গৃহিণীদের একটু বেশি করে ভাত রাঁধার অভ্যাস আছে। কেননা তারা মনে করেন হুট করে মেহমান এলে রান্না করে রাখা ভাত দিয়ে আপ্যায়ন করা যাবে। দেখা যায় দিন শেষে ভাত রয়ে যায়। আবার অনেকে খালি ঘরেও বেশি ভাত রান্না করেন যেন তা পরদিন কাজে লাগে। পরদিন অফিসে যাওয়ার সময় তাড়াহুড়া করে মাইক্রোঅয়েভে গরম করে ভাত খেয়ে ফেলেন। এটি খুব সহজ কাজ। তবে সেই খাবারেই যে লুকিয়ে থাকতে পারে মারাত্মক ব্যাকটেরিয়া। আর ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
অনেকে আবার মনে করেন গরম পানিতে চাল ফুটলে তখনই অর্ধেকের বেশি ব্যাক্টেরিয়া নষ্ট হয়ে যায়। চিকিৎসকেরা বলছেন, তা কিছু ক্ষেত্রে সঠিক হলেও ‘ব্যাসিলাস সেরেয়াস’ নামক ব্যাকটেরিয়ার ক্ষেত্রে কার্যকর নয়। তাই চাল ধোয়ার সময় থেকেই সতর্ক থাকতে হবে। নয়তো যে কোনও মুহূর্তে আক্রান্ত হতে পারেন ‘ফ্রায়েড রাইস সিনড্রোম’-এ।
ব্যাসিলাস সেরেয়াস হলো এমন একগুচ্ছ ব্যাকটেরিয়া, যা ধ্বংস করা কঠিন। রান্না করার সময়ে সঠিক তাপমাত্রা পেলেই এই ধরনের ব্যাকটেরিয়া আবার সক্রিয় হয়ে ওঠে। শুধু তা–ই নয়, সংখ্যায় তড়িৎগতিতে বাড়তে থাকে। খাবারের মধ্যে দিয়ে তা পেটে গেলে ব্যাকটেরিয়া থেকে নির্গত টক্সিনের ফলে সমস্যা শুরু হয়। তবে সঠিক পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করে, সঠিক তাপমাত্রায় রাখলে এই ধরনের ব্যাকটেরিয়ার প্রকোপ কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। খাবার ভালো করে গরম করলে বা ফুটিয়ে নিলেও এই ব্যাক্টেরিয়াকে পুরোপুরি মেরে ফেলা যায় না। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, রান্না করা ভাত, ময়দাজাত খাবার বেশি দিন ফ্রিজে রেখে দেওয়া যায় না। ফ্রিজে রাখা ভাত বা ময়দাজাত খাবার এক বারের বেশি গরম করলেও কিন্তু বিপদ ঘটতে পারে। ইংল্যান্ডের ‘ন্যাশনাল হেল্থ সার্ভিস’-ও এই বিষয়ে সকলকে সাবধান করেছেন।
আগের থেকে যাওয়া ভাত গরম করে খেলে গ্যাস্ট্রিক, পেট খারাপ, ডায়েরিয়া ইত্যাদি হতে পারে। কখনো কখনো বমিও হতে পারে। তাই ফ্রিজে ভাত রাখলে তা একদিনের বেশি রাখা ঠিক নয় বলে মনে করেন পুষ্টিবিদরা। আর ফ্রিজে রাখা ভাত গরম করার সময় এমনভাবে গরম করতে হবে, যেন সবগুলো ভাত তাপ পায়। নয়তো ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হতে পারে।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা