আমাদের ত্বকের জন্য হাজার হাজার টাকা খরচ করে ক্ষতিকর কেমিক্যালযুক্ত উপাদান দিয়ে তৈরি পণ্য কিনে নিজেদের ক্ষতি না করে বাগানে থাকা ফুল দিয়েই যত্ন নেওয়া সম্ভব। আর তা হয়েও আসছে যুগ যুগ ধরে।
প্রকৃতি আমাদের দুহাত ভরে দিয়েছে সুন্দর ও প্রাণবন্ত থাকার সব উপাদান। আমাদের ত্বকের জন্য হাজার হাজার টাকা খরচ করে ক্ষতিকর কেমিক্যালযুক্ত উপাদান দিয়ে তৈরি পণ্য কিনে নিজেদের ক্ষতি না করে বাগানে থাকা ফুল দিয়েই যত্ন নেওয়া সম্ভব। বর্তমানে অ্যালোভেরা, নিম, টি–ট্রিসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে বিভিন্নভাবে সৌন্দর্যচর্চা করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কিন্তু পিছিয়ে নেই ফুলও। বাগানে থাকা ৫টি ফুল ব্যবহারেও আপনার ত্বক হয়ে উঠবে সুন্দর ও প্রাণবন্ত।
ক্যামোমাইল
বাইরে বের হলেই রোদের তাপে ত্বক পুড়ে যায়। সূর্যের ক্ষতিকর ইউভি রশ্মির কারণে ত্বকে সংবেদনশীলতা দেখা দেয়। সানবার্নের এ সমস্যার দারুণ এক সমাধান ক্যামোমাইল। এর ব্যবহারে ত্বকে বেশ আরামবোধ হয়, সেই সঙ্গে এতে থাকা প্রদাহরোধী উপাদানের কারণে ত্বক ঠান্ডা থাকে। স্কিনটোনও উজ্জ্বল হয়। ক্ষতিগ্রস্ত জায়গায় ক্যামোমাইল টি লাগিয়ে রাখলে আরাম বোধ হবে।
উইচ হ্যাজেল
বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ত্বক ও চুলের জন্য তৈরি পণ্যে উইচ হ্যাজেল ফুল ব্যবহার করা হয়। ফুলগুলো শুধু ব্রণের বিরুদ্ধে লড়াই করে তা–ই নয়, ত্বকে নতুন কোষ তৈরিতে ও রোমকূপ সুদৃঢ় করতেও বেশ কার্যকর। যাঁদের ত্বক তৈলাক্ত, যাঁরা ত্বকের সংবেদনশীলতা বা ব্রণের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁরা এই ফুল দিয়ে প্রাকৃতিক টোনার বানিয়ে নিতে পারেন। এই টোনার বানানোও খুব সহজ। পানিতে ফুল দিয়ে শুধু ভালোভাবে ফুটিয়ে নিন। ছেঁকে নিয়ে গোলাপজলের সঙ্গে মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করুন। ত্বকের তৈলাক্ততা কমে আসবে। প্রতিদিনই এই টোনার ব্যবহার করতে পারবেন।
গাঁদা
গাঁদা শুধু খোঁপায় দেখতেই সুন্দর লাগে না, ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে পরিপূর্ণ এটি। ত্বকের ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাস হোক বা রোমকূপের সমস্যা, স্ক্যাল্প সুস্থ রাখা, সবকিছুতেই এই ফুল বেশ উপকারী। ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে ও ত্বক উজ্জ্বল রাখতে গাঁদা ফুল খুব ভালো কাজ করে। ত্বকের দাগছোপ ও লালচে ভাব কমাতে, ত্বকের টানটান ভাব ধরে রাখতে, কোমলতা বজায় রাখতে এই ফুলের কার্যকারিতা রয়েছে বলে সৌন্দর্যবর্ধক বিভিন্ন পণ্যে গাঁদা ফুল ব্যবহার করা হয়।
জবা
উঠানে বা ছাদে লাগানো ঘরের ফুল বলতে জবার নামই শুরুতে আসে। ত্বক ও চুলের যত্নে এই ফুলের ব্যবহার বেশ পুরোনো। এই ফুলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্থোসায়ানোসাইডিস, যা রোমকূপ সংকুচিত রাখতে ও বয়সের ছাপ কমাতে সাহায্য করে, সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকেও ত্বক সুরক্ষিত রাখে। জবাতে থাকা অ্যাস্ট্রিনজেন্ট প্রোপার্টি ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ করে, লালচে ভাব ও সংবেদনশীলতা কমায়।
জুঁই
ত্বকের বিভিন্ন সংবেদনশীলতা ও লালচে ভাব কমাতে, ব্রণের দাগ ও কালচে দাগছোপ কমাতে বাগানের পরিচিত ফুল জুঁই খুব কার্যকর। এতে আছে বয়সের ছাপ কমানোর নানা উপাদান এবং সূর্যের ইউভি রশ্মি থেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান। যাঁরা বয়স বেশি হওয়ার আগেই বয়সের ছাপ পড়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন, তাঁরা এই ফুল ব্যবহার করতে পারেন। জেসমিন ক্রিম, মিস্ট বা তেল ব্যথা কমাতে, ছোটখাটো কাটাছেঁড়া সারাতেও কাজ করে।
ছবি: পেকেজেলসডটকম