কোনো বন্ধুকে দীর্ঘদিন না দেখলে হরহামেশাই আমরা বলি ‘ডুমুরের ফুল’। এই ডুমুরের ফুল দুর্লভ হলেও ডুমুরের ফল কিন্তু সহজলভ্য। মিষ্টি স্বাদের ফলটি শুধু স্বাদেই নয়, পুষ্টিতেও ভরপুর। এতে থাকে প্রাকৃতিক চিনি, ফাইবার, ক্যালসিয়াম, অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসহ নানা রকম পুষ্টি উপাদান—যা শরীর ভালো রাখতে বড় ভূমিকা রাখে।
কাঁচা বা শুকনা যেকোনো অবস্থায় এটি খাওয়া যায়। এমনকি ওটসের সঙ্গে মিশিয়েও ডুমুর খাওয়া যায়। চলুন জেনে নিই ডুমুরের সাতটি উপকারিতার কথা।
হজমে সহায়তা করে
যাঁরা নিয়মিত গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য বা পেটের নানা সমস্যায় ভোগেন, তাঁরা প্রতিদিন ডুমুর খেতে পারেন। ডুমুরে রয়েছে প্রচুর ডায়েটারি ফাইবার, যা হজমশক্তি উন্নত করে। এ ছাড়া প্রাকৃতিকভাবে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার অসাধারণ গুণ রয়েছে এই ফলের। বিশেষ করে সারা রাত ভিজিয়ে রেখে সকালে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়।
হৃদ্যন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষা করে
আমাদের শরীরের অন্যতম প্রধান অঙ্গ হৃদ্যন্ত্রকে সুস্থ ও সজীব রাখতে প্রয়োজন ভালো খাদ্যাভ্যাস। ডুমুরে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রক্তের ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমায়, রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে। ডুমুরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান পটাশিয়াম। এই পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, ফলে হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমে।
রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখে
রক্তে শর্করার পরিমাণ সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে যেকোনো সময় ডায়াবেটিস দেখা দিতে পারে। যদিও ডুমুর স্বাদে মিষ্টি, তবে এর গ্লাইসেমিক সূচক নিম্ন থেকে মাঝারি। পরিমিত পরিমাণে খেলে কাঁচা ডুমুরে থাকা ফাইবারের কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
হাড় মজবুত করে
হাড়ের সমস্যায় এখন শুধু বয়স্ক ব্যক্তিরাই নয়, বিভিন্ন বয়সের মানুষই ভোগেন। হাড় মজবুত রাখতে প্রতিদিন তাই একটি করে ডুমুর খাওয়া শুরু করুন। এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ফসফরাস—যেগুলো হাড়ের ঘনত্ব ও শক্তির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। ডুমুর নিয়মিত খেলে অস্টিওপরোসিসের ঝুঁকি কমে।
ত্বকের যত্নে সহায়ক
উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর ত্বকের জন্য ডুমুর অত্যন্ত উপকারী। এতে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন এ, ই ও কে। এগুলো ত্বকের কোষের ক্ষয়রোধ করে এবং উজ্জ্বলতা আনে। ডুমুরের আরেকটি অসাধারণ গুণ হলো এটা একজিমা ও সোরিয়াসিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়
একজন মানুষকে সুস্থ থাকতে হলে তার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন। ডুমুরে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও প্রয়োজনীয় ভিটামিন শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। বিশেষ করে শুকনা ডুমুরে থাকে প্রচুর আয়রন ও জিংক, যা ইমিউন সিস্টেমকে আরও শক্তিশালী করে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
ওজন কমানোর বহু উপায় হয়তো অনেকেরই কাজে আসে না, কিন্তু প্রতিদিন মাত্র একটি ডুমুর খেলে মেদ ঝরতে পারে। এতে থাকা ফাইবার দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে এবং অকারণে খাওয়া কমায়।
সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট