সারা রাত ভিজিয়ে রাখা কাঠবাদাম ও কিশমিশ শুকনা অবস্থার চেয়ে বেশি উপকারী এবং ওজন কমাতে দারুণ কার্যকর। সারা রাত ভিজিয়ে রাখলে কাঠবাদাম ও কিশমিশের উপরিভাগে লেগে থাকা ক্ষতিকারক ট্যানিক অ্যাসিড দূর হয় এবং বেড়ে যায় পুষ্টিমান; যা হজমকে অনেক বেশি সহজতর করে। জার্নাল অব অবিসিটি অ্যান্ড মেটাবোলিজম অনুযায়ী, কাঠবাদাম খেলে পেট ভরা থাকে, অযথা ক্ষুধা পায় না। ফলে ওজন কমানোরা প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়। কিশমিশের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম, যা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে; যা ডায়াবেটিকস রোগীদের জন্য উপকারী। এই দুটি শুকনা ফলই হৃদ্যন্ত্র ও ত্বকের জন্য ভালো। যেকোনো পুষ্টিবিদের দেওয়া খাদ্যতালিকায় অবশ্যই শুকনা ফল কাঠবাদাম ও কিশমিশ থাকবেই। আয়ুর্বেদ অনুযায়ী, কাঠবাদাম উষ্ণ ও কিশমিশ হচ্ছে শীতল। উভয়ের সমন্বয় সার্বিকভাবে স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
কাঠবাদাম সারা রাত ভিজিয়ে রাখলে এর উপরিভাগের ক্ষতিকারক উপাদান দূর হওয়ার পাশাপাশি তা হজমে সহায়তা করে। এ সময় এখান থেকে বিশেষ ধরনের এনজাইম ‘লাইপেজ’ নিঃসরিত হয়, যা চর্বি গলাতে সহায়তা করে।
সারা রাত ভিজিয়ে রাখা কিশমিশ হৃদ্যন্ত্রের রোগপ্রতিরোধের পাশাপাশি, হজমের উন্নতি হয়। কিশমিশে থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। অন্যদিকে কাঠবাদামের মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট খারাপ কোলেস্টেরল বা এলডিএলকে কমিয়ে দেয়। কিশমিশের প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ক্ষতিকারক র্যাডিক্যাল কমিয়ে ত্বক সুরক্ষায় সহায়তা করে। নিয়মিত কিশমিশ খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে ও ত্বক মসৃণ হয়। এতে রয়েছে ভিটামিন ই ও কার্যকর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। সারা রাত ভিজিয়ে রাখা কাঠবাদাম ত্বকের কোষকে অক্সিডেটিভ ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।
ভিজিয়ে রাখা কাঠবাদামে ভালো মানের ফাইবার ও প্রচুর প্রোটিন থাকলেও শর্করার পরিমাণ কম থাকায় যাঁরা ওজন কমাতে চান, তাঁরা স্ন্যাকস হিসেবে খেতে পারেন। এতে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
ভিজিয়ে রাখা কাঠবাদামে আরও থাকে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ফসফরাস; ফলে হাড় মজবুত করতে ও অস্টিওপোরেসিস আর ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক বলে গবেষণায় জানা গেছে।
কাঠবাদাম ও কিশমিশ—এ দুটি প্রাকৃতিক উপাদান নিয়মিত খেলে বড় ধরনের রোগবালাই থেকে দূরে থাকা যায়।