সর্বশেষ
ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় দিনের বৈঠকে বিএনপি
ভিনগ্রহে প্রাণের অস্তিত্বের শক্ত প্রমাণ পেলেন বিজ্ঞানীরা
যে ৫ প্রাণঘাতী রোগের কারণ হাই কোলেস্টেরল
এক লুকের সঙ্গে আরেক লুকের কোনো মিল নেই টালিউড সুইটহার্ট শ্রীজলার
হজম ক্ষমতা বাড়াতে মেনে চলুন কিছু টিপস
গ্রীষ্মে রোদে পোড়া ও নিস্তেজ ত্বককে বিদায় জানাতে মেনে চলুন এই ৭টি হাইড্রেশন হ্যাকস
হাই ট্রাইগ্লিসারাইড : স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়
খালি পেটে পেঁপে পাতার রস খেলে মিলবে যেসব উপকার
৮৬ বছর বয়সে উইন্ডসার্ফিংয়ে বিশ্বরেকর্ড
সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণের মালিক হলেই কোরবানি ওয়াজিব
বোরো ধানের নমুনা শস্য কর্তন শুরু
ওটিটিতে মুক্তি পেল তাসনিয়া ফারিণের প্রথম সিনেমা
ভিসা ইস্যু নিয়ে যে বার্তা দিল ঢাকার মার্কিন দূতাবাস
নিজেদের ভুল বোঝাবুঝিতে ফ্যাসিবাদ সুযোগ নেবে: রিজভী
কাতার সফরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গী হচ্ছেন চার নারী ক্রীড়াবিদ

হাঁপানিতে আক্রান্ত শিশুর যত্ন

অনলাইন ডেস্ক

শিশুর হাঁপানি শ্বাসতন্ত্রের একধরনের অতিসংবেদনশীলতাজনিত এবং দীর্ঘমেয়াদি রোগ। শ্বাস, খাদ্য, রক্তের মাধ্যমে বাইরে থেকে আমাদের শরীরে যেকোনো অবাঞ্ছিত বস্তু প্রবেশ করলে, শরীরের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হলো এদের বের করে কিংবা নিষ্ক্রিয় করে দিতে চেষ্টা করা। কখনো কখনো এই প্রক্রিয়া অস্বাভাবিক বা অতিরিক্ত হয়, তখন কিছু উপসর্গ দেখা দেয়। এর মধ্যে একটি হলো হাঁপানি।

এই প্রদাহে বাইরের বিভিন্ন অ্যালার্জেন শ্বাসতন্ত্রের সংস্পর্শে আসে, তখন সেখানে বিভিন্ন ধরনের জৈব রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরিত হয়, যা শ্বাসতন্ত্রে প্রদাহ সৃষ্টি করে সেটাকে সংকুচিত করে ফেলে। ফলে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, কাশি, বুকে ব্যথা হতে পারে, শ্বাসনালির ভেতরে একধরনের শব্দ হয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে ‘হুইজ’ বলে। তাই অনেক সময় ছোটদের শ্বাসকষ্টকে ‘হুইজি চাইল্ড’ বলা হয়। যদিও হাঁপানি ও হুইজি চাইল্ড সব সময় এক কথা নয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই প্রদাহ স্থায়ী হয়ে যায়। হাঁপানি রোগ হওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের পরিবেশগত ও জিনগত প্রভাব আছে।

শীতকালে শুষ্ক আবহাওয়ায় শিশুদের হাঁপানির প্রকোপ বেড়ে যায়। এ সময় হাসপাতালগুলোয় এমন শিশুর সংখ্যা বাড়ে। হাঁপানি থেকে বাঁচতে প্রথমেই যেসব অ্যালার্জেন বা উদ্দীপক শ্বাসতন্ত্রের অতিসংবেদনশীলতা বাড়িয়ে দেয়, তা থেকে দূরে রাখতে হবে। পোষা প্রাণীর পালক, ধুলাবালু, তেলাপোকা, ফুলের রেণু, দূষিত বাতাস, তামাক, পারফিউম, পরিষ্কারের জন্য ব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থ, আঁশযুক্ত খেলনা, কার্পেট, কুশন, ঠান্ডা ও শুষ্ক বাতাস, বিভিন্ন ভাইরাসের সংক্রমণ, অ্যাসপিরিন, বিটা ব্লকার–জাতীয় ওষুধ হাঁপানির আক্রমণ বাড়িয়ে দিতে পারে।

ঠান্ডা বাতাস থেকে শ্বাসনালিকে রক্ষা করতে শিশু বাইরে বের হলে নাক–মুখ ঢেকে রাখতে চেষ্টা করুন। যেন ঠান্ডা বাতাস শিশুর নাক–মুখ দিয়ে না ঢুকতে পারে। তাই বলে নাক–মুখ একেবারে আটকে দিলে শিশুর দম আটকে দুর্ঘটনা ঘটবে। তাই সহজে শ্বাসপ্রশ্বাস চলতে মাস্ক ব্যবহার করা যেতে পারে। শিশু বাইরের শুষ্ক ও ঠান্ডা আবহাওয়ায় বেশিক্ষণ যেন খেলাধুলা না করে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

ঘরের আর্দ্রতা এবং তাপমাত্রা যেন খুব বেশি ঠান্ডা, স্যাঁতসেঁতে অথবা বেশি শুষ্ক না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পর্যাপ্ত আলো–বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা থাকতে হবে। ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রুম হিটার ব্যবহার করা যেতে পারে।

শীতকালে কম্বল ব্যবহার না করে কভারসহ লেপ বা কমফোর্টার ব্যবহার করা যেতে পারে। কম্বলের সূক্ষ্ম আঁশ শ্বাসনালিতে সমস্যা করতে পারে, আবার এই আঁশের মধ্যে ধুলা জমে শ্বাসতন্ত্রের ক্ষতি করতে পারে।

শিশুদের প্যাসিভ স্মোকিং (আশপাশের মানুষদের ধূমপান) থেকে রক্ষা করতে হবে। যেসব শিশুর হাঁপানি আছে, বাসায় চুলার ধোঁয়া, পরিবারের সদস্যদের ধূমপানের ধোঁয়া, এমনকি মশার কয়েলের ধোঁয়াও তাদের জন্য ক্ষতিকর।

হাঁপানিতে আক্রান্ত শিশুদের ফ্লুয়ের প্রতিষেধক দেওয়া উচিত। কারণ, ফ্লুতে আক্রান্ত হলে তাদের হাঁপানির শ্বাসকষ্টও বেড়ে যাবে।

হাঁচি বা কাশি দেওয়ার পর শিশুদের ঠিকঠাক হাত ধোয়ার অভ্যাস করাতে হবে। এতে নতুন করে সংক্রমণের মাত্রা কমবে।

যেসব খাবারে শিশুর অ্যালার্জি আছে, সেসব বাদ দেওয়া ভালো। শিশুর জন্মের প্রথম ছয় মাস শুধু বুকের দুধ দিতে হবে। এরপর ঘরে তৈরি পরিপূরক খাবারের অভ্যাস করাতে হবে। কৌটার দুধ, গরু-ছাগলের দুধ, প্যাকেটজাত খাবারে শিশুর অ্যালার্জি থাকতে পারে। রক্ত পরীক্ষা করেও কোনো কোনো খাবারে অ্যালার্জি হতে পারে, তা বের করা যায়।

শিশুর হাঁপানি রোগের ধাপ অনুযায়ী আধুনিক চিকিৎসাব্যবস্থা আছে। হাঁপানির শ্বাসকষ্টে তাৎক্ষণিক উপশম ও দীর্ঘমেয়াদি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা আছে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ইনহেলার, দরকার হলে নেবুলাইজার, মুখে খাওয়ার ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে। শ্বাসকষ্টের জন্য ইনহেলার-জাতীয় ওষুধ ঠিকমতো ব্যবহার না করলে হাঁপানি রোগে তেমন উন্নতি হয় না। তাই ইনহেলার, স্পেসার ব্যবহার ঠিকমতো হচ্ছে কি না, দেখতে হবে। চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে সঠিকভাবে ব্যবহার করা শিখে নিতে হবে। স্টেরয়েড ইনহেলার অথবা স্টেরয়েডযুক্ত ইনহেলার ব্যবহারের পর শিশুকে কুলি করাতে হবে। প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার ইনহেলার পরিষ্কার করুন। নেবুলাইজার ব্যবহারের আগে–পরে পরিষ্কার করে নিতে হবে। অনেক সময় একই নেবুলাইজার অনেক শিশু ব্যবহার করলে সেখান থেকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে।

হাঁপানি রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে শিশুবিশেষজ্ঞ ও শিশু শ্বাসতন্ত্র বিশেষজ্ঞের সমন্বিত চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা জরুরি।

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ