ঈদুল আজহার আনন্দে ঘন ঘন মাংস খাওয়ার প্রবণতা বাড়লেও বিষয়টি নিয়ে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা। ইস্তাম্বুল গেলিসিম বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যতালিকা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক এইচ মেরভে বায়রাম জানিয়েছেন, অতিরিক্ত মাংস খাওয়া বিশেষ করে দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্তদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
১. পুষ্টির দিক থেকে লাল মাংসের গুরুত্ব অপরিসীম। এতে রয়েছে উচ্চমানের প্রোটিন, আয়রন, জিংক, ফসফরাস এবং ভিটামিন বি-১২। তবে এর স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও কোলেস্টেরলের পরিমাণের কারণে এটি পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। অধ্যাপক বায়রাম পরামর্শ দেন যে মাংস খাওয়ার আগে কমপক্ষে ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টা বিশ্রামে রাখা উচিত, কারণ তাজা জবাই করা মাংস হজমে কঠিন হতে পারে।
২. রান্নার পদ্ধতি স্বাস্থ্যের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অধ্যাপক বায়রাম সুস্থ ব্যক্তিদের সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার লাল মাংস খাওয়ার পরামর্শ দেন, প্রতিটির পরিমাণ ৯০-১২০ গ্রামের বেশি নয়। মাংস ভাজার পরিবর্তে বেকিং, গ্রিল করা বা রান্না করা লাল মাংস পছন্দ করা উচিত। গ্রিল করার সময় মাংস ও আগুনের মধ্যে কমপক্ষে ১৫-২০ সেন্টিমিটার দূরত্ব বজায় রাখা ভালো।
৩. হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও অন্যান্য দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতায় ভোগা ব্যক্তিদের বিশেষভাবে সতর্ক থাকা উচিত। অধ্যাপক বায়রাম পরামর্শ দেন, এ ধরনের রোগীদের চর্বিযুক্ত মাংস এড়িয়ে যাওয়া উচিত। অতিরিক্ত তেল যোগ না করে মাংসের নিজস্ব চর্বিতে রান্না করা উচিত।
৪. ঈদুল আজহার সময় মাংসের নিরাপদ ব্যবহার ও সংরক্ষণ সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। অধ্যাপক বায়রাম জোর দিয়েছেন যে মাংসকে কয়েকটি অংশে ভাগ করে ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করা উচিত। তিনি আরো জানান যে কাঁচা মাংস, ফল এবং সবজির সংস্পর্শে রাখা উচিত নয়।
সুষম, স্বাস্থ্যকর ও সচেতন খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর খাবার প্রস্তুত করা সম্ভব। তিনি সবাইকে মনে করিয়ে দেন যে ঈদুল আজহা কেবল আনন্দ ও ভাগাভাগি করার জন্যই নয়, বরং স্বাস্থ্যের কথাও স্মরণ করা উচিত।