দক্ষিণ ভারতের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সামান্থা রুথ প্রভু। বছরজুড়ে অভিনয় ক্যারিয়ার ও ব্যক্তিজীবন-দুটো নিয়েই সমানতালে আলোচনায় থাকেন তিনি। বিশেষ করে অভিনেতা নাগা চৈতন্যের সঙ্গে বিয়েবিচ্ছেদের পর থেকেই স্পটলাইট তার দিকেই। নতুন কোনো সম্পর্কে জড়াচ্ছেন কী না, জড়ালেও কে সেই ব্যক্তি-এসব নিয়েই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন সামান্থা।
দক্ষিণ ভারতের অভিনেতা নাগাজুর্নার ছেলে নাগা চৈতন্যের সঙ্গে বিয়ের সম্পর্কে বেশ কয়েক বছর ছিলেন সামান্থা। কিন্তু গত বছর তাদের মধ্যে ডিভোর্স হয়। এ বিচ্ছেদের কারণ দু’জনের কেউ সরাসরি না বললেও ইন্ডাস্ট্রিতে গুঞ্জন রয়েছে, মূলত ক্যারিয়ার নিয়ে ইগো সমস্যায় ভুগছিলেন নাগা। বিষয়টি নিয়ে সামান্থা ‘সেক্রিফাইস’ করলেও নাগা সেটা পারেননি। তাই সিদ্ধান্ত নিলেন আলাদা হয়ে যাওয়ার। হয়েও গেলেন।
এরইমধ্যে নাগা অন্য কারও হাত ধরেছেন। তবে বিচ্ছেদের এক বছর পার হয়ে গেলেও সামান্থা রয়ে গেছেন একা। তাই স্পটলাইট তার উপরই বেশি থাকে। এমনিতেই নাগার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর বেশ কিছুদিন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন অভিনেত্রী। তাই নিজেকেই সময় দিয়েছেন বেশি। তবে সম্প্রতি তিনি নতুন সম্পর্কে জড়িয়েছেন বলেও গুঞ্জন রটেছে।
ভারতীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, অভিনেত্রী আবার প্রেমে পড়েছেন। পরিচালক রাজ নিদিমোরুর সঙ্গে জড়িয়েছে তার নাম। মূলত সোশ্যাল মিডিয়ায় সামান্থার একটি পোস্ট এ গুঞ্জন উসকে দিয়েছে। অভিনয় ক্যারিয়ারে প্রথমবার প্রযোজক হিসাবে আবির্ভূত হচ্ছেন এ নায়িকা।
প্রযোজনা করেছেন ‘শুভম’ নামে একটি সিনেমা। শিগগিরই মুক্তি পাবে এটি। বর্তমানে এ সিনেমার প্রচারণায় ব্যস্ত রয়েছেন সামান্থা। ছবির ট্রেলার লঞ্চ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন তিনি। অনুষ্ঠার শুরুর আগেই নিজের বেশ কিছু ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন। এসব ছবিতে ‘সিটাডেল হানি বানি’ সিরিজে পরিচালক রাজও রয়েছেন। ক্যাপশনে অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘পথটা অনেক লম্বা ছিল। এখন আমরা এখানে। নতুন শুরু।’। মূলত এ ছবি ও ক্যাপশন দেখেই ধারণা করা হচ্ছে রাজের প্রেমে পড়েছেন সামান্থা।
তবে এ পোস্ট নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সব খবরই ‘গুজব’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন অভিনেত্রী। ছবি ও পোস্টের ক্যাপশন ব্যাখ্যা করে বলেছেন, নতুন শুরুর মানে হলো প্রযোজক হিসাবে তার নতুন যাত্রা শুরু। এ মুহূর্তে তার মাথায় ‘শুভম’ সিনেমা ও নতুন কাজ ছাড়া অন্য কিছু নেই। কারও সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর ইচ্ছাও নেই তার।
এদিকে সিনেমার প্রচারণার আরেক অনুষ্ঠানে অভিনেত্রী ব্যক্তিজীবনের আরও একটি বিষয় প্রকাশ্যে শেয়ার করেছেন ভক্তদের সঙ্গে। ব্যক্তিজীবনে দুঃখের সমুদ্রে সাঁতার কাটলেও একজন অভিনেত্রী হিসাবে দর্শক ভক্তদের সামনে কতটা হাসিমুখে থাকতে হয়, সেটাই জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘বাবার মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা পরও আমি হাসতে হাসতে ছবি তুলছিলাম’। কিন্তু কেন? সেটাও স্পষ্ট করেছেন অভিনেত্রী।
বলেছেন, ‘আমি সেদিন শুটিংয়ে ছিলাম। বাড়ি থেকে ফোন পাই বাবা আর নেই। সঙ্গে সঙ্গেই মুম্বাই থেকে চেন্নাইগামী প্রথম বিমানে বাড়ির পথ ধরি। বাবার জন্য মানসিকভাবে খুবই বিপর্যস্ত ছিলাম। কাজের চাপে বেশকিছুদিন তার সঙ্গে কথা বলা হয়নি। বেশ বিমর্ষ ছিলাম তখন। ঠিক ওই সময় ফ্লাইটে বসা কিছু লোক আমার সঙ্গে ছবি তুলতে চেয়েছে। তারা তখনও জানে না আমার বাবা মারা গেছে। তাদেরকে হতাশ করতে চাইনি আমি। তাদের জন্যই উঠে দাঁড়িয়ে হাসছিলাম এবং ছবি তুলছিলাম। কিন্তু ভেতরে আমি মরে যাাচ্ছিলাম।’
ভক্তদের কেন সেদিন নিষেধ করেননি সেটাও বলেছেন সামান্থা। তিনি বলেন, ‘আমি যদি ছবি তুলতে অস্বীকার করতাম, তাহলে ওদের মানসিক অবস্থা খারাপ হতো। কারণ ওইসময় আমিও খারাপ অবস্থায় ছিলাম। আমি প্রত্যাখ্যান করে তাদের মনে আঘাত দিতে চাইনি। হাসিমুখে সেদিন ছবি তুলতে গিয়ে মনে হলো একজন স্বাভাবিক মানুষের কাছ থেকে তার বাবার মৃত্যুর দিন হাসি আশা করা যায় না। এ এক সম্পূর্ণ ভিন্ন জগৎ (সিনেমা)। যেখানে ভয়ংকর মন খারাপের মধ্যেও আমাদের হাসতে হয়, হাসিমুখে থাকতে হয়।’