ঈশ্বরদী উপজেলার লক্ষিকুন্ডা ইউনিয়ন ঘেঁষে বয়ে গেছে পদ্মা নদী। এ ইউনিয়নের নবীনগর ঘাট এলাকায় নদীর পাড় থেকে অবৈধভাবে মাটি ও বালু উত্তোলন করে আসছিল স্থানীয় বিএনপি নেতারা। খবর পেয়ে সেখানে অভিযান চালায় প্রশাসন। ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে করা হয় এক লাখ টাকা জরিমানা। তবে অভিযানের এক সপ্তাহ না যেতেই একই স্থান থেকে মাটি কাটছেন জরিমানা দেওয়া সেই বিএনপি নেতারা।
অভিযুক্ত বিএনপি নেতাদের দাবি, উপজেলা সদস্য সচিবকে ম্যানেজ করেই নদী পাড়ের মাটি কাটছেন তিনি। ভেকু প্রতি দিচ্ছেন ১৩ হাজার টাকা। আর যুবদল নেতা ম্যানেজ করছে সাংবাদিকসহ প্রশাসনকে। তবে যুবদল নেতা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
সোমবার দুপুরে সরজমিনে লক্ষিকুন্ডা ইউনিয়নের ও এর আশেপাশের এলাকায় গিয়ে মাটি কাটার চিত্র দেখতে পান যুগান্তরের এ প্রতিবেদক। নদীর দুই পাড়ের কয়েকটি পয়েন্ট থেকে ভেকু মেশিন দিয়ে দেদারসে মাটি কাটা হচ্ছে। এতে নদী পাড়ের ফসলি জমিসহ বসতবাড়ি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে পড়েছে।
সাংবাদিকের উপস্থিতি টের পেয়ে এ সময় কয়েকজন যুবক এগিয়ে আসেন। তারা জানান, ওই এলাকার বিএনপি নেতা লিপন হোসেন, জিয়াউল ইসলাম, স্বপন, রুবেল হোসেন, কাজিম হোসেনসহ আরও বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তির যোগসাজশে নবীনগর এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবৈধভাবে মাটি ও বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে লিপন হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘জরিমানার পরের দিন থেকেই মাটি কাটা শুরু করা হয়েছে। উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম রকিকে প্রতিদিন ভেকু প্রতি ১৩ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে। এ টাকা দেওয়া হয় সাংবাদিক, পুলিশ ও প্রশাসন ম্যানেজ বাবদ। তারপর রকির মাধ্যমে সেসব টাকা ভাগ-বাটোয়ারা করা হয়।’
তবে টাকা লেনদেনের বিষয় অস্বীকার করে উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব রকি বলেন, ‘আমাকে যে কেউ দোষারোপ দিতে পারে। তবে আমি কোনো টাকা-পয়সা নেই না। ভাটা যতদিন চলবে, মাটি কাটাও ততদিন চলবে। এটা কেউ বন্ধ করতে পারবে না। আর কেন জরিমানা করা হলো, একদিন পরই বা কেন মাটিকাটা পুনরায় শুরু হলো, তা আমার চেয়ে এসিল্যান্ড স্যারই ভালো জানেন। তাকে জিজ্ঞেস করেন।’
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহাদাত হোসেন খান বলেন, ‘প্রত্যন্ত এলাকা হওয়ায় এসব মাটি খেকোরা পুনরায় মাটি কাটা শুরু করেছে। যে কোনো সময় আবারও অভিযান পরিচালনা করা হবে।’ আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমার নাম ভাঙিয়ে কেউ অনৈতিক সুবিধা আদায় করলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’