লাবণ্যময় উজ্জ্বল ত্বক কে না চায়! তবে সজীব, সুন্দর ত্বক পেতে চাই ত্বকের নিয়মিত ও সঠিক যত্ন। ত্বকের যত্নে অনেকেই ফেসিয়াল করে থাকেন। তবে ত্বক বুঝে এবং কত দিন পরপর ফেসিয়াল করা উচিত, তা জেনে করা ভালো। আজকের লেখায় কথা হবে কত দিন পরপর ফেসিয়াল করবেন এবং ত্বক অনুযায়ী কোন ফেসিয়াল করবেন, তা নিয়ে।
ফেসিয়ালের উপকারিতা
ক্লান্তি, কাজের চাপ, দুশ্চিন্তা, বাইরের ধুলাবালু—সব মিলিয়ে চেহারায় একটা ছাপ পড়ে যায়। ফেসিয়াল অনেকগুলো ধাপে করা হয়; যেমন ক্লিনজিং, ম্যাসাজ, মাস্কিং, টোনিং। এসব ধাপ লোমকূপ থেকে ময়লা তুলে এনে ত্বককে গভীর থেকে পরিষ্কার করে। এ ছাড়া ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় রাখতে, বলিরেখা দূর করতে, দাগছোপ ও ফোলা ভাব কমাতে, ত্বকে র্যাশ ও চুলকানি কমাতে সাহায্য করে। সে ক্ষেত্রে কার্যকরী ও লক্ষণীয় ফল পেতে নিয়মিত ফেসিয়াল করা জরুরি। নিয়মিত ফেসিয়াল করলে ত্বকে রক্ত চলাচল সচল থাকে। ত্বক হয় কোমল, সজীব ও প্রাণবন্ত।
কত দিন পরপর ফেসিয়াল করা উচিত
এই প্রশ্নের উত্তর নির্ভর করবে আপনার ত্বকের ধরন ও কোন ফেসিয়াল নিচ্ছেন, তার ওপর। সে ক্ষেত্রে কোন ফেসিয়াল কত দিন পরপর করা আপনার ত্বকের জন্য উপযোগী ও উপকারী, তা একজন অভিজ্ঞ রূপবিশেষজ্ঞ বা ডার্মাটোলজিস্টের কাছ থেকে জেনে নিতে পারেন। এ ছাড়া যাঁরা নিজের বিয়ের আগে ত্বকের বিশেষ যত্ন নিতে চান, তাঁদের জন্য কোন ধরনের ফেসিয়াল এবং কত দিন পরপর করা উচিত, সে বিষয়টি নিয়েও অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের পরামর্শ নিতে পারেন।
ফেসিয়ালের রকমফের
একেকজনের ত্বক একেক রকম। আর ত্বকের ভিন্নতার ওপর ভিত্তি করেই ভিন্ন ভিন্ন ত্বকে ভিন্ন ভিন্ন ফেসিয়ালের পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। মাসে অন্তত একবার ফেসিয়াল করলে ত্বকের তারতম্য নিজেই বুঝতে পারবেন। সাধারণত আমাদের দেশের পারলার বা স্কিনকেয়ার ক্লিনিকগুলোয় এসব ফেসিয়াল করা হয়ে থাকে-
- হারবাল ফেসিয়াল: প্রাকৃতিক বিভিন্ন ভেষজ উপাদান দিয়ে করা হয় হারবাল ফেসিয়াল। প্রায় সব ধরনের ত্বকের জন্যই এই ফেসিয়াল মানানসই। তবে সেনসিটিভ স্কিনে অনেক ধরনের হার্বস ব্যবহারে সমস্যাও হতে পারে। পারলারে হারবাল ফেসিয়াল করার আগে জেনে নিতে পারেন কী কী হার্বস ব্যবহার করা হচ্ছে। সেসব উপাদান আগে হাতে বা মুখের কিছু অংশে লাগিয়ে পরীক্ষা করে দেখে নিতে পারেন যে ত্বকে কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না। যদি হয়, তাহলে এ ফেসিয়াল না করাই আপনার জন্য ভালো।
- ফ্রুট ফেসিয়াল: সব ধরনের ত্বকেই এই ফেসিয়াল মানায়। তবে ত্বকের ধরনভেদে ফেসিয়ালের উপাদানে বিভিন্ন রকম ফল ব্যবহারে তারতম্য হতে পারে। শুষ্ক ত্বকের জন্য কলা, অ্যাভোকাডো, পেঁপে; তৈলাক্ত ত্বকের জন্য টকজাতীয় ফল; আর সংবেদনশীল ত্বকের জন্য শসা, অ্যালোভেরা বেশ কার্যকরী। পারলারে এই ফেসিয়াল করার আগে ঘরে বসেই ত্বকে এসব ফলের রস কিছুটা ব্যবহার করে দেখতে পারেন যে আপনার ত্বকের জন্য মানানসই কি না।
- ডিপ ক্লিনজিং ফেসিয়াল: যাঁদের ত্বকে ব্রণের সমস্যা আছে, ত্বক তৈলাক্ত এবং ত্বকে নানা সমস্যা রয়েছে, তাঁদের জন্য ডিপ ক্লিনজিং ফেসিয়াল বেশ কার্যকরী। এই ফেসিয়াল ত্বকের লোমকূপগুলো খুলে ত্বককে গভীর থেকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। আমাদের দেশের পারিপার্শ্বিক পরিবেশের জন্য আমাদের ত্বকে স্বাভাবিকভাবেই সহজে অনেক ময়লা জমে। তাই মাসে অন্তত একবার হলেও ডিপ ক্লিনজিং ফেসিয়াল করা ভালো।
- হাইড্রা ফেসিয়াল: যেকোনো স্কিনকেয়ার ক্লিনিকে এই ফেসিয়াল করা ভালো। কারণ, ফেসিয়ালটি করার জন্য মেডিকেল ডিভাইস ব্যবহার করা হয়। এ ফেসিয়ালে ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার হয় এবং ত্বক থাকে হাইড্রেটেড। হাইড্রা ফেসিয়ালে হাইলোরনিক অ্যাসিড, পেপটাইড এবং অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট ব্যবহার করা হয়, যা ত্বককে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে। এ ছাড়া এই ফেসিয়ালে ব্যবহার করা এলইডি লাইট থেরাপি ত্বকের লালচে ভাব দূর করতে সাহায্য করে।
এ ছাড়া ত্বকের বলিরেখা দূর করে ত্বকের লাবণ্য ও তারুণ্য ধরে রাখতে ডার্মাটোলজিস্ট ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের পরামর্শ নিয়ে অ্যান্টি-এজিং ফেসিয়াল, মাইক্রোডার্মাব্রেশন, কেমিক্যাল পিলিং করতে পারেন।