যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) বাংলাদেশের সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ১৭০ মিলিয়ন মূল্যের সম্পত্তি জব্দ করেছে। ঢাকায় দুর্নীতির অভিযোগে তদন্তের অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের ল্যান্ড রেজিস্ট্রির নথিপত্র বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সাইফুজ্জামান চৌধুরীর মালিকানাধীন ৩০০-র বেশি সম্পত্তি ফ্রিজিং অর্ডারের আওতায় এসেছে, যার ফলে সেগুলো এখন বিক্রি বা হস্তান্তর করা যাবে না।
এগুলোর মধ্যে রয়েছে ২০২২ সালে ১১ মিলিয়নে কেনা লন্ডনের সেন্ট জনস উডে একটি বিলাসবহুল বাড়ি এবং ২০২১ সালে ১২.৬৫ মিলিয়নে কেনা ফিটজরোভিয়ার একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লক।
এনসিএ জানিয়েছে, এই ফ্রিজিং অর্ডারগুলো একটি চলমান সিভিল তদন্তের অংশ। এর আগে, রহমান ব্যবসায়িক পরিবারের দুই সদস্যের ৯০ মিলিয়ন মূল্যের সম্পত্তিও জব্দ করা হয়েছিল।
এই পদক্ষেপটি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের অনুরোধে নেওয়া হয়েছে, যার নেতৃত্বে রয়েছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন এবং লুন্ঠিত সম্পদ উদ্ধারে সহায়তার জন্য ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করছেন।
আল জাজিরার এক গোপন অনুসন্ধান প্রতিবেদন বরাত দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, সাইফুজ্জামান চৌধুরীর লন্ডনের এক বাড়িতে ধারণ করা ভিডিওতে তাকে বৈশ্বিক সম্পত্তি, দামি স্যুট ও বিলাসবহুল ‘বেবি ক্রক’ জুতা নিয়ে আলোচনা করতে দেখা যায়। তিনি বলেছিলেন, শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সম্পর্ক ‘ছেলের মতো’।
প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্যের সাবেক ট্রেজারি মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককের খালা। জানুয়ারিতে সম্পর্কজনিত বিতর্কে তিনি পদত্যাগ করেন। টিউলিপ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ চেয়েছেন এবং বাংলাদেশের দুর্নীতির অভিযোগে নিজের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছেন।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের তদন্ত প্রধান বলেন, ‘এই ফ্রিজিং অর্ডারগুলো বড় অগ্রগতি। তবে এখনো হাসিনার ঘনিষ্ঠদের মালিকানাধীন আরও বহু সম্পদ বিক্রির ঝুঁকিতে রয়েছে। যুক্তরাজ্যের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও সক্রিয় হয়ে এই সম্পদগুলো খুঁজে বের করতে হবে এবং প্রয়োজনে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে হবে।’