খাবার হজম, শক্তি সংরক্ষণ ও বিষাক্ত পদার্থ শরীর থেকে বের করার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে লিভার। গুরুত্বপূর্ণ এই অঙ্গটিই ধীরে ধীরে কার্যক্ষমতা হারাতে শুরু করেছে, সেটি অবশ্য আপনার ছোট ছোট ভুলেই। প্রায় সবারই জানা—মদ খেলে লিভারের ক্ষতি হয়। কিন্তু মার্কিন এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, অ্যালকোহল ছাড়াও এমন তিনটি খাবার আছে যা নীরবে মারাত্মক ক্ষতি করে চলেছে।
ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিড অয়েল (শিল্পজাত বীজতেল): সয়াবিন তেল, কর্ন অয়েল, সানফ্লাওয়ার অয়েল ও ক্যানোলা অয়েলের মতো বীজতেল প্রতিদিনের রান্না ও প্রক্রিয়াজাত খাবারে ব্যবহৃত হয়। এসব তেলে থাকে অতিরিক্ত পরিমাণে ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড, যা শরীরে ওমেগা-৩ এর সঙ্গে ভারসাম্য নষ্ট করে। এই ভারসাম্যহীনতা শরীরে দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ সৃষ্টি করে যা লিভারসহ পুরো শরীরের বিভিন্ন রোগের মূল উৎস। এই তেল নিয়মিত খাওয়ার সঙ্গে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, বাতব্যথা এবং এমন কিছু বিপাকীয় সমস্যা জড়িত, যা শেষ পর্যন্ত লিভারে বাড়তি চাপ ফেলে।
ফ্রুক্টোজ-সমৃদ্ধ খাবার: ফ্রুক্টোজ এক ধরনের চিনি। যা প্রাকৃতিকভাবে ফলমূলের মধ্যে থাকে। তবে সমস্যা হচ্ছে অতিরিক্ত যোগ করা ফ্রুক্টোজ বিশেষ করে প্রক্রিয়াজাত খাবার ও মিষ্টি পানীয়ের মধ্যে। সোডা, ক্যান্ডি, কেক, বিস্কুট, বেকারি আইটেম ও প্যাকেটজাত স্ন্যাকস এসব খাবারে ফ্রুক্টোজের পরিমাণ থাকে অনেক বেশি।
অতিরিক্ত ফ্রুক্টোজ খাওয়ার ফলে লিভার সেটিকে চর্বিতে রূপান্তর করে। ফলে লিভার কোষে চর্বি জমে তৈরি হয় নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ। দীর্ঘমেয়াদে এই চর্বি জমা গিয়ে লিভারে প্রদাহ, ক্ষত বা স্কার ও এমনকি লিভার ফেলিওরের ঝুঁকি তৈরি করে।
ফলের রস: গ্রীষ্মকালে গরমে ঘেমেনেয়ে আসার পর অনেকখানি স্বস্তি দেয় ফলের রস। অনেকেই ভাবেন ফলের রস একটি স্বাস্থ্যকর পানীয়, কিন্তু বাস্তবে এটি মূলত চিনি দিয়ে তৈরি এক ধরনের তরল যেখানে পুরো ফলে থাকা আঁশ থাকে না। ফলের রস নিয়মিত খাওয়া মানে লিভারে অতিরিক্ত ফ্রুক্টোজ ঢুকছে, যা লিভারে চর্বি জমা ও অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। এটি আস্তে আস্তে লিভারের বড় ক্ষতি করে।