অনেক নারী সময়মতো চেষ্টা করেও গর্ভধারণে সফল হন না। এর পেছনে বিভিন্ন কারণ থাকলেও চিকিৎসকদের মতে, দেহে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিনের ঘাটতি প্রজনন স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে। শুধু গর্ভধারণেই নয়, এই ঘাটতির প্রভাব পড়ে গর্ভকালীন মা ও শিশুর স্বাস্থ্যেও। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, কোন কোন ভিটামিনের ঘাটতি গর্ভধারণে জটিলতা তৈরি করতে পারে এবং কীভাবে তা পূরণ করা যায়। চলুন, জেনে নিই।
ভিটামিন ডি
প্রজনন স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিনগুলোর একটি ভিটামিন ডি। এটি হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং ওভুলেশন প্রক্রিয়া উন্নত করে। এর ঘাটতি হলে অনিয়মিত ঋতুচক্র, ওভুলেশনে সমস্যা ও গর্ভধারণের সম্ভাবনা কমে যেতে পারে।
গর্ভাবস্থায় ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি শিশুর হাড়ের গঠনে বাধা সৃষ্টি করে। সকালবেলার রোদ, সামুদ্রিক মাছ, ডিমের কুসুম, দুধ, ফোর্টিফায়েড সেরেয়াল থেকে ভিটামিন পাবেন।
ফলিক অ্যাসিড (ভিটামিন বি-৯)
এই ভিটামিন গর্ভধারণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর অভাবে গর্ভধারণে সমস্যা হতে পারে, এমনকি গর্ভাবস্থার প্রাথমিক ধাপে শিশুর মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ডের গঠনে বড় ধরনের ত্রুটি দেখা দিতে পারে। সবুজ পাতাযুক্ত শাকসবজি, ডাল, কমলালেবু, ব্রকলি, বীট থেকে এটি পাবেন।
ভিটামিন বি-১২
এই ভিটামিন ডিম্বাণুর গুণমান উন্নত করে এবং ঘাটতি হলে রক্তাল্পতা (অ্যানিমিয়া) তৈরি হয়, যা গর্ভধারণে জটিলতা বাড়াতে পারে। ডিম, দুধ, মাছ, মাংস থেকে ভিটামিন বি-১২ পাবেন। নিরামিষভোজীদের জন্য বি-১২ সাপ্লিমেন্ট প্রয়োজন হতে পারে।
ভিটামিন ই ও সি
ভিটামিন ই উভয় লিঙ্গের উর্বরতা বাড়ায় আর ভিটামিন সি শরীরের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমিয়ে প্রজনন সক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
এই ভিটামিনগুলোর ঘাটতি গর্ভপাত, বন্ধ্যাত্ব বা জটিল গর্ভাবস্থার ঝুঁকি বাড়ায়। এর জন্য খেতে পারেন বাদাম, সূর্যমুখীর বীজ, ভুট্টার তেল, পেয়ারা, লেবু, ক্যাপসিকাম, আমলকি।
গর্ভধারণে সমস্যা হলে কেবল চিকিৎসা নয়, পুষ্টিগত ঘাটতির দিকেও নজর দেওয়া জরুরি। খাদ্যতালিকায় পুষ্টিকর খাবার যোগ করে, প্রয়োজনে সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করে এবং একটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন বজায় রেখে অনেক সমস্যাই এড়ানো সম্ভব।