ইসরায়েল যদি দক্ষিণ লেবাননে হামলা চালানো অব্যাহত রাখে, তবে হিজবুল্লাহ কোনোভাবেই তাদের অস্ত্র পরিত্যাগ করবে না—এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সংগঠনটির উপ-মহাসচিব শেখ নায়েম কাসেম।
গতকাল শনিবার (২৮ জুন) বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চল দাহিয়েহ-তে এক ভাষণে তিনি বলেন, ‘কে সুস্থ মস্তিষ্কে নিজের শক্তি ছেড়ে দেয়? ইসরায়েল যখন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, তখন আমরা কখনো আমাদের শক্তি ছেড়ে দিতে পারি না।’
লেবাননের জাতীয় বার্তা সংস্থা এনএনএ-র খবরে জানানো হয়, কাসেম বলেন, যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে যেসব দায়িত্ব রাষ্ট্রের ওপর বর্তায়, তা অবশ্যই পালন করতে হবে, কিন্তু হিজবুল্লাহ নিজেদের প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি বজায় রাখবে।
তিনি বিশেষভাবে ইসরায়েলি বাহিনীর দক্ষিণ লেবাননের নাবাতিয়াহ এলাকায় বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে চালানো হামলাগুলোর কঠোর নিন্দা করেন। তার ভাষায়, ‘আপনারা কি মনে করেন আমরা চুপচাপ বসে থাকব? তা কখনোই নয়। আপনারা আমাদের আগেও দেখেছেন—আমাদের কাছে বিকল্প কিছু নেই, আমাদের সম্মানই সব।’
হিজবুল্লাহ বহুবার ঘোষণা করেছে যে, রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার স্বার্থে তারা অস্ত্র পরিত্যাগ করবে না।
তবে লেবাননের রাজনীতিতে হিজবুল্লাহর অস্ত্রধারী অবস্থান বিতর্কের বিষয়। প্রগ্রেসিভ সোশ্যালিস্ট পার্টির সাবেক প্রধান ওয়ালিদ জুমব্লাট এবং খ্রিস্টান ঘরানার লেবানিজ ফোর্সেস পার্টির নেতা সামির জাজা বলেছেন, দেশের অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ শুধুমাত্র রাষ্ট্রের হাতেই থাকা উচিত।
এদিকে, গত নভেম্বর মাসে ইসরায়েল ও লেবাননের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলেও, ইসরায়েল প্রায় প্রতিদিনই দক্ষিণ লেবাননে হামলা চালাচ্ছে। তারা বলছে, এসব হামলা হিজবুল্লাহর তৎপরতার জবাবে পরিচালিত।
লেবাননের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এই সময়ের মধ্যে ইসরায়েল প্রায় ৩ হাজার বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। এতে অন্তত ২২৪ জন নিহত এবং ৫০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।
চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ইসরায়েলের ২৬ জানুয়ারির মধ্যে দক্ষিণ লেবানন থেকে সম্পূর্ণভাবে সরে যাওয়ার কথা থাকলেও, তারা তা মানেনি। পরবর্তীতে সময়সীমা ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হলেও এখনো পাঁচটি সীমান্ত চৌকিতে ইসরায়েলি বাহিনীর উপস্থিতি রয়েছে।