সর্বশেষ
হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে তরুণীকে হত্যা: হাসিনাসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা
দুর্নীতির সমস্যা চিরতরে দূর করতে হবে: নাহিদ ইসলাম
গুলশানে প্রস্তুত হচ্ছে বাড়ি, ১৭ বছর পর দেশে ফিরছেন তারেক রহমান?
ব্যাংক পর্ষদে ৫০ ভাগ পরিচালক হবেন স্বতন্ত্র: গভর্নর
প্রাথমিকের ৩০ হাজার প্রধান শিক্ষকের জন্য সুখবর
অবশ্যই একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে: আখতার হোসেন
সীমান্তে বিএসএফের আগ্রাসী আচরণ আর মেনে নেব না: নাহিদ ইসলাম
মার্কিন-ইসরায়েলি ত্রাণকেন্দ্রে খাবার নিতে এসে নিহত ৭৪৩ ফিলিস্তিনি
ছোটবেলার স্বপ্ন পূরণ
সংস্কার কমিশনের সংস্কার আগে জরুরি: হাবিবুল্লাহ মিয়াজী
জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন জরুরি: জামায়াতের নায়েবে আমির
‘আলোচনা করে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো যাবে’
পিএসএল নিয়ে নতুন তথ্য, বাড়ছে দল-ভেন্যু
তারা স্পষ্ট করে বলছে না কোন পদ্ধতিতে পিআর চায়: নজরুল ইসলাম
ইনসাফ কায়েমে ইসলামী আদর্শের বিকল্প নেই: মুজিবুর রহমান

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কড়া বার্তা, পরীক্ষায় নকল করলে ৪ বছর নিষিদ্ধ

অনলাইন ডেস্ক

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনুষ্ঠিত অনার্স চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার শৃঙ্খলা রক্ষায় কড়া নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। নকল বা কোনো ধরনের জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত পরীক্ষার্থীদের জন্য সর্বোচ্চ চার বছর পর্যন্ত পরীক্ষায় নিষেধাজ্ঞার কথা জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে সতর্ক করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা কেন্দ্র ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদেরও।

গতকাল শনিবার (৫ জুলাই) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. এনামুল করিমের স্বাক্ষরিত করা এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে দায়িত্বে অবহেলা, ইনভিজিলেটরদের অসতর্কতা, প্রশ্ন ও উত্তরপত্র ব্যবস্থাপনায় অনিয়মসহ বেশকিছু গুরুতর সমস্যা পরিলক্ষিত হয়েছে। এ কারণে পরীক্ষার স্বচ্ছতা ও সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে একাধিক কঠোর নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।

কঠিন শাস্তির মুখে পড়বে নকলকারী

পরীক্ষার সময় দূষণীয় কাগজপত্র ব্যবহার, মোবাইল ফোন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে নকল করা, প্রশ্ন বা উত্তরপত্র বিনিময়, রোল নম্বর পাল্টানো কিংবা পরীক্ষা কক্ষের ভেতরে বা বাইরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীর পরীক্ষার ফল বাতিলের পাশাপাশি সর্বোচ্চ চার বছর পর্যন্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত ‘পরীক্ষা শৃঙ্খলাবিধি’ অনুযায়ী, অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী পাঁচটি স্তরে শাস্তি দেওয়া হবে। এর মধ্যে সাধারণ নকল বা অননুমোদিত কাগজপত্র ব্যবহার করলে সেই বছরের পরীক্ষা বাতিলের পাশাপাশি পরবর্তী এক বছর পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ থাকবে না। অপরদিকে জাল পরিচয় ব্যবহার, উত্তরপত্র পাচার বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে অসদাচরণ বা শারীরিক আক্রমণের মতো গুরুতর অপরাধে পরবর্তী চার বছর পর্যন্ত পরীক্ষার সুযোগ হারাবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থী।

উত্তরপত্র বাইরে নেওয়া বন্ধে নির্দেশনা

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কিছু শিক্ষার্থী পরীক্ষার সময় অতিরিক্ত উত্তরপত্র নিয়ে তা গোপনে বাইরে নিয়ে গিয়ে পরে পরীক্ষায় জমা দিচ্ছে। এ ছাড়া পরীক্ষার হল থেকে মূল উত্তরপত্র লুকিয়ে নেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এসব অনিয়ম ঠেকাতে ইনভিজিলেটরদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে– সকল পরীক্ষার্থী হল ত্যাগ করার আগে উত্তরপত্রের সংখ্যা মিলিয়ে দেখতে হবে।

যদি কোনো পরীক্ষার্থী উত্তরপত্র জমা না দিয়ে বের হয়ে যায়, তাহলে তার কক্ষের উত্তরপত্র এবং ওএমআর ফরম আলাদা করে সংরক্ষণ করতে হবে এবং সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়কে জানাতে হবে।

একই সঙ্গে ভুয়া পরীক্ষার্থী রোধে কেন্দ্রগুলোকে প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড যাচাই করে পরীক্ষা গ্রহণ নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। কেউ মোবাইল ফোন বা অন্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে হলে প্রবেশ করলে সেটি শান্তিপূর্ণ পরীক্ষার জন্য হুমকি বলে গণ্য হবে।

ইনভিজিলেটরদের দায়িত্বে অবহেলা করলেই ব্যবস্থা

নির্দেশনায় আরও বলা হয়, ইনভিজিলেটরদের (কক্ষ পরিদর্শক) অনেকেই যথাযথভাবে প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড যাচাই না করে উত্তরপত্র ও হাজিরা ফরমে স্বাক্ষর করছেন। এতে রোল, রেজিস্ট্রেশন ও কোর্স কোডে গড়মিল দেখা দিচ্ছে, যা ফলাফলের ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি করছে। এই গাফিলতির দায় সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের ওপর বর্তাবে এবং প্রয়োজন হলে তাদের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আবার বিভিন্ন কেন্দ্রে পরীক্ষার দিন ভুল কোর্সের প্রশ্নপত্র উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। অনেক ক্ষেত্রেই প্যাকেট খোলার আগে প্রশ্নপত্র যাচাই না করে তা বিতরণ করা হয়, যা পরীক্ষার স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত করে। নির্দেশনায় স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, প্রতিটি প্রশ্নপত্র প্যাকেট খোলার আগে কোর্স কোড মিলিয়ে নিতে হবে।

একইভাবে উত্তরপত্র বান্ডেল তৈরির সময়ও ভুলভ্রান্তি হচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বান্ডেলের লেভেলে যে কোর্স কোড দেওয়া থাকে, তার সঙ্গে ভেতরের উত্তরপত্রের বিষয় না মিললে তা মূল্যায়ন প্রক্রিয়া বিলম্বিত করে এবং ফলাফল প্রকাশে সমস্যা সৃষ্টি করে। এ বিষয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রকে আরও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

পরীক্ষা শৃঙ্খলা ভঙ্গের তালিকায় রয়েছে যেসব অপরাধ

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে পরীক্ষা কক্ষের শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অপরাধের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অপরাধগুলোর মধ্যে রয়েছে– হলে পারস্পরিক কথাবার্তা বলা, নিষিদ্ধ কাগজপত্র ব্যবহার, প্রশ্ন থেকে দেখে লেখা, উত্তরপত্রে অযৌক্তিক কিছু লেখা বা টাকা রাখা, রোল নম্বর পাল্টানো, ভুয়া পরিচয় ব্যবহার, উত্তরপত্র পাচার করা, ইনভিজিলেটরকে হুমকি দেওয়া, কক্ষ ভাঙচুর ও পরীক্ষা কেন্দ্রের পরিবেশ নষ্ট করার মতো অপরাধ। এসব অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী শাস্তির পরিধি নির্ধারণ করা হয়েছে।

শাস্তির বিধান অনুযায়ী, পরীক্ষা কক্ষে কথা বলা বা নিষিদ্ধ কাগজপত্র বহনের মতো অপেক্ষাকৃত হালকা অপরাধে চলতি বছরের ফল বাতিল হবে। তবে যদি কেউ ভুয়া পরিচয়ে পরীক্ষায় অংশ নেয়, উত্তরপত্র পাচার করে বা শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সঙ্গে অসদাচরণ করে, তাহলে ওই পরীক্ষার্থীকে এক বছর থেকে সর্বোচ্চ চার বছর পর্যন্ত পরীক্ষা দেওয়া থেকে বিরত রাখা হবে।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, শাস্তির মাত্রা নির্ধারণ করবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা শৃঙ্খলা কমিটি এবং অপরাধ গুরুতর হলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চাইলে আরও কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ