ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে পরাজিত করা এবং সেখানে থাকা ইসরায়েলি বাকি জিম্মিদের মুক্ত করতে বড় ধরনের একটি সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দিয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী বা আইডিএফ তাদের হিব্রু ভাষার পরিচালিত এক্স (সাবেক টুইটার) একাউন্টে এক পোস্টে জানিয়েছে, তারা ‘অপারেশন গিডিয়ন্স চ্যারিওটস’ নামে একটি সামরিক অভিযান শুরু করছে। যার লক্ষ্য গাজার কৌশলগত এলাকার দখল নেয়া।
গাজায় হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার থেকে ইসরায়েলি হামলায় প্রায় আড়াইশো জন নিহত হয়েছেন। দুই মাসের যুদ্ধবিরতি ভেঙে গত মার্চ মাস থেকে গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয় ইসরায়েল। শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘গাজায় অনেক মানুষ না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে।’
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী তাদের হিব্রু ভাষার একাউন্ট থেকে যে পোস্টটি দিয়েছে, সেখানে এই অভিযানের একটি নাম দিলেও ইংরেজি ভাষার পোস্টে এই অভিযানের নাম ব্যবহার করেনি। সেখানে তারা বলেছে, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত হামাস হুমকি না হয়ে ওঠে এবং তাদের কাছে থাকা সব জিম্মি মুক্ত না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা আমাদের অভিযান বন্ধ করবো না।’
এই পোস্টে আরও দাবি করা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজা উপত্যকায় ১৫০টিরও বেশি “সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুতে” হামলা চালানো হয়েছে।
গাজায় পুনরায় যুদ্ধবিরতি আলোচনা শুরু করতে এবং অবরোধ প্রত্যাহারে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ার পরও ইসরায়েল হামলা আরও তীব্রতর করেছে। বাড়িয়েছে এবং সীমান্তে সাঁজোয়া বাহিনীও মোতায়েন করেছে।
ইসরায়েলি গণমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল বলেছে, ‘অপারেশন গিডিয়ন্স চ্যারিওটস’ এটি একটি বাইবেলের যোদ্ধার নামে রাখা।
এর আগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু চলতি মাসের শুরুতে বলেছিলেন, ইসরায়েল গাজায় ‘তীব্র আক্রমণের’ প্রস্তুতি নিচ্ছে। যার উদ্দেশ্য ওই এলাকা তাদের দখলে রাখা।
যদিও ইসরায়েলি সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই অভিযান শুরু হবে না। শুক্রবারই ট্রাম্প সফর শেষে মধ্যপ্রাচ্য ত্যাগ করেন।
এই বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ফলকার র্টুক বলেছেন, ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সামরিক অভিযান আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের শামিল হতে পারে।
উল্লেখ্য, গাজায় হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৫৩ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি মারা গেছে।