অ্যাপল তাদের নিজস্ব ব্রাউজার সাফারিতে এআই-চালিত সার্চ অপশন যোগ করার পরিকল্পনা করছে। আইফোন ব্যবহারকারীরা যখন এই সুখবর পেল, তখন অ্যাপলের এই পরিকল্পনা বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে গুগলের জন্য।
জানা গেছে, গুগলের মূল কোম্পানি অ্যালফাবেটের শেয়ার ৭.৩ শতাংশ কমে গেছে, যার ফলে প্রায় ১৫০ বিলিয়ন ডলার বাজারমূল্য হারিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
একটি মার্কিন আদালতে চলমান অ্যান্টিট্রাস্ট মামলায় অ্যাপলের শীর্ষ নির্বাহী এডি কিউ সাক্ষ্য দেওয়ার সময় জানিয়েছেন, এখন অনেক ব্যবহারকারী এআই-ভিত্তিক সার্চের দিকে ঝুঁকছে, যার কারণে সাফারিতে সার্চ কমে গেছে। গুগল যদিও দাবি করছে, অ্যাপল ডিভাইস থেকে সার্চের মোট সংখ্যা বেড়েছে, তবে অ্যাপল সূত্র বলছে, তারা গুগলের বিকল্প খুঁজছে।
বর্তমানে গুগল অ্যাপলকে প্রতিবছর প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার দেয় সাফারিতে ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে থাকার জন্য। কিন্তু এই একচেটিয়া চুক্তিই এখন মার্কিন সরকারের নজরে পড়েছে। সরকার চাইছে গুগলকে এ ধরনের চুক্তি বন্ধ করতে বাধ্য করা হোক, যাতে বাজারে প্রতিযোগিতা ফিরিয়ে আনা যায়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, অ্যাপল যদি গুগলকে সরিয়ে অন্য এআই সার্চ ইঞ্জিন যেমন ওপেনএআই বা পারপ্লেক্সিটি যোগ করে, তাহলে তা গুগলের জন্য হবে বিশাল ক্ষতির কারণ। অনেকে মনে করছেন, গুগলের সার্চ একচেটিয়াতা তখন ভেঙে যাবে এবং বিজ্ঞাপনদাতারা অন্যান্য বিকল্প খুঁজে নেবে।
এদিকে গুগলও বসে নেই। প্রতিষ্ঠানটি ইতিমধ্যে সার্চে ‘এআই মোড’ চালু করেছে এবং বিশ্বের ১০০টির বেশি দেশে নতুন ফিচার চালু করেছে, যাতে সার্চের শুরুর দিকেই এআই দ্বারা তৈরি সারাংশ দেখায়। এসব ফিচারে বিজ্ঞাপনও যুক্ত করেছে তারা।
তবে অ্যাপলের পরিকল্পনায় স্পষ্ট হয়ে উঠছে, তারা ভবিষ্যতে একাধিক এআই সার্চ ইঞ্জিনকে তাদের ডিভাইসে জায়গা দেবে। এতে গুগলের একচেটিয়া সুবিধা হুমকির মুখে পড়বে। ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটি জানায়, তারা প্রতি সপ্তাহে ১ বিলিয়নের বেশি ওয়েব সার্চ পাচ্ছে, যা গুগলের জন্য বড় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্ব এখন নতুন ধরনের সার্চ প্রযুক্তির দিকে এগোচ্ছে। অ্যাপল যদি তাদের প্ল্যাটফর্মে এই এআই সার্চ ইঞ্জিনগুলো চালু করে, তাহলে গুগলের দীর্ঘদিনের আধিপত্যে বড় ধাক্কা আসবে।