বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের অধিকার আদায়ের ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে বৈষম্যবিরোধী প্রবাসী আন্দোলন। প্রবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং স্বার্থ রক্ষার লক্ষ্যে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের সময় লন্ডনে যাত্রা শুরু করে সংগঠনটি।
গত শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় লন্ডনের হোয়াইটচ্যাপেলে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় সংগঠনটির লক্ষ্য ও কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরা হয়। আলোচনায় বক্তারা বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচার সরকারের বিদায় হলেও প্রবাসীদের প্রকৃত মর্যাদা এবং অধিকার এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
বৈষম্যবিরোধী প্রবাসী আন্দোলন প্রবাসীদের অধিকার আদায়ে ১২ দফা সংস্কার প্রস্তাব উত্থাপন করেছে। এসব প্রস্তাবনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য:
- বিমানবন্দরে প্রবাসীদের হয়রানি বন্ধ এবং যথাযথ মর্যাদা প্রদান।
- বাংলাদেশ বিমানের টিকিটের মূল্য সহনশীল পর্যায়ে আনয়ন।
- অস্বচ্ছল প্রবাসীদের লাশ বিনা খরচে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা।
- অভিবাসন ব্যয় কমাতে সিন্ডিকেট ভেঙে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ।
- প্রবাসীদের সম্পদ ও পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
- প্রবাসে জাতীয় পরিচয়পত্র এবং ভোটাধিকার সহজীকরণ।
- দ্বৈত নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে প্রবাসীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ।
- দূতাবাসে দালালমুক্ত সেবা এবং সরাসরি অভিযোগের ব্যবস্থা।
- প্রবাসফেরতদের জন্য পেনশন সুবিধা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ।
- বিদেশে কাগজপত্রবিহীন প্রবাসীদের বৈধকরণে সহায়তা।
- প্রবাসীদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
- প্রশিক্ষণপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে হয়রানি বন্ধ করা।
বিশ্বের প্রায় ৪০টিরও বেশি দেশ থেকে সমন্বয়করা এই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য, এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশের প্রবাসীরা সংগঠনের কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত।
সংগঠনটি মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত শ্রমিকদের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিয়েছে। বক্তারা উল্লেখ করেন, এই অঞ্চলের প্রবাসীরা দেশে এবং প্রবাসে বিভিন্ন বৈষম্যের শিকার হন। দালালচক্রের দৌরাত্ম্য বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয়।
প্রবাসী এমপি নির্বাচনের দাবি জানিয়ে সংগঠনটির নেতারা বলেন, সংরক্ষিত আসনে প্রবাসীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করলে তাদের অধিকার রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে।