পায়ের লোম অপসারণের অনেক পদ্ধতি থাকলেও শেভিংই সবচেয়ে বেশি প্রচলিত। কিন্তু শেভিংয়ের পর কখনো কখনো পায়ে কিছু কালো দাগ দেখা যায়। যা অনেক সময় কিছুটা ফুলে ওঠে। ফুটে ওঠা এই কালো দাগ দেখতে অনেকটা স্ট্রবেরির গায়ে থাকা বীজের মতো মনে হয়। আর এ কারণেই ত্বক এই সমস্যার নাম স্ট্রবেরি লেগস।
সাধারণত শেভ করার পর চুলের ফলিকল বা আটকে থাকা রোমকূপ বাতাসের সংস্পর্শে চলে আসে। তখন এটি অক্সিডাইজ হয়ে কালো দাগ দেখা দেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, স্ট্রবেরি লেগস সৃষ্টির কয়েকটি কারণ রয়েছে। সেগুলো হলো শেভিং, কেরাটোসিস পিলারিস, ফলিকিউলাইটিস ও অতিরিক্ত শুষ্ক ত্বক।
শেভিং
ভুলভাবে, বিশেষ করে পুরোনো, কম ধার আছে এমন রেজার দিয়ে শেভ বা শেভিংয়ের সময় ভালো মানের শেভিং প্রোডাক্ট ব্যবহার না করলে স্ট্রবেরি লেগস হতে পারে। ভুলভাবে শেভ করলে ইনগ্রোন হেয়ার, ফলিকিউলাইটিসের মতো সমস্যা দেখা দেয়। আবার শেভিংয়ের থেকে জ্বালাপোড়া হলে ফলিকলের চারপাশে কালো হয়ে যেতে পারে।
ক্লগড পোরস বা আটকে থাকা রোমকূপ
পায়ের ত্বকে আছে হাজার হাজার রোমকূপ। এগুলোতে তেল, ব্যাকটেরিয়া, মৃত কোষ, ধুলাবালু আটকে যেতে পারে। আটকে থাকা রোমকূপকে ওপেন কমেডোন বলা হয়। যখন আটকে থাকা রোমকূপের তেল বাতাসের সংস্পর্শে আসে, তখন এটি অক্সিডাইজ হয়ে কালো হয়ে যায়।
কেরাটোসিস পিলারিস
খুবই সাধারণ একটি ত্বকের সমস্যা। বেশি দেখা যায় ঊরু ও বাহুর ত্বকে। ছোট ছোট পিম্পলের মতো দেখতে হলেও এগুলোর আকার বেশ রুক্ষ ও শক্ত। কিছু ক্ষেত্রে মুরগির চামড়ার মতোও হতে পারে। হেয়ার ফলিকলের শুরুতে প্রোটিন কেরোটিন ও মৃত এপিথেলিয়াল কোষ জমে কেরাটোসিস পিলারিস হতে পারে। সাধারণত শীতে এ সমস্যা বেশি দেখা দেয়।
ফলিকিউলাইটিস
হেয়ার ফলিকলের ইনফ্ল্যামেশন বা ইনফেকশনের জন্য ফলিকিউলাইটিস হয়ে থাকে। শেভিং বা ওয়াক্সিংয়ের পাশাপাশি ব্যাকটেরিয়া, ইস্ট, ছত্রাকের সংস্পর্শে গেলে এটি হতে পারে। ফলিকুলাইটিস সাধারণত ছোট লাল ফুসকুড়ি বা ফোসকা থেকে শুরু হয়। পরবর্তীকালে তা স্ক্যাবে পরিণত হতে পারে। এটি সহজে নিরাময় হয় না।
যাঁদের ত্বক অতিমাত্রায় শুষ্ক, তাঁদের এসব ধরনের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি।
প্রতিকার ও প্রতিরোধ
স্ট্রবেরি লেগস থেকে পরিত্রাণের পাশাপাশি মসৃণ ও কোমল ত্বক পেতে এই কাজগুলো করা যেতে পারে—
ড্রাই ব্রাশিং
শেভিংয়ের ৫ থেকে ১০ মিনিট আগে নরম, শুকনা একটি ব্রাশ দিয়ে পায়ের ত্বক ঘষে নিলে রোমকূপে আটকে থাকা মৃত কোষগুলো পরিষ্কার হতে শুরু করবে। একই সঙ্গে দূর হবে ত্বকের গভীরে থাকা দূষণ। স্ট্রবেরি লেগসও সৃষ্টি হবে না।
এক্সফোলিয়েশন
বডি স্ক্র্যাব বা কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর দিয়ে সপ্তাহে অন্তত দুই দিন পায়ের ত্বক এক্সফোলিয়েট করতে হবে। কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটরের ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো গ্লাইকোলিক বা ল্যাকটিক অ্যাসিড। এরা ত্বকের উপরিভাগে জমতে থাকা মৃত কোষ সরাতে সহায়তা করে।
ময়েশ্চারাইজিং শেভিং জেল
বিশেষজ্ঞরা শেভিংয়ের সময় ভালো মানের ময়েশ্চারাইজিং শেভিং ক্রিম বা জেল ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন। এগুলো ত্বককে রেজার বার্ন বা জ্বালাপোড়া থেকে সুরক্ষিত রাখে। শেভিং জেল বা ক্রিম ত্বককে রেজার ব্লেডের প্রখরতা থেকে রক্ষা করে এবং শেভ করার পর ত্বক নরম ও কোমল রাখে।
ধারালো রেজার
ইনগ্রোন হেয়ার এড়াতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হলো সব সময় পরিষ্কার, ধারালো রেজার ব্যবহার করা। চুল যেদিকে বাড়ে, সেদিকে রেজার চালাতে হবে। এতে ইনগ্রোন হেয়ার রোধ করা যাবে। পরিত্রাণ মিলবে স্ট্রবেরি লেগসের সমস্যা থেকে।