প্রস্তাবিত ফরিদপুর বিভাগ থেকে শরীয়তপুর জেলার নাম প্রত্যাহার করে ঢাকার সঙ্গেই রাখার দাবিতে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ করে শরীয়তপুরের বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন ও সাধারণ মানুষ। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় পদ্মা সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে জাজিরা টোল প্লাজার সামনে ‘জাগো শরীয়তপুর’ সংগঠনের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
প্রথম ৩০ মিনিট মানববন্ধন এবং পরবর্তী ৩০ মিনিট সড়ক অবরোধের কারণে পদ্মা সেতুর টোল প্লাজার দুই প্রান্তে দুই কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও আন্দোলনকারীদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান লক্ষ্য করা যায়।
সড়ক অবরোধ কর্মসূচিতে শরীয়তপুরের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও ছাত্র সংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন। এ সময় বিএনপি, এনসিপি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জামায়াতে ইসলামী, খেলাফত মজলিস, গণধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, শরীয়তপুরের ভৌগোলিক অবস্থান, যোগাযোগ, শিক্ষা, চিকিৎসা ও ব্যবসা-বাণিজ্যের দিক থেকে জেলার সম্পর্ক ঢাকার সঙ্গে অটুট। অপরদিকে ফরিদপুরের সঙ্গে দূরত্ব ও সংযোগ তুলনামূলকভাবে দুর্বল। বিশেষ করে পদ্মা সেতু চালুর পর ঢাকার সঙ্গে শরীয়তপুরের যোগাযোগ আরও সহজ হয়েছে। তাই প্রশাসনিক স্বার্থে ও জনকল্যাণের দিক বিবেচনায় শরীয়তপুরকে ঢাকা বিভাগেই অন্তর্ভুক্ত রাখার জোর দাবি জানান তারা।
বক্তারা সতর্ক করে বলেন, জোর করে শরীয়তপুরকে ফরিদপুর বিভাগে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করা হলে জেলাব্যাপী কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। এমনকি দাবি আদায় না হলে ভবিষ্যতে পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তেই অনির্দিষ্টকালের অবরোধের ডাক দেওয়া হবে।
কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সরদার একেএম নাসির উদ্দিন কালু, জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক এইচ এম জাকির, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক আহ্বায়ক ইমরান আল নাজির, জাগো শরীয়তপুরের আহ্বায়ক আমিন মোহাম্মদ জিতু প্রমুখ।
অবরোধের কারণে পদ্মা সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে কয়েকটি যাত্রীবাহী বাস আটকা পড়ে। এস পি গ্রিনলাইন পরিবহনের চালক মো. মিজান মিয়া বলেন, ‘বাগেরহাট থেকে যাত্রী নিয়ে চট্টগ্রাম যাচ্ছিলাম। প্রায় ২০ মিনিট ধরে বসে আছি। গরমে বাচ্চারা কষ্ট পাচ্ছে।’
এ বিষয়ে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম রসুল বলেন, আন্দোলনকারীরা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নেন। তারা অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি সেবার যানবাহন চলাচলে বাধা দেননি।
সম্প্রতি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে ফরিদপুর ও কুমিল্লা নামে দুটি নতুন বিভাগ গঠনের আলোচনা শুরু হয়। প্রস্তাবিত ফরিদপুর বিভাগে শরীয়তপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, রাজবাড়ী ও ফরিদপুর জেলা অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। এর আগে ২০১৫ সালেও ফরিদপুর বিভাগ গঠনের সময় একই দাবিতে আন্দোলন করেছিল ‘জাগো শরীয়তপুর’ সংগঠন।