সম্প্রতি বাংলাদেশের ফ্যাশন অঙ্গনের প্রভাবশালী উদ্যোক্তা ও ন্যাশনাল ডিরেক্টর আজরা মাহমুদ মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ ২০২৫-এর আনুষ্ঠানিক লাইসেন্স পেয়েছেন। এবারের প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছে আকলিমা আতিকা কনিকা।
সৌন্দর্য ও ফ্যাশন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের নাম উঠে আসছে বেশ কয়েক বছর থেকেই। দেশীয় প্রতিযোগীরা, ভিনদেশের প্রতিযোগীদের দিকে রীতিমতো ছুড়ে দিচ্ছেন চ্যালেঞ্জ। মোদ্দা কথা, মিস ওয়ার্ল্ড এর মতো বড় পরিসরের প্রতিযোগিতাতেও পিছিয়ে নেই বাংলাদেশ। এরই মাঝে বাংলাদেশ ফ্যাশনের ন্যাশনাল ডিরেক্টর আজরা মাহমুদ পেলেন মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ ২০২৫ এর লাইসেন্স। এ বছরে বাংলাদেশের অংশগ্রহণকারীদের জন্য মিস ওয়ার্ল্ডের পথ সুগম হবে বলেই আশা করা যাচ্ছে।
এছাড়াও এর মাধ্যমে তিনি আন্তর্জাতিক সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা নিজের দায়িত্বে নিয়ে নিলেন। যদিও তাঁর কাঁধে ইতিমধ্যে মিস ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ, মিস সেলিব্রিটি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এবং ফেস অব এশিয়া, বাংলাদেশ-এর মতো বড় পরিসরের বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্মগুলোর দায়িত্ব আছে। এখানে উল্লেখ্য, মিস ওয়ার্ল্ড-এর ৭২তম আসরটি অনুষ্ঠিত হবে মে মাসে ভারতের তেলেঙ্গানায়।
সময়ের সীমাবদ্ধতা এবং বৈশ্বিক আয়োজনের বাঁধাধরা সময়সূচির কারণে এ বছর মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ ২০২৫-এর মূল প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়ে ওঠেনি। বিশেষ কোনো আয়োজন ছাড়াই করা হয় প্রতিনিধি মনোনয়ন করা হয়। মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ ২০২৪-এর প্রথম রানার আপ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন আকলিমা আতিকা কনিকা।
এ বছর তিনিই বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন, বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। দৈহিক সৌন্দর্য ছাপিয়েও যোগ্যতা, ব্যক্তিত্ব এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজেকে তুলে ধরার পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে আকলিমার। তিনি ইতিমধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত ফেস অব এশিয়া ২০২৪ প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের হয়ে লড়েছেন। তাঁর নিখুঁত উপস্থাপনা ও আত্মবিশ্বাস আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কুড়িয়েছে প্রশংসা। এই অভিজ্ঞতা তাকে মিস ওয়ার্ল্ড মঞ্চে একজন যোগ্য প্রতিনিধি হিসেবে আরও প্রস্তুত করে তুলেছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তাই সবদিক বিবেচনায় বাংলাদেশের মুখ হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে তাঁকে।
আজরা মাহমুদ বলেন, আকলিমা মেধা, সৌন্দর্য ও পরিশ্রমের প্রতীক। সে এমন একটি ফ্রেশ ফেইস যাকে মিস ওয়ার্ল্ড অর্গানাইজেশন সবার সামনে তুলে ধরতে চাই। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তার অভিজ্ঞতা, পরিশ্রম এবং দেশের প্রতি তার ভালোবাসা আছে। সে শিগগিরই আমাদের ও বাংলাদেশের গর্ব হবে বলে আমরা আশাবাদী।
আজরা মাহমুদের নেতৃত্বে গঠিত আজরা মাহমুদ ট্যালেন্ট ক্যাম্প (এ এম টি সি) ইতিমধ্যেই দেশের সম্ভাবনাময় তরুণীদের আন্তর্জাতিক মানের প্রস্তুতি দেওয়ার একটি নির্ভরযোগ্য প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে। সেখানে সৌন্দর্য, নেতৃত্ব, মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি ও আত্মবিশ্বাসের সমন্বয়ে এমন এক প্রজন্ম তৈরি হচ্ছে, যারা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশকে নতুনভাবে তুলে ধরতে সক্ষম।
আকলিমার এই মনোনয়ন এক কথায় আজরা মাহমুদের দূরদর্শিতা, সংগঠনের সামগ্রিক প্রস্তুতি ও দৃঢ় নেতৃত্বের প্রতীক। সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার নামেই মানুষের মধ্যে এক ধরনের ধারণা জন্মায় যে, এটি কেবল বাহ্যিক সৌন্দর্যের প্রতিযোগিতা। ধারণাটি একেবারেই ভুল। আজরা মাহমুদের উদ্যোগে প্রতিটি প্রতিযোগীকে সমাজসচেতন, শিক্ষিত ও ব্যক্তি সচেতনতা বৃদ্ধি করে, পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা স্পষ্ট।
বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবে আকলিমা শুধুমাত্র একজন সুন্দরী প্রতিযোগী নন, বরং একজন সচেতন, আত্মপ্রত্যয়ী ও আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের সঠিক প্রতিচ্ছবি তুলে ধরতে সক্ষম নারী। আশা করা যায়, আকলিমা তাঁর লক্ষ্যে সফল হবেন। সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার দৌড়ে বাংলাদেশের মুকুটে যোগ হবে নতুন পালক, যা আগে কখনো দেখেনি বাংলাদেশ।
ছবি: আজরা মাহমুদ ট্যালেন্ট ক্যাম্প
সূত্র: হাল ফ্যাশন