শিশুদের মোবাইল, টিভিসহ যেকোনো স্ক্রিন দেখাতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সুইডেন। ১৮ বছরের কম বয়সীদের জন্য সর্বোচ্চ তিন ঘণ্টা স্ক্রিন টাইমের পরামর্শ দিয়েছে দেশটির জনস্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। সোমবার একটি নির্দেশিকার মাধ্যমে অভিভাবকদের এই পরামর্শগুলো দেয় স্বাস্থ্য সংস্থাটি। ২ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের জন্য দৈনিক সর্বোচ্চ এক ঘণ্টা, ৬ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের জন্য দুই ঘণ্টা, আর ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরীদের জন্য তিন ঘণ্টা স্ক্রিন টাইম রাখার জন্য অভিভাবকদের প্রতি পরামর্শ দিয়েছে সুইডিশ সরকার।
সব বয়সী বাচ্চাদের যেকোনো স্ক্রিন ব্যবহার নিয়ে সচেতন হওয়া উচিত পিতামাতা এবং অভিভাবকদের। এমনকি তাঁদের জানা উচিত বাচ্চারা ফোন বা টিভিতে কী দেখে সময় ব্যয় করছে, জানায় সংস্থাটি।
এই নির্দেশিকার মাধ্যমে সুইডেনের শিশুদের স্ক্রিন টাইম অনেকটাই কমে আসবে। কারণ এত দিন দৈনিক ৪ থেকে ৭ ঘণ্টা ডিজিটাল মিডিয়া ও টিভিতে সময় কাটিয়েছে সুইডিশ ৯ থেকে ১৮ বছরের শিশু-কিশোররা। ‘ সময় কাটাতে ও মন ভালো করতে আমরা বিভিন্ন স্ক্রিন ও অ্যাপে লম্বা সময় কাটিয়েছি। কিন্তু আমরা জানি ডিজিটাল মিডিয়ার ব্যবহার কম বয়সীদের ওপর কত নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাঁদের ঘুমের হার কমে যায় এবং হতাশা বাড়ে’, জানান সুইডেনের সমাজ-কল্যাণ মন্ত্রী জ্যাকব ফরসমেড। ‘ দীর্ঘ সময় স্ক্রিনে থাকার মূল্য আমাদের বাচ্চারা তাঁদের স্বাস্থ্য দিয়ে দিচ্ছে। তবে বয়স-ভিত্তিক এই নির্দেশিকা শুধু ছোটদের জন্য নয় সহায়ক হবে পিতামাতা ও বাচ্চাদের দেখভাল করা লোকেদের জন্য’ জানান তিনি।
শোয়ার ঘরে বাচ্চাদের টিভি না দিতে; এমনকি ঘুমাতে যাওয়ার আগে বাচ্চাদের মোবাইল দেখতে দেওয়া উচিত নয় বলেও পরামর্শ দেয় সংস্থাটি। বাবা-মায়ের অবশ্যই বাচ্চাদের সামনে উদাহরণ তৈরি করতে হবে। বাচ্চারা তাঁদের বাবা-মাকেই অনুসরণ করে, বিবৃতিতে জানায় জনস্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তদন্তকারী হেলেনা ফ্রিলিংসদরফ ।
এ বছরের শুরুতে ফ্রান্সও বাচ্চাদের স্ক্রিন টাইম কমাতে উদ্যোগী হয়। তিন বছরের ছোট বাচ্চাদের টিভি আর ১১ বছরের ছোটদের মোবাইল দেওয়া উচিত নয় বলেও মন্তব্য করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ। ফ্রান্সে করা তিন মাসের একটি গবেষণার ওপর ভিত্তি করে এই কথা বলেন তিনি। এ দেশে স্কুলগুলো ১৫ বছর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মোবাইল ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে। এই নিয়মকে বলা হচ্ছে ‘ডিজিটাল পজ’ যা আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে মেনে চলার কথা ।
ছবি: পেকজেলসডটকম