ত্বকের আর্দ্রতা বাড়াতে ও পিএইচের ভারসাম্য বজায় রাখতে এত দিন ধরে টোনার ব্যবহার হয়ে আসছে। কিন্তু হঠাৎ ত্বকের যত্নের এই পণ্য নিয়ে ত্বকবিশেষজ্ঞরা দুই দলে ভাগ হয়ে গেছেন। কারও অবস্থান টোনার ব্যবহারের পক্ষে, কেউ বলছেন, এটি ব্যবহারের কোনো দরকার নেই। বহু বছর ধরে ত্বকচর্চার প্রধান সূত্র ছিল সিটিএম—ক্লিনজিং, টোনিং, ময়শ্চারাইজিং। এরপরই দৃশ্যপটে আগমন ঘটে কোরিয়ান স্কিনকেয়ারের। ১০ ধাপের ত্বকের যত্নের রুটিনে ক্লিনজার, টোনার ও ময়শ্চারাইজারের সঙ্গে যোগ হয় আরও অনেক পণ্য। সৌন্দর্যপ্রেমীরা হুমড়ি খেয়ে পড়ে এই ট্রেন্ডের ওপর।
কিন্তু কোভিডের পর ত্বকের যত্নের মিনিমাল ধারা শুরু হলে আবারও ছোট হয় সবার ত্বকচর্চার রুটিন। সেখানে টোনারের জায়গা দখল করে সিরাম। আবার কেউ কেউ টোনার ও সিরাম দুটিই ব্যবহার করছেন। তবে এ নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
এত দিন সৌন্দর্যপ্রেমীদের ধারণা ছিল যে টোনার সুস্থ, মসৃণ, টান টান ত্বকের চাবিকাঠি। এটি ত্বককে গভীর থেকে পরিষ্কার করে। টোনার ত্বকের বাড়তি পুষ্টি জোগায় এবং ত্বকের পিএইচের ভারসাম্য বজায় রাখে। এ ছাড়া রোমকূপ সংকুচিত করে ব্রণের প্রবণতা কমাতে সহায়তা করে। টোনিং ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ রোধ করে। অন্যদিকে এটি ত্বকের বলিরেখা কমাতেও বেশ উপকারী।
পশ্চিমা কিছু ত্বকবিশেষজ্ঞ বলছেন, ত্বকের যত্নে টোনারের কোনো প্রয়োজন নেই। আবার কেউ কেউ এর ব্যবহারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। যাঁরা টোনারের বিপক্ষে, তাঁদের মতে, টোনার যে কাজ করে, সেটা ত্বকের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে যেকোনো সিরাম বা ত্বকের যত্নের পণ্য থেকে পাওয়া সম্ভব।
যেমন ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার করার জন্য আছে ডাবল ক্লিনজার—মাইসেলার ওয়াটার, ক্লিনজিং বাম বা অয়েল ও ফেসওয়াশ। আবার ত্বকের বাড়তি পুষ্টি, পিএইচের ভারসাম্য ধরে রাখতে, ব্রণের প্রবণতা কমানোর জন্য বা বলিরেখা কমানো বা প্রতিরোধের জন্য সিরাম বা ময়শ্চারাইজারই যথেষ্ট।
টোনারের পক্ষের ডার্মাটোলজিস্টরা অবশ্য এর পক্ষে খুব একটা শক্ত যুক্তি দাঁড় করাতে পারেননি। ত্বককে গভীর থেকে পরিষ্কার করা বা পিএইচের ভারসাম্য বজায় রাখা ছাড়া টোনার খুব একটা কাজের না। এটি ব্যবহার করে ত্বকের বাড়তি সুবিধা পাওয়া না গেলেও কোনো ক্ষতি হয় না। কেউ যদি এটি বিউটি রুটিনে রাখতে চান, তাহলে খুব সমস্যা হবে না। খালি পকেট খরচটাই বাড়বে।