ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার বিরুদ্ধে শান্তি আলোচনায় অনীহার অভিযোগ তুলেছেন। মঙ্গলবার (২০ মে) তিনি বলেন, রাশিয়া সত্যিকার অর্থে শান্তির জন্য নয়, বরং যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার কৌশল হিসেবে আলোচনা করছে।
জেলেনস্কি বলেন, “রাশিয়া যুদ্ধ ও দখলদারি অব্যাহত রাখার জন্য শুধু কালক্ষেপণের চেষ্টা করছে।”
এর একদিন আগে, সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফোনে পৃথকভাবে জেলেনস্কি ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলেন এবং যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন। এই যোগাযোগের পর শুক্রবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে রুশ ও ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা প্রথমবার সরাসরি আলোচনায় বসেন তিন বছরেরও বেশি সময় পর। যদিও আলোচনা কোনো ধরনের যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়।
জেলেনস্কি অভিযোগ করেন, রাশিয়া আলোচনায় ‘খালি মাথা’ পাঠিয়েছে, যার মাধ্যমে তারা শান্তির প্রতি তাদের অনাগ্রহ প্রকাশ করেছে। তিনি বলেন, ইউক্রেন সত্যিকারের আলোচনায় প্রস্তুত, তবে অবাস্তব শর্ত থাকলে তার কঠিন পরিণতি হবে।
এদিকে ট্রাম্প রাশিয়া-ইউক্রেন আলোচনাকে “অগ্রগতি” হিসেবে তুলে ধরেন। রিপাবলিকান দল যুদ্ধের অবসানে একটি কার্যকর চুক্তির জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। ট্রাম্প নিজের নির্বাচনী প্রচারণায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
কিন্তু পুতিন যুদ্ধবিরতির সব প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলেন, তিনি একটি রোডম্যাপ এবং যুদ্ধ অবসানের সম্ভাব্য অবস্থান নিয়ে স্মারকলিপি তৈরিতে প্রস্তুত আছেন। যদিও জেলেনস্কি জানান, তিনি এই স্মারকলিপি সম্পর্কে অবগত নন, তবে রাশিয়ার প্রস্তাব দেখতে আগ্রহী।
রাশিয়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে আক্রমণ চালায় এবং এখন দেশটির প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ করছে। ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল ব্যাপকভাবে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে এবং কয়েক হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।
ইস্তাম্বুল আলোচনায় মস্কোর পক্ষ থেকে যেসব দাবি তোলা হয়েছে, তা ইউক্রেন অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য হিসেবে অভিহিত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে বিস্তৃত আঞ্চলিক দাবি, যা কিয়েভ বারবার প্রত্যাখ্যান করেছে।
তুরস্কে জেলেনস্কির সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনায় পুতিনের অনীহার পর ইউক্রেন ও ইউরোপের নেতারা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ওপর চাপ সৃষ্টি করছেন, যেন তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।
সূত্র: নিউজ টোয়েন্টিফোর