ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর রাতভর বিমান হামলা নিজে সরাসরি নজরে রেখেছিলেন এবং পাকিস্তানের পারমাণবিক হুমকি তার সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থানকে আরও মজবুত করেছে। দেশটির সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভিকে দেওয়া বিষেশ সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা জানান।
জিতেন্দ্র সিং বলেন, ৭ মে রাতে ভারত পাকিস্তান এবং পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে জইশ-ই-মুহাম্মদ ও লস্কর-ই-তৈয়বার সন্ত্রাস ঘাঁটিগুলিতে হামলা চালায়। যখন এই পরিস্থিতি তৈরি হয়, তখন উনি (প্রধানমন্ত্রী) তাঁর সফর সংক্ষিপ্ত করে ফিরে আসেন এবং রাতভর মিনিটে মিনিটে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। আমি মনে করি না ‘উদ্বেগ’ বলেও কিছু তাঁর কাছে আছে, কারণ তিনি এক বিশেষ স্থিরতা গড়ে তুলেছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী প্রায় প্রতিরাতেই কাজ করেন। কিন্তু এটি এমন একটি ঘটনা ছিল, যেটিকে তিনি ব্যক্তিগতভাবে মনিটর করছিলেন।”
যখন প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তগ্রহণ ও উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে তার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়, তখন তিনি বলেন, “উনার জন্যই পুরো কৌশলগত ধারাটি বদলে গেছে। কারণ এই প্রথম প্রতিরক্ষা বাহিনীগুলো ব্যক্তিগত বিচক্ষণতা এবং অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা পাচ্ছে—যা আগে কখনও হতো না।”
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তার (নরেন্দ্র মেদি) মন খুব পরিষ্কার। দ্বিতীয়ত, তিনি খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নেন এবং অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে নেন। তার কাছে পরিষ্কার ছিল, সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটি ও উৎস ধ্বংস করতে হবে, সাধারণ মানুষ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়—এই নীতিতেই তিনি অটল ছিলেন। এখন আর ‘প্রতিক্রিয়া’ নয়, বরং ‘প্রতিকার’-এর দিকে ভারত এগিয়েছে। পাশাপাশি, কোনোপ্রকার পার্শ্বক্ষতি না করার জন্যও নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি।’
পাকিস্তানের পারমাণবিক হুমকির প্রতি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে জিতেন্দ্র সিং বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদি এমন একজন ব্যক্তি নন যিনি কোনো ব্যক্তিগত বা রাষ্ট্রীয় ব্ল্যাকমেইলের সামনে মাথা নোয়ান। বরং, আপনি যতই হুমকি দিন, তিনি ততই দৃঢ় হন।’
অপারেশন সিন্দুর ছিল পাহালগাম হামলার পাল্টা প্রতিক্রিয়া। এই হামলাটি ছিল অত্যন্ত নির্ভুল ও সংযত। শুধু সন্ত্রাসবাদী পরিকাঠামোই ছিল লক্ষ্য; সাধারণ নাগরিক ও সামরিক স্থাপনাগুলিকে স্পর্শ করা হয়নি। পাকিস্তান যদিও পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় শত শত ড্রোন পাঠিয়ে ভারতের পশ্চিম সীমান্তের বেসামরিক ও সামরিক এলাকাগুলিতে হামলা চালায়।
এর জবাবে ভারত পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটিগুলিতে হামলা চালায়, যার মধ্যে বিমানঘাঁটিও ছিল। ভারতের প্রতিক্রিয়াও ছিল সীমিত এবং কৌশলগত—তাতে বার্তা দেওয়া হলেও বড় ধরনের ক্ষতি ঘটানো হয়নি। অবশেষে, পাকিস্তান বড় ক্ষতি সহ্য করার পর আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছায়।
সূত্র: নিউজ টোয়েন্টিফোর