সম্প্রতি ত্বক ও চুলের যত্নে অলিভ অয়েলের ব্যবহার ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটকে। এরপর সৌন্দর্য চর্চায় এই প্রাকৃতিক তেলের প্রতি ঝুঁকছেন অনেকেই। কিন্তু শত শত বছর আগে থেকেই নানা ভাবে সৌন্দর্য চর্চায় ভূমিকা রেখেছে অলিভ অয়েল। কেননা এতে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা ত্বকের ভেতরের স্তরে প্রয়োজনীয় খনিজের জোগান দিতে পারে। তাই চুল থেকে ত্বক—সবকিছুর জন্যই উপকারী এই তেল।
ত্বকে পানির পরিমাণ কমে গেলে বা পনিশূন্যতা দেখা দিলে, ত্বক রুক্ষ হতে শুরু করে। তখন নিয়মিত অলিভ অয়েলের ব্যবহার এই ঘাটতির ঝুঁকি কমায়। এ ছাড়া প্রচুর ভিটামিন এ ও ই-এর পাশাপাশি এতে ভিটামিন ডি থাকে, যা ত্বকের সবচেয়ে সংবেদনশীল অংশকে সর্বোচ্চ সুরক্ষা দেয়। তাই অলিভ অয়েলকে সরাসরি ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কিংবা কোনো ময়েশ্চারাইজারিং লোশন বা ক্রিমের সঙ্গে মিলিয়ে ব্যবহার করলে বেশ উপকার পাওয়া যায়। ত্বককে মোলায়েম করে তুলতে অলিভ অয়েলের তুলনা হয় না।
সারা শরীরের ত্বকেই এটি ব্যবহার করা যায়। এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল চার-পাঁচ চামচ পানিতে মিশিয়ে গোসল করলে তা ত্বককে নরম তো রাখবেই, সঙ্গে সারা দিন ঘামও হবে অনেক কম। আর ত্বক মোলায়েম থাকার কারণে বেশ আরাম অনুভূত হবে।
অলিভ অয়েল ম্যাসাজ এখন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বিউটি পারলার বা স্পাতে আজকাল বডি ম্যাসাজ করতে অলিভ অয়েলকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। কারণ, সামান্য একটু ম্যাসাজে ত্বক উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। এ জন্য পারলারে সম্ভব না হলেও অন্তত নিজে হাতে সামান্য অলিভ অয়েল নিয়ে মুখ ও শরীরের ত্বকে ম্যাসাজ করা উচিত। ফলে মুখে রক্ত চলাচল ত্বরান্বিত হবে। ফলে ত্বক ঝলমলে দেখাবে।
ডার্ক সার্কেলের সমস্যায় এটি খুব কার্যকরী একটি সমাধান। আঙুলের ডগায় অল্প অলিভ অয়েল নিয়ে চোখের চারপাশে ম্যাসাজ করে ১৫ মিনিট পর ভেজা তুলা দিয়ে মুছে নিতে হবে। এ পদ্ধতি নিয়মিত অনুসরণ করলে দ্রুতই উপকার পাওয়া যাবে।
মেকআপ রিমুভার হিসেবে এটি খুব ভরসাযোগ্য একটি উপাদান। মেকআপ তোলার জন্য বিভিন্ন সামগ্রী বাজারে পাওয়া গেলেও সেগুলোতে মুখের ত্বকের ক্ষতি হওয়ার একটা আশঙ্কা থেকেই যায়। কিন্তু অলিভ অয়েল ব্যবহারে সেই ঝুঁকিটা থাকে না।
অনেকেই হয়তো জানেন না যে ভ্রু তোলার পর বা দাঁড়ি শেভ করার পর ত্বক জ্বালা করলে বা কোনো রকম র্যাশ বের হলে তা নিরাময়ে অলিভ অয়েল বেশ কাজে লাগে। তবে এ ক্ষেত্রে অবশ্যই অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ, ত্বকের সংবেদনশীলতার সঙ্গে এর যোগসূত্র রয়েছে। তাই জেনেবুঝে ত্বকের ধরন অনুযায়ী অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে হবে।
চুলের যত্নেও এটি বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। বর্ষার দিনগুলোতে আবহাওয়ার তারতম্যের জন্য চুলের স্বাভাবিক ঔজ্জ্বল্য হারিয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে অলিভ অয়েল কুসুম গরম করে তাতে চায়ের লিকার মিশিয়ে চুলে লাগিয়ে নেওয়া যায়।
সঠিক নিয়মে এটি ব্যবহার করলে কন্ডিশনারের মতো কাজ করবে। অর্থাৎ চুল নরম ও মোলায়েম হবে। সঙ্গে ঔজ্জ্বল্যও ফিরে আসবে। তাই ত্বক ও চুলের সৌন্দর্যবর্ধনে প্রতিদিনের রুটিনে অলিভ অয়েল যোগ করা যেতে পারে।
তথ্যসূত্র: হেলথলাইন
ছবি: পেকজেলস ডট কম ও ইনস্টাগ্রাম