মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ মালয়েশিয়ায় উৎসাহ, উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য্যের মধ্য দিয়ে ঈদুল আজহার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ায় একইদিনে ঈদ উৎযাপন হচ্ছে।
মালয়েশিয়ায় লাখো প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছেন, যারা পরিবার থেকে দূরে সহকর্মীদের সঙ্গে ঈদ পালন করছেন।
মালয়েশিয়ার জাতীয় মসজিদ নেগারাতে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল সাড়ে ৮টায়। মালয়েশিয়ানদের পাশাপাশি নামাজ পড়েছেন বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত, ইন্দোনেশিয়াসহ অন্যান্য দেশের মুসলিমরা।
মসজিদ নেগারার গ্র্যান্ড ইমাম এহসান মোহাম্মদ হোসনি নামাজের আগে কুরবানির তাৎপর্য নিয়ে খতিব বয়ানে বলেন, কুরবানি হলো আল্লাহ তা’আলার জন্য ত্যাগ-তিতীক্ষা প্রদর্শনের অন্যতম ইবাদত। যা যুগে যুগে সব নবী-রাসূলের জন্যই বিধিবদ্ধ ছিল। আর বর্তমান কুরবানি আমাদের জন্য হজরত ইবরাহিম (আ.) কর্তৃক পালনীয় ঐতিহাসিক আদর্শ ইবাদত।
কুরবানি দেওয়ার কিছু মাসআলা ও মাসায়েল নামাজ আদায়কারীদের সামনে তুলে ধরে খতিবরা বলেন, ঈদ উৎসবকে সত্যিকার পরম করুণাময়ের কাছে গৃহীত করতে চাইলে সবধরনের কৃত্রিমতা ও লৌকিকতার মুখোশ ঝেড়ে ফেলে অনাবিল আনন্দে মেতে ওঠার আহ্বান জানায় ঈদ।
প্রধানমন্ত্রী, দাতুক সেরি আনোয়ার ইব্রাহিম পুত্রা মসজিদে প্রায় ২০ হাজারেরও বেশি মুসল্লির সাথে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন।
নীল মালয় পোশাক পরে তিনি সকাল ৮টার দিকে তার স্ত্রী, দাতুক সেরি ড. ওয়ান আজিজাহ ওয়ান ইসমাইলের সাথে মসজিদে আসেন। প্রধানমন্ত্রীর বিভাগের (ধর্মীয় বিষয়ক) উপমন্ত্রী ড. জুলকিফলি হাসান আনোয়ার এবং তার স্ত্রীকে স্বাগত জানান।
পুত্রা মসজিদের গ্র্যান্ড ইমাম ড. মুহাম্মদ জাকুওয়া রোদজালির নেতৃত্বে নামাজ আদায়ের আগে প্রায় ২০,০০০ মুসল্লির সাথে তাকবীর রায়াহ পাঠ করেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ জাকুওয়ার ‘ত্যাগ এবং ঐক্যের চেতনা’ শীর্ষক খুতবা শোনেন।
খুতবাটিতে আত্মীয়তা এবং জীবিকা ভাগাভাগি সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি ত্যাগের উপাসনার উপর জোর দেওয়া হয়েছিল যা কৃতজ্ঞতা ও সহানুভূতি শেখায়।
নামাজ শেষে দেশ, জাতি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
ঈদুল আজহার খুতবা শেষ করার পর, আনোয়ার পুত্রা মসজিদে অন্যান্য উপাসকদের সাথে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
ইয়াং দি-পার্টুয়ান আগাং, সুলতান ইব্রাহিম এবং রাজা পেরমাইসুরি আগং, রাজা জারিথ সোফিয়াহ দেশের সব মুসলমানদেরকে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী তুন ডা. মাহাথির মোহাম্মদ।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন প্রদেশে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। মোবাইল ফোনে দেশে থাকা প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন প্রবাসীরা।
মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান প্রবাসী বাংলাদেশি ও মালয়েশিয়ান নাগরিকসহ সবাইকে পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি দেশে অবস্থিত প্রবাসীদের পরিবারের সদস্যদেরও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
ঈদুল আজহা উদযাপন উপলক্ষে প্রবাসী ভাইয়েরা মালয়েশিয়া সরকারের নিয়ম-কানুন পালন করে ঈদ উদযাপন করবেন। আপনাদের ও আপনাদের পরিবারের সদস্যদের মঙ্গল কামনা করেন হাইকমিশনার।
মালয়েশিয়া