্পিতভাবে মরদেহটি পুড়িয়ে ফেলতে চাইছিল।
তিনি বলেন, ২০২৪ সালে নভেম্বরের ১৫ তারিখে গাংপাড় এলাকায় মোবারক কমিশনারের মৃত্যু হয়। এরপর মার্চের ২২ তারিখ মরদেহ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় রহস্য তৈরি হয়। পরে নরসিংদী আদালতে মোবারকের স্ত্রী মনিরা সরকার (৪৩), মোবারকের শ্যালক রায়হান সরকার, এক পল্লি চিকিসৎক ইমন মিয়াসহ চারজনকে আসামি করে মামলা করেন নিহতের ছেলে আবির হোসেন।