বাংলাদেশের ক্রিকেটে ‘পজিটিভ ইনটেন্ট’ খুব বাজার পেয়েছিল কয়েক বছর আগে। দলে ফিরে এসেছিল ইতিবাচক একাগ্রতা। এবার সেই একাগ্রতা দেখাতে গিয়ে কেলেঙ্কারি ঘটান ব্যাটাররা। নির্বিচারে ভুল শট খেলে মিছিল করে আউট হন। ১২৭ রানে অলআউট ভারতের নতুন দলের কাছে। এই রান তাড়া করে ৪৯ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটে ম্যাচ জিতেছে ভারত।
নাজমুল হোসেন শান্ত বলেছিলেন, ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে টি২০তে পরিবর্তন দেখাবেন। ইতিবাচক খেলতে চেয়েছিলেন প্রথম থেকে। অর্থাৎ মেরে খেলা দোষের কিছু না। কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে মেরে খেলাই নিয়ম। কিন্তু বাংলাদেশ দলের ব্যাটাররা আউট হন এলোমেলো শট খেলে। ব্যাটারদের এ ধরনের কৌশলকে বলা হয় আত্মাহুতি। গোয়ালিয়রে গতকাল ভারতের বিপক্ষে সেই ভুল শটের প্রদর্শনী দেখেছেন দর্শক। অভিজ্ঞদের দেখে মনে হচ্ছিল, ব্যাটিংটাই ভুলে গেছেন। লিটন কুমার দাসকে দিয়ে জুটি ভাঙনের শুরু। ৯০ টি২০ খেলা ওপেনার লিটন আর্শদীপ সিংয়ের বলে ক্রস খেলতে গিয়ে আকাশে তোলেন। হার্দিক পান্ডিয়ার বলে ফ্লিক করে ছয় মারা পারভেজ হোসেন ইমন বোল্ড হন পরের ওভারে আর্শদীপের বলে। নিচু বল ব্যাটের ভেতরে লেগে স্টাম্পে আঘাত করে। ৫ রানে প্রথম, ১৪ রানে দ্বিতীয় ওপেনারকে হারায় বাংলাদেশ। শান্ত ও তাওহিদ হৃদয় ২৬ রানের ছোট্ট জুটি গড়ে বিচ্ছেদ নেন বরুণ চক্রবর্তীকে উইকেট দিয়ে। ৩ রানে জীবন পাওয়া মিডল অর্ডার এ ব্যাটার ১২ রানে আউট। বাংলাদেশ ২ উইকেটে ৩৯ রানে পাওয়ার প্লে শেষ করতে পারলেও মাঝের ওভার শুরু হয় উইকেট পতনে। ৪০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে দল।
উইকেট পতনের মিছিলে শুরু হৃদয়কে দিয়ে। তাঁকে অনুসরণ করে দুই বল খেলে এক রান করে আউট অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ। অভিষিক্ত ফাস্ট বোলার মায়াঙ্ক যাদবের বল হাওয়ায় ভাসিয়ে খেলে ডিপ পয়েন্টে হন ক্যাচ আউট। মাহমুদউল্লাহর আউটের মধ্য দিয়ে প্রেস বক্সে বিস্ময়কর একটি ঘটনা ঘটে। সাংবাদিকরা করতালি দিয়ে সিনিয়র এ ক্রিকেটারের আউট উদযাপন করেন! মায়াঙ্কের ভয়ংকর বোলিং দেখে থাকার কথা। আইপিএলে ১৫২ কিলোমিটার গতি তোলা লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টের ফাস্ট বোলার মায়াঙ্কের আন্তর্জাতিক অভিষেক ওভার ছিল মেডেন। ১৪০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে শুরু করেন। সর্বোচ্চ ১৪৬ কিলোমিটার তুলেছেন। স্বাগতিক এ ফাস্ট বোলার ৪ ওভারের কোটা শেষ করেন ২১ রানে। লেগি বরুণ আর পেসার আর্শদীপ তিনটি করে উইকেট নেন। স্বাগতিক বোলারদের ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবিলা করে ৩৫ রানে অপরাজিত মেহেদী হাসান মিরাজ। ১৪ মাস পর টি২০ খেলতে নেমে সর্বোচ্চ স্কোর তিনি। দ্বিতীয় সেরা অধিনায়ক শান্তর ২৫ বলে ২৭ রান। চতুর্থ আন্তর্জাতিক টি২০ খেলা ইমনের রান ৮। এশিয়ান গেমসে ভারতের বিপক্ষে ২৮ রান করেছিলেন তিনি। ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে উইকেটে লো স্কোরের কথা বলেছিলেন হৃদয়। ১২৭ রানে অলআউট হয়ে কথা রেখেছেন তারা।
বাংলাদেশের ব্যাটাররা মুখে পজিটিভ ইনটেন্টের কথা বললেও খেলে ভারত। সঞ্জু স্যামসন, অভিষেক শর্মা, সূর্যকুমার যাদব আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করায় পাওয়ার প্লে শেষ করে ৭১ রানে। তাসকিন আহমেদের প্রথম স্পেলের দুই ওভারে খরচ ২৯ রান। মুস্তাফিজুর রহমানও প্রথম স্পেলে ছিলেন খরুচে। দুই ওভারে ২৫ রান দিয়ে এক উইকেট শিকার তাঁর। সঞ্জু ২৯, অভিষেক ৭ বলে ১৬, সূর্যকুমার ১৪ বলে ২৯ রানে আউট। ছোট হলেও ইনিংসগুলো ক্যামিও।