তালগাছে বাবুইয়ের বাসা মোট দুইটি
একটিতে তারা থাকে
বউ-বাচ্চারা থাকে,
অন্যটি ভাড়া দিতে চায় বাবুইটি।
পিঁপড়ারা দল বেঁধে করে যাওয়া–আসা খালি
বাবুইয়ের বউ তাই লিখে দিল, ‘বাসা খালি।’
সেই বাসা ভাড়া নিতে এল কাঠঠোকরা
বউ বলে, ‘ভাড়া নাই, যাও ছেলেছোকড়া।’
ভাড়া নিতে এল এক টেকোমাথা হাড়গিলে
বলে, ‘ভাই ভাড়া চাই, কম কিছু ছাড় দিলে।’
বউ বলে, ‘দুঃখিত! যান চলে বস্তিতে
খুব কম পয়সায় থাকবেন স্বস্তিতে।’
কিছুক্ষণ না যেতেই এল এক হাঁড়িচাচা
বলে, ‘এটা ফ্ল্যাট নাকি নড়বড়ে বাড়ি কাঁচা?’
খুব রেগে বউ বলে, ‘ফ্ল্যাট নয় ঘুলঘুলি’
তক্ষুনি ছুটে এল একদল বুলবুলি।
বাসাভাড়া চায় ওরা, সাথে ভোজ ফ্রি দিলে
বড় ব্যালকনি আর মজবুত সিঁড়ি দিলে।
বউ বলে, ‘দূর হও! যত সব উটকোরা’
বাসাভাড়া সন্ধানে এল এক দুধকোড়া।
দুধকোড়া বলে, ‘ধ্যাৎ! এই নাকি ভাড়া বাড়ি
তালগাছে ফাও বাসা তাও এত বাড়াবাড়ি!
ফ্যান নাই, এসি নাই, নাই ডিশ, ওয়াই–ফাই
বাবুইয়ের খুপরিকে চিরকাল ভয় পাই।’
এইভাবে রোজ আসে চ্যাগা, বক, মৌটুসি
ধুমকল, পানচিল, ঘুঘু দেখে বউ খুশি।
নিমপ্যাঁচা, সুইচোরা, হট্টিটি, টুনটুনি
তালগাছে বেজে চলে পাখিদের ঝুনঝুনি।
বাসা নিয়ে হইচই চলে রাতদিন বেশি
অবশেষে এল এক বনটিয়ে, ভিনদেশি।
সবুজের পাখনাতে রাঙা তার ঠোঁট দুটি
টিয়ে দম্পতি আর বাচ্চারা মোট দুটি।
টিয়ে বলে, ‘বাহ্! এটা ছিমছাম ভালো বাসা’
বাবুইকে জানাল সে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।
অগ্রিম চুক্তিতে বাসা নিল ভাড়া টিয়া
সেই থেকে টিয়েরাই বাবুইয়ের ভাড়াটিয়া।