সাবেক স্বামী কামরুল হাসান জুয়েলের বিরুদ্ধে অনৈতিক সম্পর্কে বাধ্য করার অভিযোগ অভিনেত্রী রোমানা ইসলাম স্বর্ণার। তিনি অভিযোগ করে বলেন, এ কাজ করতে না চাইলে অমানবিক নির্যাতন করতেন তিনি। জুয়েলের ভাইয়ের নির্বাচনী প্রচারণায় হত্যার ঘটনা ঘটে। সেই হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা দিতে বহু আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলতে চাপ দেন জুয়েল।
সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে তিনি এ অভিযোগ করেন। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও ডিএমপির সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার হারুনের সহায়তায় সৌদিপ্রবাসী জুয়েলের করা মামলায় কারাভোগের প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলন করেন অভিনেত্রী রোমানা স্বর্ণা।
সংবাদ সম্মেলনে অভিনেত্রী রোমানা স্বর্ণা বলেন, ২০২১ সালে প্রতারণা, অর্থ আত্মসাৎসহ হত্যাচেষ্টা মামলায় ডিবি পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানো হয়। জুয়েলের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর পর গণমাধ্যমে যা এসেছিল তার পুরোপুরি উল্টো।
রোমানা স্বর্ণা বলেন, এক বন্ধুর মাধ্যমে জুয়েলের সঙ্গে পরিচয়ের পর ২০১৯ সালে আমাদের বিয়ে হয়। আমার ক্যারিয়ারে যখন সুসময় তখন বিয়ে করি তাকে। তবে বিয়ের পরই পারিবারিক দ্বন্দ্বের একপর্যায়ে মামলা মোকদ্দমায় গিয়ে ঠেকে। সে তার আগের বউয়ের কথা গোপন রেখে আমার বিয়ে করে। এসব জানার পর অশান্তি শুরু হয়। পরে নির্যাতন করলে বিবাহ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেই। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে একাধিকবার সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেও লাভ হয়নি। এমনকি বিয়ের পরে অভিনয় করতে দেওয়া হয়নি।
আরও পড়ুন: সার-বীজের কোনো সংকট নেই: কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
অভিযোগ করে স্বর্ণা বলেন, কোনো উপায় না দেখে তার সঙ্গে সমঝোতা করি। মামলা তুলে নেই। প্রথম ডিভোর্সের পর কিছুদিন ভালো গেলেও দ্বিতীয়বার ডিভোর্স দিলে আমাকে আটকাতে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। ডিবি হারুনকে মোটা অংকের অর্থ দিয়ে আমাকে গ্রেপ্তার করানো হয়। ওই বার দেড় মাস জেলে থাকার পর ডিভোর্স দিতে পারব না শর্তে জামিন হয়। জামিনে বেরিয়ে আসার পর জুয়েল সৌদি যায়। সেই সুযোগে আমিও যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাই। যুক্তরাষ্ট্রে চলে গিয়েছি জেনে জুয়েল হুমকি–ধমকি দিতে শুরু করে। যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েও রেহাই পাইনি।
স্বামীর ক্ষমতার বিষয়ে অভিনেত্রী স্বর্ণা বলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জমান খান, প্রয়াত ফজলে রাব্বী মিয়া, ডিবি হারুনের সহায়তায় জুয়েল এতো কিছু করেছে। আসাদুজ্জামান প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা চাঁদা তুলত। সেই টাকা জুয়েলের মাধ্যমে সৌদি পাচার করত। বিয়ের প্রাথমিক অবস্থায় এসব বলে জুয়েল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে মেয়ে পাঠাতো তার অবৈধ কাজে সহযোগিতা করত সে। এর জন্য মোটা অংকের টাকা পেত। জুয়েল মূলত হুন্ডির ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। জুয়েলের মাধ্যমেই আসাদুজ্জামান ও হারুনের বিদেশে টাকা পাচার করত।
জুয়েল আমার দ্বিতীয় স্বামী। তবে আমার নামে মামলাসহ ২৮টি বিয়ে করার কথা রটানো হয়, যেগুলো ভিত্তিহীন। আমাকে যেভাবে মিডিয়ার সামনে উপস্থাপন করা হয়েছিল তারও প্রমাণ দিতে পারেনি। সম্মানহানি করার জন্যই ভিত্তিহীন তথ্য ছড়ানো হয়। অপরাধ না করেও অপরাধী হই। গত ৫ আগস্টের পূর্বে নানা হুমকি দিত তাই এতদিন কিছু বলতে পারিনি। সরকার পতনের পর দেশে এসেও কিছু দিন অসুস্থ থাকায় এ বিষয়ে কথা বলিনি। এখনও কোনো মামলা করিনি। তবে শীঘ্রই এ বিষয়ে সবাই জানতে পারবে।