হিন্দু ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা আগামী ৯ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাচ্ছে। এ বছরে গাইবান্ধার সাতটি উপজেলায় মোট ৫৬৩ মন্দির–মন্ডপে পূজার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন মন্দির–মন্ডপে তৈরি করা হচ্ছে প্রতিমা। মাটির প্রলেপ দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে এগুলো। আর কিছুদিন পর রঙতুলির আচর পড়বে এইসব প্রতিমার শরীরে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, গাইবান্ধা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) বিমল চন্দ্র সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এদিকে পূজাকে ঘিরে সাজসাজ রব পড়ে গেছে। হিন্দু ধর্মালম্বী লোকেরা তাদের সাধ্যমতো কেনা কাটা করতে দেখা গেছে। যদিও অনেকে অভিযোগ করে বলেছেন, বাজারে সব জিনিসের দাম বেশি হওয়ায় তাদের প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম কিনতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে পোশাক কিনতে আসা অলক সাহা বলেন, আগের বছরের তুলনায় এবার পোশাকের দাম অনেক বেশি। এদিকে বাজার করতে আসা রমেন বাবু বলেন, নারিকেল, গুড়, তেল, চিনি কিনতে এসেছিলেন কিন্তু সব জিনিসের দাম এত বেড়েছে যে অর্ধেক জিনিস কিনে তাকে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকার পরিবর্তন হলো কিন্তু পণ্যের দামের কোনো হেরফের হলো না। বাজারে দোকানদার রবিন বাবু আমাদের বলেন, আমাদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্যের সরবরাহ কম থাকায় দাম কমছে না। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বেশিদামে কিনে কমদামে কিভাবে বিক্রি করবো। বাজার সিন্ডিকেটকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে পণ্যের দাম কমবে বলে তিনি মনে করেন।
এবার গাইবান্ধায মন্ডপগুলোর মধ্যে– গাইবান্ধা সদর উপজেলায় ৯৪টি, সাদুল্যাপুর উপজেলায় ৯১টি, পলাশবাড়ী উপজেলায় ৫৭টি, সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ১২৫টি, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় ১২৫টি, ফুলছড়ি উপজেলায় ১৩টি ও সাঘাটা উপজেলায় ৫৮টি।
গাইবান্ধা কেন্দ্রীয় কালী মন্দির চত্বরে রনজিৎ বকসি (সদস্য জাতীয় কমিটি বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ) বলেন, এ বছরের পঞ্জিকা মতে আগামী আগামী ৯ অক্টোর মহাষষ্ঠীর মধ্যে দিয়ে শুরু হবে দুর্গোৎসব। বাঙ্গালি হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে এ হচ্ছে দুর্গা দেবীর আগমনী বার্তা। হিন্দু সনাতন ধর্মাবলম্বী পূজারীরা ও ভক্তগনরা হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা দিয়ে তৈরি করেছেন মা দূর্গাদেবী।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ গাইবন্ধা সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) বিমল চন্দ্র সরকার বলেন, এ পর্যন্ত জেলায় ৫৬৩ পূজামন্ডপের তথ্য পাওয়া গেছে। হয়তো এ সংখ্যা কম–বেশিও হতে পারে। আসন্ন দুর্গোৎসব সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে পর্যবেক্ষণ কমিটি গঠন করা হয়েছে। আশা করছি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
গাইবান্ধা পুলিশ সুপার মোশাররফ হোসেন বলেন, দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে কঠোর নজরদারি রাখা হবে। আর কেউ পূজার সময় নৈরাজ্য ও ঝামেলা সৃষ্টির করার চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।